যে নিউজটাতে সবাই মর্মাহত- সৌদি আরবে বাংলাদেশী দুই গৃহকর্মীকে বাবা এবং তার ছয় পুত্র মিলে এক মাস ধরে ধর্ষণ করে চলেছে। ইসলামের জন্মভূমিতে পাক্কা নামাজী লোকজন কেন এই চরিত্রের হয়ে থাকে সেটা নিয়ে আগে লিখেছি। আজ লিখব- ইসলামে দাসীকে পিতা পুত্র মিলে ভোগ করার যে অনুমোদন দিয়েছে তারই আলোকে হতভাগ্য এই দুই বাংলাদেশী নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। আমাকে গালাগালি করার আগে আসুন ধীরে-সুস্থে বিষয়গুলো একটু জানি।
সুরা নিসার ‘ডান হাতের অধিনে আসা’ বলতে দাসীদের বুঝানো হয়েছে এটা না জানলে আপনি কুরআন-হাদিসের কিছুই জানেন না। এই দাসী দু’ভাগে লাভ করা যাবে- এক. যুদ্ধে শত্রু পক্ষের নারীদের গণিমতের মাল হিসেবে লাভ করে। দুই. বাজার বা কোন মাধ্যম থেকে দাসী ক্রয় করে নেয়া। আজকের যুগে সৌদি আরব নারীদের গণিমতের মাল করতে পারবে না জেনেভা কনভেশনের গ্যাড়াকলে পড়ার ভয়ে। বাকী থাকে দাসী কেনা, সেটা তারা ‘গৃহকর্মী’ আমদানী করার ছলে আসলে একটা দালাল গ্রুপের মাধ্যমে দরিদ্র দেশগুলো থেকে কিনে নেয়। বাংলাদেশের মত দরিদ্র দেশের নারীদের সরকারীভাবে বা বেসকারীভাবে সৌদিতে এক প্রকার বছরান্তে চুক্তিতে বিক্রি করে দেয়া হয়। যেমন দুই বছর চুক্তিতে একটা নারী সৌদি কোন পরিবারে বিক্রি হয়ে যায়। গৃহকর্তা তাকে ‘ডান হাতের অধিনে আসা’ দাসী হিসেবেই জানে। এই দাসীদের নিয়ে সে কি কি করতে পারবে ইসলাম সম্মতভাবে সেটা হতভাগ্য দাসীদের অকপটে বলেও দেয়। বলাই বাহুল্য, কোন মুসলিম নারীই সেটা বিশ্বাস করতে চায় না…।
দাসীদের সঙ্গে বিয়ে ছাড়াই সেক্স করা যাবে- এটা কোন অন্যায় কাজ নয়। স্বাধীন সধবা নারীদের সঙ্গে বিবাহবর্হিভূত সেক্স করা ইসলাম মতে ব্যাভিচার যার শাস্তি পাথর ছুড়ে মারা। নারী পুরুষ স্বেচ্ছায় যৌন সম্পর্কে জাড়ালেও ইসলামের চোখে সেটা মহা অন্যায়। কিন্তু দাসীদের বিয়ে ছাড়াই সেক্স করা বিরাট পূণ্যে কাজ! দাসীদের যে বিয়ে ছাড়াই সেক্স করা যায় এটা ইসলামিস্টরা আজকাল গোপন করতে চায়। অসংখ্য হাদিস আছে তাদের মিথ্যাচারের জবাব দিতে। এরকমই একটি শক্তিশালী পাটকেল হতে পারে এই হাদিসটি- মুয়াত্তা, বুক নং-৩০, হাদিস নং-৩০.২.১৩ঃ, আব্দুল্লাহ ইবনে দিনার বলেন, “…এক লোক উমর ইবনে খাত্তাবের কাছে এসে বলল-‘আমার একটি ক্রীতদাসী আছে, তার সাথে আমি নিয়মিত যৌনসঙ্গম করি। আমার স্ত্রী তার কাছে গিয়ে তাকে বুকের দুধ খাইয়েছে। এরপর যখন আমি মেয়েটির কাছে গেলাম, আমার স্ত্রী আমাকে বের হয়ে যেতে বলল, কারণ সে নাকি তাকে বুকের দুধ খাইয়েছে’। উমর লোকটিকে স্ত্রীকে প্রহার করার আদেশ দিলেন এবং (আগের মতোই) সে তার দাসীমেয়েটির কাছে যেতে পারবে বললেন। কারণ বুকের দুধ খাওয়ানোর মাধ্যমে যে আত্মীয়তা প্রতিষ্ঠিত হয় তা কেবল ছোটদের বেলায়”।
একজন নারী ঈর্ষাবশত ঘরের দাসীটির কাছে তার স্বামীর যাতায়াত ঠেকাতে তার বুকের দুধ খাইয়েছিল। যদি দাসীকে বিয়ে করে সেক্স করতে হতো তাহলে এমনটা করার প্রয়োজনই ছিল না। যেমন কারুর বৈধ একাধিক স্ত্রী থাকলেও এক রাতে সবার সঙ্গে গোসল ছাড়া সঙ্গম করতে পারবেন না। কিন্তু দাসীদের সঙ্গে তেমনটার প্রয়োজন নেই। (দেখুন: মুয়াত্তা: ২.২৩.৯০)। হযরত উমারের আগে তো আরো ভয়াবহ অবস্থা ছিল। তখন একজন ঈমানদার মুসলমান দাসী এবং তার গর্ভজাত কন্যাকে একত্রে সঙ্গম করতে পারতেন! অতঃপর উমার তার নিজ ক্ষমতা বলে সেটা বাতিল করে দেন। হাদিসটি দেখুন- মুয়াত্তা, বুক নং-২৮, হাদিস নং-২৮.১৪.৩৩, ….আবদুল্লাহ ইবনে উতাবা ইবনে মাসুদ তার পিতার বরাত দিয়ে বলেন যে ওমরকে একজন ব্যক্তির কথা জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যার দক্ষিণ হস্তের অধিকারে ছিল একজন দাসী ও তার গর্ভজাত কন্যা, এই অবস্খায় লোকটি তাদের একজনের সাথে যৌনসঙ্গম করার পর অপর জনের সাথে করতে পারে কিনা? উমর বলেছিলেন – “উভয়ের সাথে একই সাথে (সহবাস) করা আমি অপছন্দ করি”। অত:পর তিনি উহা নিষিদ্ধ করেন।
এবার আসুন পিতা পুত্র দাদা নাতির মধ্যে দাসী ভাগাভাগি করে ভোগ করার ইসলামী অনুমোদন কতটা আছে জানা যাক। হেদাইয়া আইন শাস্ত্র মুসলিম জীবনে শরীয়তী বিধানের অন্যতম সূত্র। পৃথিবী সমস্ত ইসলামী ফতোয়াতে এই গ্রন্থ রেফারেন্স হিসেবে কাজ করে। সেখানে বলা আছে পিতা তার পুত্রের বা পৌত্রের ক্রীতদাসীটির সঙ্গে সেক্স করতে পারবে এবং সেটা কোন শাস্তিযোগ্য কাজ নয়, এটি বৈধ। (দ্য হেদাইয়া কমেন্টারি অন দ্য ইসলামিক ল’স-(পুণর্মুদ্রন-১৯৯৪); অনুবাদ- চার্লস হ্যামিল্টন। রেফারেন্স কৃতজ্ঞতা: আবুল কাশেম)।
এবার সৌদি আরবে যা ঘটছে তাকে কি বলবেন? অবশ্যই মানবতার বিরুদ্ধে জঘন্য অপরাধ। কিন্তু ঠেকাবেন কি দিয়ে? ধর্মের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারবেন? খালি খালি সৌদিআনদের গালাগালি করে কি লাভ?
http://ebizctg.com/ধর্মের-দোহাইতেও-রক্ষা-মে/
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/1264076/%E0%A6%9C%E0%A7%81%E0%A6%9F%E0%A6%B2-%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A6%B2-%E0%A6%A7%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%A3-%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A6%B2-%E0%A6%98%E0%A7%81%E0%A6%B7%E0%A6%BF-%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A5%E0%A6%BF
http://www.amiopari.com/17209/