পালঘর নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠে আসছে যেগুলোর উত্তর পাওয়া জরুরী –
১> কেন একটি বিশেষ লবি হটাত প্রচার শুরু করল এই ঘটনায় বিজেপির সরপঞ্চ এরেস্ট হয়েছে, যেখানে এরকম কোন ঘটনাই ঘটেনি। এমনকি এফআইআর-এর যে কপি অনলাইনে ঘুরছে সেখানেও নাম দেখা যাচ্ছেনা। বরং সেখানে মূল যে পাঁচ অভিযুক্তের নাম দেখা যাচ্ছে তারা সবাই এলাকায় সিপিএম কর্মী বলেই পরিচিত। কেন এই বিষয়টিকে ঘুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। আরও যে বিষয়টি নিয়ে এই লবি কোন কথাই বলতে চাইছেনা তা হোল পালঘরের সিপিএম বিধায়কের ভূমিকা। কেন?
২> সমগ্র মহারাষ্ট্রে এই একটি বিধানসভাতেই সিপিএমের বিধায়ক, আর কোথাওই নেই। হটাৎ কোন যাদুবলে সিপিএম এই বিধানসভাতে এহেন প্রভাব অর্জন করল? উত্তরটি কি লুকিয়ে আছে এই বিধানসভা কেন্দ্রের সব দলেরই প্রার্থী খৃষ্টান এই তথ্যের মধ্যে? মাও-আরবান নক্সাল লবির সাথে চার্চের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ কি নতুন কোন বিষয়?
৩> একটি বিশেষ লবি বিজেপির সরপঞ্চ খুঁজে পেয়েছে, কিন্তু মহারাষ্ট্রে সরপঞ্চ কোন দলের হয়না। তাহলে এনারা দল কোথা থেকে খুঁজে পেলেন এবং কেন?
৪> এই গ্রেপ্তারির গল্পের পেছনে কোন সরকারী সূত্র নেই। এর সূত্র হিসাবে দেখানো হচ্ছে একটি ট্যুইট। কিন্তু যেটা লুকিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তা হোল ট্যুইট কর্তা প্রথম ট্যুইটটি করার দুই মিনিটের মধ্যেই আরও একটি ট্যুইট করে বলেছেন গ্রেপ্তারির খবর ভুল। এটা চেপে যাওয়া হচ্ছে কেন? আর এই ট্যুইট কর্তাই বা কে? এনার পরিচয়ই বা কি? এনার খবরের সূত্র কি? তাহলে বাকী ১০৯ জনের নাম ইনি প্রকাশ করতে পারছেননা কেন?
আপনাদের ধোঁয়াশায় না রেখে আমিই উত্তরটা দিয়ে দিই। ইনি একজন উকিল। কাজ করেন নিউ ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসে। এই কাগজের এই ঘটনায় হেডলাইনটা নিশ্চয় মনে আছে?
এই লবি কেন এতো সচেষ্ট সন্ন্যাসী হত্যার খবরকে ধামাচাপা দিতে?
৫> মহারাষ্ট্রের উদ্ধভ ঠাকরে ঘটনার ভিডিও আসার পরে প্রথমে বললেন তিনি এই ঘটনার বিষয়ে কিছু জানতেননা। স্বরাষ্ট্র দপ্তর এনসিপি-র হাতে। তাঁরা তাঁকে কিছু জানায়নি? এরপরে উদ্ধব ঠাকরে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বললেন এই ঘটনার পিছনে কোন সাম্প্রদায়িকতা নেই। তিনি কি করে এই বিষয়ে নিশ্চিত হলেন? এখন কি তাঁর স্বরাষ্ট্র দপ্তর তাঁকে সব তথ্য দিয়েছে? তাহলে আগে কেন দেয়নি?
৬> এই ঘটনা ঘটেছে শুক্রবার রাতে আর শনিবার থেকে অরুন্ধতী রায় মুসলিম গণহত্যার এক অলীক তত্ত্ব এনে খাড়া করেন। তারপরে এই ঘটনা সামনে আসার পরে তাঁকে আর এই নিয়ে কিছু বলতে শোনা গেলনা। কেনই বা হটাত তিনি এই অলীক তত্ত্বটি হাজির করলেন আর কেনই বা চুপ করে গেলেন এই ভিডিও সামনে আসার পরে? তাহলে কি যে উদ্দেশ্যে তিনি অলীক তত্ত্বটি খাড়া করেছিলেন সেই উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়েছে বলে তিনি চুপ করে গেলেন?
৭> অনেকে এই ঘটনার সাথে আরও কিছু ঘটনার তুলনা টেনে পরোক্ষে এই ঘটনাকে সমর্থন করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তাদের জন্য প্রথম প্রশ্ন যদি এই ঘটনাতে তাদের মতে বিজেপিই দোষী তাহলে তাঁরা নির্দ্বিধায় এই ঘটনার নিন্দা কেন করতে পারছেননা? এদের বিজেপির প্রতি কিছু দুর্বলতা আছে এমন অপবাদ তো এদের চরম শত্রুও দেবেনা। তাহলে ব্যাপারটা কি?
এদের জন্যই পরের প্রশ্ন, যে ঘটনাগুলির সাথে এঁরা তুলনা টানছেন সেই ঘটনাগুলির একটিতেও কি দেখা গেছে পুলিশ অসহায় তিনজনকে নিজে হাতে উন্মত্ত জনতার সামনে ছেড়ে দিচ্ছে খুন হওয়ার জন্য? কেন পুলিশের এই ভূমিকা?
৮> অনেকে বলছেন পুলিশের সংখ্যা কম ছিল। অথচ ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে পুলিশ এদের একটি বাড়ির ভেতর থেকে বার করে নিয়ে এসে উন্মত্ত জনতার হাতে তুলে দিচ্ছে। দেখা যাচ্ছে জনতা বাইরেই রয়েছে। এই বাড়িটা পুলিশ স্টেশান কিনা জানা নেই, কিন্তু দেখা যাচ্ছে তখনও জনতা বাড়ির ভেতরে ঢোকেনি। তাহলে পুলিশ যখন দেখছে তাঁরা সামলাতে পারছেনা তাহলে কি তাঁরা এডিশনাল ফোর্স ডেকেছিল? যদি ডেকে থাকে তাহলে তাদের জন্য অপেক্ষা না করে কেন এদের উন্মত্ত জনতার হাতে তুলে দেওয়া হোল। আর যদি না ডেকে থাকে তাহলে কেন এবং কি উদ্দেশ্যে ডাকেনি? বা কার নির্দেশে ডাকেনি?
৯> জুনা আখড়ায় দলিত সন্ন্যাসীরা আখড়ার নানা উচ্চপদে আসীন ছিল। এই এলাকাতেও অনেক কনভার্টেড খৃষ্টান বা মুসলিম গত দশ বছরে হিন্দু ধর্মে ফিরে এসেছেন। এই দুইয়ের মধ্যে কি কোন যোগসূত্র আছে?
১০> এই এলাকা থেকেই ফেব্রুয়ারী মাসে ২২ জন অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ধরা পরেছিলেন। এই দুইয়ের কোন যোগ আছে কি নেই সে বিষয়ে তদন্ত কি পুলিশ করেছে?
১১> এই এলাকাতেও সিপিএমের বিধায়ক। এই ঘটনার সাথেও বিজন সেতুর ঘটনার অস্বাভাবিক মিল। সবই কি কাকতালীয়? এমনকি বিশেষ লবির একের পর এক এপোলজি নামানোও কি কাকতালীয়?
১২> যাদের মারা হয়েছে তাদের দুজন সন্ন্যাসীর বেশেই ছিলেন। হটাৎ জনতা এদের ছেলেধরা ভাবতেই বা গেল কেন? আর ছেলেধরা গুজব যদি আগে থেকেই রটে থাকে তাহলে সেই গুজব বন্ধে পুলিশ কি ব্যবস্থা নিয়েছিল? কাউকে কি গ্রেপ্তার করা হয়েছিল গুজব রটানোর দায়ে?
১৩> যারা এপোলজি সাজাচ্ছেন তাদের অনেকে আবার এও বলছেন যে যারা মেরেছে তারাও হিন্দু। আবার বলছেন এই এলাকায় সবাই আদিবাসী। তাহলে তাঁরা মেনে নিচ্ছেন তো আদিবাসীরাও হিন্দু সমাজেরই অংশ। এতোদিন তাঁরা আদিবাসীদের নিয়ে যেসব তত্ত্বগুলি দিতেন সেসবই আদতে ভুল। মেনে নিচ্ছেন কি এটা তাঁরা?
১৪> আরও একটি প্রশ্ন এলাকাটি যদি সম্পূর্নভাবেই হিন্দু অধ্যুষিত তাহলে দাহানুর মতো একটি ছোট গ্রামে কেন এতোগুলি অন্য ধর্মের উপাসনালয়? সম্প্রীতির বিজ্ঞাপন দিতে?
১৫> শেষ এবং সব থেকে বড় প্রশ্ন, সারাদেশে লকডাউন চলছে। কোন রকম জমায়েত নিষিদ্ধ। মহারাষ্ট্রে সর্বাধিক আক্রান্ত। তাহলে সেখানে এতো লোকের জমায়েত হোল কিভাবে? পুলিশ এই জমায়েত হতে দিল কি উদ্দেশ্যে? এই নিয়ে উদ্ধব ঠাকেরের কোন ব্যাখা কেন নেই?
১৬> কেন ঘটনা ঘটার পড়েই এরেস্ট করা হোলনা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও আসার পরে কেন?
১৭> ভিডিওর যে অংশটিতে পরিষ্কার একটি নাম শোনা যাচ্ছে কেন সেই অংশটিকে বিকৃত করে এই বিশেষ লবি আমাদের অন্য কিছু বোঝানোর চেষ্টা করছে? তাদের কি আমাদের শ্রবন ক্ষমতার উপরে ভরসা নেই নাকি তাঁরা আদতে আমাদের শ্রবন ক্ষমতাকে ভয় পাচ্ছেন?
প্রশ্ন অনেক, উত্তর এখনও প্রায় কিছুই পাওয়া যাচ্ছেনা। কিন্তু একটা কোথা মনে করিয়ে দিই।
সন্ন্যাসীরা ভারতের আত্মা। দুজন সন্ন্যাসীকে খুন করা হয়েছে ভারতের আত্মার উপরেই সেই আঘাত করা হয়েছে। কাজেই এই প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর আমাদের চাই। দেশ সুস্থ হওয়ার পরেও যদি এই প্রশ্নগুলির উত্তর না পাওয়া যায়, তাহলে কিন্তু যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে এবং যারা তাদের লুকোনোর জন্য এপোলজি খাড়া করছে তাদের অসুস্থ হওয়া কিন্তু সময়ের অপেক্ষা। কারন এই প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর তাদের দিতেই হবে।
post by K C Chowdhury from Russia





