আচার্য রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী (আগস্ট ২০, ১৮৬৪ – জুন ৬, ১৯১৯) বাংলা ভাষার একজন স্বনামধন্য বিজ্ঞান লেখক। তিনি ভারতের মুর্শিদাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। তার পূর্বে বাংলা ভাষায়
বিজ্ঞান চর্চার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ ছিল না। উপযুক্ত বইয়ের অভাবই ছিল এর
মূল কারণ। তিনি প্রচুর গ্রন্থ ও প্রবন্ধ রচনা করেন এবং বক্তৃতার মাধ্যমে
বাঙালিদেরকে বিজ্ঞান চর্চায় অনুপ্রাণিত করেন। তার কোন মৌলিক গবেষণা বা
আবিষ্কার নেই, তবে তিনি মূলত লেখনীর মাধ্যমেই একজন বিজ্ঞানী ও শাস্ত্রজ্ঞের
মর্যাদা লাভ করেছেন। বিশুদ্ধ বিজ্ঞান ছাড়াও তিনি দর্শন ও সংস্কৃত শাস্ত্রের দুর্বোধ্য বিষয়গুলো সহজ বাংলায় পাঠকের উপযোগী করে তুলে ধরেন।
জীবনী
বাল্যকাল ও শিক্ষাজীবন
রামেন্দ্রসুন্দর
ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি মহকুমার জেমো গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার
বাবার নাম গোবিন্দসুন্দর এবং মা চন্দ্রকামিনী। বাংলা ভাষার চর্চার জন্য
বিখ্যাত হয়েছেন রামেন্দ্রসুন্দর, কিন্তু জন্মসূত্রে তিনি বাঙালি ছিলেন না।
তার পূর্বপুরুষরা বন্ধুগল গোত্রের জিঝৌতিয়া ব্রাহ্মণ
সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। এই সম্প্রদায়ের লোকেরা
রামেন্দ্রসুন্দরের জন্মের দু’শ বছর আগে থেকেই মুর্শিদাবাদে বসবাস করতো। এর
ফলে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সাথে তাদের সকলের অন্তরঙ্গ সম্পর্ক স্থাপিত
হয়ে যায় এবং এক অর্থে তারা বাঙালিদের মতই বাংলার চর্চা করতে শিখেছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সূচনার আগেই ১৮৭৮ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে জেমো রাজপরিবারের নরেন্দ্র নারায়ণের কনিষ্ঠ কন্যা ইন্দুপ্রভা দেবীর সাথে তার বিয়ে হয়।
শৈশবকাল থেকেই রামেন্দ্রসুন্দর মেধাবী ছিলেন। তিনি ১৮৮১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এনট্রান্স পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেন এবং এর ফলে ২৫ টাকা বৃত্তি লাভ করেন। ১৮৮৩ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে এফএ পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন এবং একটি স্বর্ণপদক ও বৃত্তি পান। একই কলেজ থেকে ১৮৮৬
সালে বিজ্ঞানে অনার্সসহ বিএ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেন।
প্রকৃতপক্ষে একমাত্র এফএ পরীক্ষা ছাড়া জীবনের অন্য সকল পরীক্ষায় তিনি
প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন।