আমি তো শুনি নি। বন্ধু আপনারা কি শুনেছেন?

শিবাশীষ বসু

উত্তরপ্রদেশের হরদোই জেলাতে নাটপুর্বা নামে একটি ছোট্ট গ্রাম আছে। উত্তরপ্রদেশের ঝাঁ-চকচকে রাজধানী লখনউ থেকে মাত্র দুইঘন্টার রাস্তা। আজও দারিদ্রসীমার অত্যন্ত নিচে অবস্থান এই গ্রামের অধিবাসীদের। আশপাশের গ্রামের লোকের ওই গ্রামটিকে কি বলে জানেন?

বেজন্মাদের গ্রাম।

বন্ধুরা শুনে আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছেন? কথাটা কিন্তু সত্যি। ভাবতে পারেন, নাটপুর্বা গ্রামের বেশিরভাগ বাচ্ছারা কে তাদের বাবা তা জানে না। অধিকাংশ মেয়েরা জানে খালি পেট ভরাতে গেলে দুনিয়ায় একটাই উপায় আছে – শরীর বিক্রয়।

নাটপুর্বা গ্রামে মেয়েরা কেউ পুতুল নিয়ে খেলে না। কে কিনে দেবে বলুন? বাবা-ই তো নেই। বরং দশবারো বছর বয়স থেকে তারাই হয়ে যায় খেলার সামগ্রী – বড়ো বড়ো চেহারার নারীখাদকরা আসে – দুটো পয়সার বিনিময় তাদের ছোট্ট শরীরটা নিয়ে খেলে।

এই খেলা শুরু হয়েছিল অনেকদিন আগে সুদুর ব্রিটিশ পিরিয়ডে, যখন ক্রিমিনাল ট্রাইব্যাল অ্যাক্টের নামে ব্রিটিশরা নাট উপজাতির সমস্ত পুরুষকে ধরে নিয়ে যায় এবং দীর্ঘদিন বিনা বিচারে আটকে রাখে। পেটের দায় বড়ো দায়, বন্ধুরা ! সেই শুরু নাট উপজাতির মেয়েদের শরীর বেচা। তারপর সিন্ধু আর গঙ্গার উপর দিয়ে কত জল বয়ে গেল। একজন মহিলা উত্তরপ্রদেশের রাজসিংহাসন অলংকৃত করে রইলেন দীর্ঘকাল। কিন্তু নাট উপজাতির মা-বোনেদের তিমির রাত্রি আজও কাটলো না !

শহরে একটা ধর্ষন হলে আমরা ড্রয়িংরুমে বসে বসে টিভিতে বাইট দেখি। মোমবাতি মিছিলে মিডিয়ার সামনে মুখ দেখাই। আর নাটপুর্বার মেয়েরা রাতের পর রাত ধর্ষিত হয়ে চলেছে। কোনো মানবাধিকার সংগঠন, কোনো নারীবাদী এনজিও এদের হয়ে কথা বলে কি?

আমি তো শুনি নি। বন্ধু আপনারা কি শুনেছেন?

রাত শেষ হয়ে সূর্য উঠবে কবে …….

Scroll to Top