বিশ্বের ধর্মগুলোর মধ্যে সম্ভবত ইহুদিদেরকেই ইসলামের নবী সবচেয়ে বেশী ঘৃণা করতেন। তাই তিনি মৃত্যুর আগেও আরব ভূমিকে ইহুদিমুক্ত করতে বলছেন। এমনকি তারা ইদুরের গর্তে পলায়ন করলেও, তাদের খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছেন। ইহুদি বিষয়ক ইসলামের নবীর নির্দেশনা ছিল এমন :
নবী ইহুদীদের এলাকা বায়তুল মিদরাসে গিয়ে বললেন, তোমাদেরকে এই ভূখন্ড থেকে বহিস্কার করতে চাই, জেনে নাও এ পৃথিবী আল্লাহ্ ও তার রসুলের এখতিয়ারভূক্ত (বুখারী-২৯২৯); মৃত্যুর প্রাক্কালে নবী উপস্থিত সাহাবাদের উপদেশ দিয়েছিলেন যে, ‘‘আরব উপদ্বীপ থেকে মুশরিকদের বহিষ্কার করবে’’(বুখারী-২৮২৫); নবী বলেছেন, তোমরা ইহুদী ও নাসারাদের পদে পদে অনুসরণ করবে, এমনকি তারা যদি গুই সাপের গর্তেও ঢুকে থাকে তোমরাও তাতে ঢুকবে (বুখারী-৩১৯৮); নবী বলেছেন, ইহুদী ও নাসারাদের আরব থেকে বের করে দেব, এখানে মুসলিম ছাড়া কেউ থাকবে না (সুনানে আবু দাউদ : ৩০২০); নবী বলেন, আরব উপদ্বীপ থেকে ইহুদী-নাসারাদের অবশ্যই বের করে দিব (তিরমিযী : ১৫৫৪); মৃত্যুর আগে রোগশয্যায় নবী বলেছিলেন, হে আল্লাহ ইহুদীদের ও নাসারাদের উপর লানত বর্ষণ করুন (বুখারী-৪০৯১-২); ইহুদী-খ্রীস্টানদের প্রথমে সালাম দিওনা, রাসস্তায় দেখা হলে তাকে রাস্তার পাশে ঠেলে দিও (তিরমিযী-১৫৪৯)!
:
যে কারণে সম্ভবত আজকের ২০১৯ সনের মুসলমানরাও ইহুদিদের সবচেয়ে বেশি ঘৃণা করে। আর তাই কোন মুসলিম দেশেই ইহুদিদের বসতি দেখতে পাওয়া যায়না ২/১ টি ব্যতিক্রম ছাড়া। তবে ইসরাইলে কিন্তু ঠিকই মুসলিমরা বসবাস করে। ২০১৯ সনের পরিসংখ্যান মতে, ইসরাইলে মুসলমানের সংখ্যা ১৬,০৫,৭০০ মানে মোট জনসংখ্যার ১৭.৮০%, দ্রুজ মুসলমানের সংখ্যা ১,৪৩,০০০ জন মানে মোট জনসংখ্যার ১.৫৯%, যদিও ইসরাইলে খৃস্টানের সংখ্যা ১,৮০,৪০০ জন মানে জনসংখ্যার ২% মাত্র। ইসরাইলে বসবাসরত মুসলিমরা কিন্তু বলেনা যে, তাদের ইসরাইলে বসবাস করতে বা তাদের ধর্মপালনে কোন সমস্যা হচ্ছে। সব সমস্যা মূলত ইসরাইলের বাইরে বসবাসরত মুসলমানদের মধ্যে।
:
বিশ্বের বর্তমান মোট জনসংখ্যা ৭১৬,৭০,০০,০০০ জনের মধ্যে ইহুদি মাত্র ১,৪৫,১১,১০০ জন মানে বিশ্বের জনসংখ্যার মাত্র ০.২%। অপর দিকে বিশ্বে মুসলিম পপুলেশন ১৮০ কোটি, যা বিশ্বের জনসংখ্যার ২৪.১%। কিন্তু বিস্ময়কর বিষয় হচ্ছে পৃথিবীর মাত্র ০.২% জনসংখ্যা হয়েও মুসলমানদের ঘৃণিত ইহুদিরা নোবেলের সব শাখাতে পুরস্কার পেয়েছে অন্তত ১৮৭টি, যার অধিকাংশ বিজ্ঞানে। আর বিশ্বের জনসংখ্যাার ২৪.১% দখল করে রাখলেও মুসলমানরা এ পর্যন্ত নোবলে জয় করেছে মাত্র ১২-টি, যার পরিসংখ্যান নিম্নরূপ :
১। ইয়াসির আরাফাত : শান্তিতে
২। মালালা ইউসুফজাই : শান্তিতে
৩। আনোয়ার সাদাত : শান্তিতে
৪। ড. মুহাম্মদ ইউনুস : শান্তিতে
৫। শিরিন এবাদি : শান্তিতে
৬। তাওয়াক্কোল কারমান : শান্তিতে
৭। মো: আল বারাদি : শান্তিতে
৮। নাগিব মাহফুজ : সাহিত্যে
৯। ওরহান পামুক : সাহিত্যে
১০। মো: আবদুস সালাম (আহমেদিয়া) : বিজ্ঞানে
১১। আহমেদ জাওইল : বিজ্ঞানে
১২। আজিক সাংকার : বিজ্ঞানে
এ ১২-জনের মধ্যে ৭-জন শান্তিতে মানে দালালিপনার নোবেল। আর বিজ্ঞানে ৩ জনের মধ্যে মো: আবদুস সালাম আহমদিয়া সম্প্রদায়ের লোক বলে, ৯০% মুসলমান আবার তাকে মুসলমান মনে করেন না।
:
অপর দিকে ১,৪৫,১১,১০০ জন ইহুদির (০.২%) মধ্যে ১৮৭-জন নোবেল পুরস্কার পেয়েছে, যার অধিকাংশই বিজ্ঞানে তথা আজকের বিশ্বের নানাবিধ যুগান্তকারী আবিস্কারের সাথে জড়িত।
:
এক নজরে যদি আমরা ২০১৯ সনের বিশ্বের জনসংখ্যার দিকে তাকাই তবে দেখতে পাবো বিশ্বের জনসংখ্যার পরিসংখ্যান নিম্নরূপ :
খৃস্টান ২৪০ কোটি ৩৩%
মুসলিম ১৮০ কোটি ২৪.১%
নির্ধার্মিক ১২০ কোটি ১৬%
হিন্দু ১১৫ কোটি ১৫%
বৌদ্ধ ৫২,৫০,০০০ ৭%
চীনা ট্রাডিশনাল ৩৯,৪০,০০০ ৫.৫%
নিজস্ব এথেনিক ধর্ম ৩০ কোটি ৪.১৯%
আফ্রিকান ট্রেডিশনাল ধর্ম ১০ কোটি ১.৪%
শিখ ৩ কোটি ০.৩২%
Spiritism ১ কোটি ৫০ লাখ ০.২১%
ইহুদি ১,৪৫,১১,১০০ জন ০.২০%
বাহাই ৭০ লাখ ০.১০%
জৈন ৪০ লাখ ২০ হাজার ০.০৬%
সিন্টো ৪০ লাখ ০.০৬%
কাওদাই ৪০ লাখ ০.০৬%
জরথ্রুস্ট (পার্সি) ২৬ লাখ ০.০৪%
টেনরিকিও ২০ লাখ ০.০২%
নিউ-প্যাগানিজম ১০ লাখ ০.০১%
Unitarian Universalism ৮ লাখ ০.০১%
রাসতাফারি ৬ লাখ ০.০১%
:
এ তথ্যচিত্রে দেখা যায় খৃস্টান ও মুসলমানদের পরেই নির্ধার্মিক তথা নাস্তিকদের অবস্থান, যাদের মোট সংখ্যা ১২০ কোটি তথা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১৬% – যা হিন্দু, বৌদ্ধচীনা, ইহুদি, জৈন, শিখ, সিন্টো প্রভৃতি ধর্ম থেকে অনেক বেশি।
:
অপরদিকে ৯৯.৬% মুসলিম নাগরিক বসবাস করছে এমন দেশটির নাম আফগানিস্তান, ৯৯.১% মানুষের দেশ ইয়েন, ৯৯.৪% দেশের নাম পশ্চিম সাহারা, ৯৮% মুসলমানের দেশ সুদান, ৯৯.৮% দেশের নাম সোমালিয়া। এ সকল দেশেগুলো দারিদ্রতা এবং গৃহযুদ্ধকে নিজেদের জীবনের সাথে জড়িতে ফেলেছে।
:
বিপরীত দিকে পৃথিবীর প্রধান কটি নির্ধামিক দেশ হচ্ছে : চীন, জাপান, চেক রিপাবলিক, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, আইসল্যান্ড, ডেনমার্ক, নরওয়ে, সুইডেন, কানাডা, জার্মানী, নেদারল্যান্ডস, হাঙেরি, বেলজিয়াম প্রভৃতি। এ দেশগুলোতে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশ বলা যেতে পারে। চীন কেবল নাস্তিকতাতে রাষ্ট্রীয় নীতিকে ধারণ করে এবং ধর্মকে কোন রাষ্ট্রীয় আনুকূল্য না করে আজ বিশ্বের চরমতম উন্নত দেশ তথা জাতি।