আফগানিস্তানের এক প্রদেশ “নুরীস্তান” (কাফিরিস্তান)
ডাঃ মৃনাল কান্তি দেবনাথ
কাফিরিস্তান এমনই এক জায়গা, যেখানকার হিন্দুদের মাত্র ১৮৯৬ সালে ইসলাম কবুল করতে হয়েছে। সারা আফগানিস্তান এবং সেন্ট্রাল এশিয়ার ইসলামি দ্বাসত্বের হাত থেকে পালিয়ে বাচা “হিন্দুগুলো’র ইতিহাস এই কাফিরিস্তানের হিন্দুদের ইতিহাস।
আজ যারা আফগানিস্তানের ‘নুরীস্তান’ (কাফিরিস্তান) প্রদেশে বাস করে , যাদের মধ্যে প্রায় ৯৫% এখন মুসলিম, এরা আসলে কারা???? এই প্রশ্নের উত্তরের সংগে জড়িয়ে আছে সারা ভারত বর্ষের ভুমি পুত্রদের (Indigenous People of Bharat) সংগে যে অমানুষিক অত্যাচার করার হয়েছে বিগত প্রায় ২৫০০ (আলেকজান্ডার ৩২৭ খ্রীষ্ট পুর্বাব্দে) বছর থেকে শুরু করে , বিশেষ করে বিগত ১৫০০ বছর ধরে আজ অবধি (আরবী / তুর্কি, ১০০% বহিরাগত,বিদেশী এবং বিধর্মী) তার ইতিহাস।।
এই প্রশ্নের উত্তর আজো কেউ লেখেনি, বলেনি,জানেনি। জানলেও চুপচাপ রয়ে যায় , ধামা চাপা দেয় বা ভুল কথা শুনিয়ে অত্যাচারিত সনাতনি হিন্দুদের ঘুম পাড়িয়ে রেখে দেয়। এই ঘুম পাড়ানোর কাজ শুরু হয়েছে ওই বিদেশী ঐতিহাসিকদের দ্বারাই। আরবী/তুর্কি দের সংগে তাদের সাকরেদ যে লেখক রা এসেছিলো, যেমন আল-বেরূনী, ফেরদৌসী, তারা তাদের প্রভুদের জয় গাথা লিখে রেখে গেছে। সেই কাজ বাবুর (বাবুর নামা) থেকে শুরু করে আকবরের উচ্ছিষ্ট ভোগীরাও (হিন্দু লেখকেরাও এর মধ্যে আছে, আর আকবর নামা বলে আর একখানি মিথ্যার ঝুড়ি আছে। তারপর আছে ব্রিটিশের ভাড়া করা লেখক। বর্তমানে আছে চীন, প্রাক্তন রাশিয়ার ধামা ধরা বাম পন্থী বুদ্ধিজীবি, আর সর্ব শেষ সেই ‘জিহাদী’ দের মাতব্বর ‘পেট্রো ডলার’ এর যোগানদার এবং পাকিস্তানের গোয়েন্দা দপ্তরের অনুকম্পা প্রার্থী সিনেমা পরিচালক, ‘যোধা-আকবর’ এর গাজাখুরী প্রেম কাহিনী নিয়ে স্ক্রিপ্ট লেখক এবং তার পরিচালক, সম্প্রতি মেবারের রানী পদ্মিনী এবং লম্পট, রক্ত পিপাষু বিকৃত মস্তিষ্কের আল্লাউদ্দিন খলজী- যে তার নিজের কাকাকে মেরে সুলতান হয়েছিলো এবং হিন্দুদের ওপর অমানুষিক অত্যাচার চালিয়েছিলো সারা জীবন– তাকে নিয়ে প্রেম কাহিনীর স্ক্রিপ্ট লেখক ও তার নামজাদা পরিচালক, এক গাদা টিভি এবং সংবাদ পত্রের সাংবাদিক, Brooker প্রাপ্ত লেখিকা, প্রায় সব রাজনৈতিক দলের প্রথম সারীর নেতা নেত্রী, উচু পদে আসীন ঐতিহাসিক, সবাই মিলে বহু বছর ধরে সুপরিকল্পিত ভাবে সনাতনি ভারতের সত্যিকারে সৃজন শীল, বিদগ্ধ, বিজ্ঞান ভিত্তিক, যুক্তিসম্মত ইতিহাসের শ্রাদ্ধ শান্তি করে ফেলেছে। তা করেও এদের খামতি নেই। যা কিছু এখানে ওখানে ঝড়তি পড়তি আছে তার নিকেশ করে অসভ্য, বর্বরদের ধর্ম এবং শাসন ব্যবস্থা কায়েম না করা অবধি এদের বিশ্রাম নেবার সময় আসবে না।
এরা, হু-ইয়েন-সাং, মার্কো পোলো, পানীনি, বরাহ মিহির, এমনকি প্লেটোর লেখা এবং বিবরন দুই লাইনে শেষ করে দেবে। রামায়নে ,মহাভারতে, ১২০ খানা পুরানে সনাতনি হিন্দুদের রাজন্য বর্গের যে বংশ তালিকা আছে, কাহিনী আছে তার সব গাজাখুরি কল্প কাহিনী বলে ঊড়িয়ে দেবে এক ফুৎকারে।
আলেকজান্ডারের পর যে সব বৈদেশিক আগ্রাসী দস্যু ভারত বর্ষে এসে পৈশাচিক এবং নৃসংশ অত্যাচার, লুট তরাজ করেছে তাদের দুই ভাগে ভাগ করা যায়। একদল ধ্বংস ,লুট তরাজ করে চলে গেছে নিজেদের দেশে ভারত বর্ষের হিন্দুদের ধন সম্পত্তি নিয়ে। আর একদল ‘জিহাদী’ পতাকা নিয়ে এসে গেড়ে বসেছে ভারতের সমস্ত অধিবাসীকে ‘শান্তির ধর্মে’ দীক্ষিত করতে। ভারতের সিন্ধু, গঙ্গা, যমুনা, কাবেরীর শ্যামলিমায় তাদের মনে কোমলতা আসেনি কিন্তু শষ্য শ্যামল ভুমির উৎপন্ন সম্পদের ভাগীদার হয়েছে। খোড়া তৈমুর আর নাদির শাহ প্রথম দলে পড়ে। চেঙ্গিজ খান বিশাল সাম্রাজ্য স্থাপন করলেও ভারতবর্ষে ঢোকেনি। সিন্ধু দেশ দখল করে ‘আরবী জিহাদী’ রা ‘শান্তির বানী’ শক্ত ভিতের অপরে দাড় করিয়েছিলো ঠিকই কিন্তু আর অগ্রসর হতে সাহস পায়নি। সেই কাজ শুরু হয়েছিলো ৩০০ বছর পরে।
আফগানিস্তানের ভৌগলিক অবস্থানের দিকে লক্ষ্য করলে বোঝা যাবে যে, জল পথ ছাড়া স্থল পথে আমাদের দেশ ঊত্তর দিক থেকে আক্রমন করতে হতে হলে উত্তুংগ হিমালয় পার হতে হবে। ভারতের উত্তরে তিব্বতের মালভুমি। তা পেরিয়ে আসাও অসম্ভব। পশ্চিমে আছে হিন্দুকুশ এবং তার মাঝে মাঝে গিরিপথ। এই গিরিপথ গুলোর খবর জেহাদিদের কাছে ছিলো, বিশেষ করে ব্যাবসায়ীক ব্যাপারে (সিল্ক রুট), অনেক দিন আগে থেকেই।
কে না এসেছে ভারতবর্ষে ? সাসানিদ, সামানিদ, কুষান,তুর্কী, সুবুক্তিগীন, তার পুত্র মাহমুদ,ঘোরী, মোঙ্গল। মোঘল, পাঠান,খলজী, দুরানী। ভারত মাতাকে ধর্ষন করতে এরা সবাই এসেছে— “এই ভারতের মহা মানবের সাগর তীরে”(ভারতবর্ষ কবিতা—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) । এই মহা পুন্য কর্ম করতে এরা সবাই প্রথমে ঘাটি গেড়েছে বর্তমান আফগানিস্তানে যা কিনা, পুরান, রামায়ন, মহাভারতের কম্বোজ, কেকয় (কৈকেয়ীর কেকয়) এবং গান্ধার (গান্ধারীর গান্ধার) রাজ্য ।