কোলকাতার ‘জুলফিকার’ সিনেমা মুক্তি পেতে ‘পদ্মাবতীর’ মতই বাধার সম্মুখিন হয়েছিলো। মুসলিম মৌলবাদীরা জুলফিকার মুক্তি পেতে দিবে না। তাদের খুশি রাখতে শেষে কাচি দিয়ে কাটতে হয়েছিলো সিনেমার অংশ বিশেষ। কোলকাতা তখন চুপ ছিলো। যেমন চুপ ছিলো তসলিমা নাসরিনকে কোলকাতায় মুসলিম মৌলবাদীরা প্রবেশে বাধা দিলে। তসলিমা কার্যত পশ্চিম বাংলায় মুসলিম মৌলবাদীদের ইচ্ছায় ব্রাত্য হয়ে আছেন। কোলকাতা তখনো চুপ এখনো চুপ। এই বোবাকালা মুখগুলোই এখন পদ্মাবতী সিনেমার জন্য সরব! হিন্দু মৌলবাদীরা সিনেমা সাহিত্য কেমন হবে তা ঠিক করে দিবে তা তো হয় না। তাই পদ্মাবর্তী যেমন সিনেমাই হোক তার পক্ষে দাঁড়ানো যে কোন প্রগতিশীল মুক্তচিন্তার মানুষেরই দায়িত্ব। যেমন দায়িত্ব তসলিমার মৌলিক অধিকারের পক্ষে দাঁড়ানো। একজন লেখকের পক্ষে কেন কোলকাতার লেখক সমাজ দাঁড়ালো না? হিন্দু মৌলবাদে কনডম পরালে মুসলিম মৌলবাদ বিস্তারে কেন জন্মনিয়ন্ত্র ব্যবস্থায় অনিহা? এ কি অনিহা নাকি ভয়? এ কারণেই বাংলাদেশের তথাকথিত প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীদের বুঝতে পারলেও পশ্চিম বাংলার প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীদের বুঝতি পারছি না। বাংলাদেশের তথাকথিত প্রগতিশীলরা স্বধর্মীয় নৈকট্যের কারণে মুসলিম মৌলবাদ ঘেষা হয়ে থাকে। তাই বাংলাদেশী তথাকথিত প্রগতিশীলদের বুঝা খুব সহজ। কিন্তু কোলকাতার প্রগতিশীলদের মুসলিম মৌলবাদীদের উত্থানে তাদের নিরবতা বোধগম্য নয়।
পদ্মাবতী জাতীয়তাবাদ বিতর্ক তুলেছে। আমার মনে হয় না এখানে হিন্দু ধর্মীয় সেন্টিমেন্ট কাজ করছে। কারণ ‘পিকের’ মত সিনেমায় হিন্দুদের ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে চরম উপহাস করা হয়েছে। সেই সিনেমা মুক্তি পেয়েছে বিজেপির জমানায়। পিকে’র তুলনায় জুলফিকার কিছু্ই নয়। জিহাদ যে সন্ত্রাসবাদ সেটি দেখানোর সৎ সাহস পশ্চিমবঙ্গের কোন পরিচালকের নেই শুধু নয়, এতখানি ইসলাম সম্পর্কে তাদের জানাশোনাই নেই সন্দেহ। মমতা বন্দোপাধ্যায় না হয় ৩০ ভাগ মুসলিম ভোট নিশ্চিত করতে মুসলিম মৌলবাদ তোষণ করছেন, কিন্তু বুদ্ধিজীবীরা?