যারা নিজের দেশ চালানোর জন্য বিদেশ থেকে উদ্ভুত সব রাজনৈতিক মতবাদ মাথায় ঢুকিয়ে পাগল সেজে ঘুরে বেড়ায় আর ভুল ভাল বকে বেড়ায়, তারা আর যাই হোক কোনোদিন নিজের দেশ কে ভালো বাসে না।

“সাধু সাবধান!!!”
ডাঃ মৃনাল কান্তি দেবনাথ

আমি সাধারনত ৫ টি জিনিষকে মোটেই বিশ্বাস করি না।

• বনে যদি আগুন লাগে তাহলে সাবধান । ওই আগুন কি ভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে ছড়িয়ে পড়ে বোঝা দ্বায়

• যতোই সাঁতার জানুন (যেমন আমি নিজে জানি) গভীর জলাশয়, বিশেষ কর খরোস্রোতা নদী এবং সমুদ্র কে বিশ্বাস করবেন না। জলের নীচে কি আছে, হাংগর, কি কুমীর, কি চোরা ঘুর্নি বুঝতে পারবেন না,তলিয়ে যাবেন। ওয়েষ্ট ইন্ডিজে থাকাকালীন আমি ভালো সাতারু হয়েও কোনোদিন “ডাইভিং” করিনি। নিজের চোখের সামনে ৩ জন (বিভিন্ন সময়ে) বিদেশী পর্যটককে জলের তলায় হঠাৎ করে তলিয়ে যেতে দেখেছি।

• যতোই ভালোবাসুন, যে পশুদের নখ আছে, তারা বিরক্ত হলে আঁচড়ে কি কামড়ে দেবেই।

• যারা নিজের দেশ চালানোর জন্য বিদেশ থেকে উদ্ভুত সব রাজনৈতিক মতবাদ মাথায় ঢুকিয়ে পাগল সেজে ঘুরে বেড়ায় আর ভুল ভাল বকে বেড়ায়, তারা আর যাই হোক কোনোদিন নিজের দেশ কে ভালো বাসে না।

• যে ব্যাক্তি যে কোনো আছিলায় নিজের ধর্ম পরিবর্তন করে, আর অন্য ধর্মের গুন গেয়ে বেড়ায় তাদের কোনোমতেই বিশ্বাস করা উচিত নয়। এদের প্রত্যেকেরই কোন না কোন সুপ্ত বা প্রচ্ছন্ন কারন আছে যা সময়ে জানা যায়। সেই কারন আর্থিক হতে পারে (বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে) বা বিভীষন/ মিরজাফরের মতোও হতে পারে। এরাই জগতে সবচেয়ে বড়ো সন্ত্রাসী। কালাপাহাড়, ছিলো এক ব্রাহ্মন। একটি ভীন ধর্মী মেয়েকে বিয়ে করার জন্য নিজের ধর্ম পালটায়। তারপর সুলেমান কররানির কাছে থেকে ৫ হাজারী মনসবদারী নিয়ে সারা জীবন শুধু হিন্দু মন্দির ধ্বংস করেছে। তার প্রকোপ থেকে পুরীর জগন্নাথ ধাম থেকে শুরু করে কোনারকের সুর্য্য মন্দির কোনোটাই রক্ষা পায় নি। অনেক জায়গীরের মালিক হয় সে।

মানসিং নিজে ভড়ং করে হিন্দু থেকেছে। কিন্তু নিজের পরমাত্মীয়াকে কে ( যোধাবাই) সেধে গিয়ে আকবরের হাতে তুলে দিয়ে সে নিজ ধর্মের বিরুদ্ধাচারন করেছে। কেনো? গিয়ে দেখে আসুন “অম্বর রাজপ্রাসাদ”। সারা জীবনে সে ৭৭ টি যুদ্ধ করে আকবরের হয়ে। তার মধ্যে সে ৫৫ টিতে জিতেছে। কাদের বিরুদ্ধে সে যুদ্ধ করেছিলো— হিন্দুদের বিরুদ্ধে, রানা প্রতাপের নিরুদ্ধে। বিজিত রাজ্য দিয়েছে আকবরকে আর নিজে রেখেছে লুটের মাল। তাই দিয়ে নিজের ছোট্ট রাজবাড়ি থেকে সামান্য দূরে বানিয়েছে বিশাল বিপুলায়তন সুরম্য রাজপ্রাসাদ। যে প্রাসাদের প্রবেশ দ্বারে রয়েছে একটি ফলক। সেই ফলকে লেখা আছে শুধু আকবরের প্রশংষা। তাকে বানিয়েছে ধরাধামে ঈশ্বর। (ভুলে যাবেন না “ইন্দিরা ইজ ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া ইজ ইন্ডিয়া শ্লোগান, আর বর্তমানের “ম্যাডাম” ) মানসিং এর একটি স্ত্রী বিধর্মী ছিলো।

মুহাম্মদ বিন কাসিম থেকে শুরু করে মহম্মদ ঘোরী সবাই এই ভারতীয় হিন্দুদের ব্যাবহার করেছে ভারতকে পদানত করতে। ইতিহাস তার সাক্ষী।

তাই সাবধান, ধর্ম পরিবর্তন কারীদের থেকে, যারা বিধর্মীকে নিজের ধর্মীর চেয়েও বেশী ভালোবাসে, আর সব থেকে সাবধান যারা “নিজের ধর্মের একমাত্র রক্ষা কর্তা বলে মিটিং মিছিল করে নিজেকে জাহির করে। ধর্মকে ধর্মই রক্ষা করেন। কাউকে করতে হয় না। যারা বলে, দাবী করে তারা ভন্ড।

আমি তাই, যারা নিরীশ্বরবাদী তাদের বিশ্বাস করি কিন্তু নিজ ধর্ম পরিবর্তন করেছে (সে যতো কাল বা যতো পুরুষ আগেই হোক না কেনো) তাদের বিশ্বাস করি না। আমার নিজের জীবনেও আমি সেই অবস্থার সম্মুখীন হয়েছিলাম যখন আমার বয়ষ ১৫ বছর। ১৯৬৪ সালে খুলনায় “হিন্দু নিধন যজ্ঞের” পর নিজের জীবন বাচাতে আমাকে ধর্ম পরিবর্তন করার প্রস্তাব দিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছিলো। আমি সেই দুঃসময়ে নিজের জীবন বিসর্জন দেবার সব ব্যবস্থা করেছিলাম ( দড়ি জোগাড় করে গলায় পেচিয়ে সিলিং থেকে ঝুলে পড়ার সব ব্যাবস্থা করার পর, শ্রী কৃষ্ণের অপার কৃপায় রক্ষা পাই— (পড়ুন আমার লেখা “জেহাদ ও উদ্বাস্তু ছেলে” বা “Auto Biography of an unknown Refugee – The Sacred Hair” পড়ুন )। মরতাম তবু ধর্ম পরিবর্তন করতাম না।
“স্বধর্মে নিধনং শ্রেয় পরধর্ম ভায়াবহ”

ধর্ম পরিবর্তন কারীরাই তার ভুতপুর্ব (পিতৃপুরুষের) ধর্মের সবচেয়ে বড়ো শ্ত্রুতা সাধন করে। পাকিস্তান , বাংলাদেশ এবং আমাদের ভারতের অন্দরে আজ সেই শত্রুতা চলছে (সবাই সেই পদবাচ্য নয়। নিজের দেশ কে ভালো বাসেন সেই মতো মানুষের ও অভাব নেই।)।

সাধু সাবধান!!!!!