সুবোধ তুই এবার পালিয়ে কোথায় যাবি ?

সুবোধ এবার পালিয়ে কোথায় যাবি ?
——————————————
ওপার বাংলা, অধুনা বাংলাদেশে  সুবোধের পরিবার যেদিন শান্তির ধর্মালম্বীদের আক্রোশের শিকার হয়েছিল, তার পরদিন রাতের আঁধারে সুবোধরা, চুপিসারে কাঁটাতার পেড়িয়ে, এপার বাংলায় চলে এসেছিল। হ্যা, ইতিহাসের কাঠগড়ায় চড়া, হিন্দু সাম্প্রদায়িক শ্যামাপ্রসাদের ভারতে ছিনিয়ে নেওয়া পশ্চিমবাংলায়। এইবার এপারে চলে আসা সুবোধরা কোথায় পালাবে ?

আজকের এই বাংলার দত্তপুকুর,কালিয়াচক ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক সহিংসতাতে আপনারা ক্ষুব্ধ ? বিস্মিত ? আমি কিন্তু একেবারেই ক্ষুব্ধ বা বিস্মিত নই।  আমি কেবল অনিবার্যের আগমন দেখছি আর অপেক্ষা করছি। আপনাদের খেয়াল থাকবে, পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রকাশিত ‘দৈনিক কলম’ বলে সংবাদপত্রটি নিয়ে আমি একটা লেখা বেশ কিছুদিন আগে লিখেছিলাম । বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির আবহে, আবার মনে হলো এই নিয়ে আরও কিছু লেখার প্রয়োজন আছে । মানুষ আজকাল সচেতন, কেউ ঘাসে মুখ দিয়ে চলেনা, তাই সঠিক জায়গায় আঘাত করে, মানুষের চেতনা জাগ্রত করাই আমার লেখাগুলোর উদ্দেশ্য । আগের লেখার একটু খেই ধরিয়ে দি ।সাম্প্রতিক অতীতের, এই বাংলার বিজনেস টাইকুন, যিনি বর্তমানে পশ্চিমবাংলার মামাবাড়িতে আছেন, সেই কুখ্যাত ‘সারদা সুদীপ্ত সেন’ এর ফান্ডিংয়ে ‘দৈনিক কলম’ জীবনীশক্তি পেয়েছিলো । প্রকাশনার সার্বিক কর্ণধার ছিল, বেশ কিছুদিনের জন্য,খাঁচায় বন্দি হয়ে যাওয়া এই বাংলার মূলো কংগ্রেসের একদা সাংসদ বর্ণহিন্দু কুণাল ঘােষ । কাগজের আসল বা কার্যকরী সম্পাদক আহমদ হাসান (ইমরান) যার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জামাত যোগের প্রশ্নচিহ্ন আছে । পাঠক, বলার অপেক্ষা রাখেন যে, পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রকাশিত ‘দৈনিক কলম’ একটি ইসলামিস্ট মুখপত্র যার শোকেসে ছিল বর্ণহিন্দু মানুষজন, একেবারে যেন এপার বাংলার বাঙালি হিন্দুই এতদিন পর বাঙালি মুসলমানের আর্তি বুঝতে পেরে তাদের জন্য একটি ইসলামি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলেছে। অদৃশ্য আশীর্বাদকারীনিকে তুষ্ট করার জন্য কাগজ জুড়ে বিশ্ব বাংলার নেত্রীর বন্দনার ছড়াছড়ি।

যাক গে,এবারে আসি মূল প্রসঙ্গে । ২০১৮ তে রাজ্যে মূলো কংগ্রেসের সাধারণ গরীব মুসলমানদের অর্থনৈতিক ঊন্নয়নের কোনো তেমন পদক্ষেপ না থাকলেও, চমক আছে সমগ্র মুসলমান সমাজকে ইমাম, মুয়াজ্জিন, মাদ্রাসার কাছে বিকিয়ে দিয়ে তাদের মধ্যযুগে পিছিয়ে নিয়ে যাওয়ার । এই কাজটা করতে ‘দৈনিক কলম’ তাদের মুখপত্র । এই বাংলায় ‘দৈনিক কলম’ এর উদ্দেশ্য যে একটি ইসলামি মৌলবাদি বাঙালি মুসলমানের পরিচয় তৈরি করা তা কাগজটি লুকিয়ে রাখতে চায় নি। ইসলামি শাসকরাই বাঙালি জাতি তৈরি করেছে, এই বাঙালির হিরো সিরাজদ্দৌল্লা থেকে তার আগের মুসলমান শাসকরা, বাঙলা ভাষাও তারাই তৈরি করেছে, মাঝে দুশ বছর ইংরেজদের চক্রান্তে বর্ণ হিন্দুরা তা দখল করে নিয়েছিল, ইত্যাদি ইত্যাদি নানাকিছু ইসলামিস্ট বার্তা দেওয়াটা ‘দৈনিক কলম’ এর এজেন্ডা । আজকের বাস্তবতায়, পশ্চিমবঙ্গের মসনদ দখল করার জন্য মুসলমান ভােট একটা ক্রিটিকাল ফ্যাক্টর, এটা আশাকরি রাজনীতি সম্মন্ধে ওয়াকিবহাল না, এমন মানুষও অস্বীকার করবেন না । ঠিকমত ব্যবহার করলে নির্বাচনে জয় সুনিশ্চিত, তাই মুসলমান সমাজের নিয়ন্ত্রণের তালা-চাবি তুলে দিতে হবে মৌলবাদী ধর্মীয় নেতাদের উপর, এই খেলাটা বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের সরকার অনেকদিন আগেই শিখে নিয়েছে । এই খেলাতে মূলো কংগ্রেসকে মাত দিতে অন্য রঙের কোনো রাজনৈতিক পার্টি আগামীতে আরো একদম এগোবে না তো ? জামায়েত উলেমার সিদ্দিকুল্লা সাহেব এখন যেন কোন পার্টিতে ?