প্রতিটি স্কুলে মসজিদ আছে। প্রতিটি স্কুলে মিলাদ মহফিল হয়। কিন্তু হিন্দুরা একদিনের পূজা করবে সেটা সম্ভব না।

বাংলাদেশে ধর্মীয় অধিকার বিপন্ন।
বাংলাদেশে গ্রামাঞ্চলে হিন্দু জনসংখ্যা নির্যাতনের কারণে নিম্নমূখী হলেও শহরাঞ্চলে হিন্দুরা বহুলাংশে নিরাপদ ছিলেন। গ্রামে যে ভাবে অতর্কিতে আক্রমণ করে এক একটা হিন্দুপ্রধান গ্রাম লুটতরাজ, ধর্ষণের পর আগুন দিয়ে সব বসত ভিটা  ধ্বংস করে দেয়ার ঘটনা পত্রপত্রিকায় প্রতিনিয়ত আসে; শহরে তেমন কিছু ঘটেনা।


       ফলে নিরাপত্তার কারনেই শহরে হিন্দু জনসংখ্যা বেড়েছে। এবং শহরগুলোতে পূজোর সংখ্যা বহুগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু হিন্দুরা শহরে এভাবে পূজা করুক তা বাংলাদেশের সংখ্যাগুরু জনগন খুব ভালো নজরে দেখেনা। বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা নিষিদ্ধের পর্যায়ে চলে গেছে। পুলিশের প্রহরা থাকায় এখন পর্যন্ত শহর এলাকাতে মূর্তি ভাঙ্গার ঠিক প্রচলন হয়নি; যদিও বিক্ষিপ্তভাবে সেসব ঘটে।
      যেহেতু শহরেই বেশীরভাগ হিন্দুরা বাস করতে বাধ্য হচ্ছেন তাই হিন্দু ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও আনুপাতিক হারে বেশী শহরে। হিন্দু ছাত্র ছাত্রীরা চিরকাল বিদ্যাদেবী সরস্বতীর পূজা করত নিজ নিজ স্কুলে। বাংলাদেশের শহারঞ্চলের মত ঢাকায়ও বিদ্যালয়েই বিদ্যাদেবীর পূজো হত। কিন্তু এটা অনেকেরই চোখে চক্ষুশুল হয়ে উঠেছিল। এবার তাই স্কুলে যাতে আর হিন্দু ছাত্র ছাত্রীরা পূজা না করতে পারে তার জন্য নির্বাচনের দোহাই দিয়ে তা বানচাল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রতিটি স্কুল ঘরই ব্যবহার করা হবে নির্বাচনের জন্য ফলে স্কুলে পূজা হতে দেবেনা। সহজ সরল অঙ্ক।
   প্রতিটি স্কুলে মসজিদ আছে। প্রতিটি স্কুলে মিলাদ মহফিল হয়। কিন্তু হিন্দুরা একদিনের পূজাও যাতে না করতে পারে তার জন্য নির্বাচনের দিন স্থির করা হয়েছে। নির্বাচন এমন কিছু নয় যে কয়দিন পরে করা যাবেনা। যে কোন পরিস্থিতিতেই নির্বাচন দু একদিন পিছানো কোন ব্যাপারই না। কিন্তু এতো পরিকল্পনা করে নির্বাচনের দিন স্থির করা হয়েছে বলেই সরকার এমনকি হাইকোর্ট পর্যন্ত নির্বাচন পিছানোর পক্ষে কথা বলেনা।  নির্বাচন পিছানো যায়না এমন রায় যে কোর্ট দিয়েছে তারা কি হিন্দু ছাত্রছাত্রীদের প্রতি এতোটাই অবজ্ঞা দেখাতে পারে? কি হবে সেই কোর্ট দিয়ে যারা মানুষের মৌলিক অধিকারকে মূল্য দেয়না। কি হবে সেই সব প্রার্থীকে ভোট দিয়ে যারা হিন্দুদের ধর্মীয় অধিকার রক্ষার জন্য নির্বাচন বর্জনের হুমকি দেয়না। আওয়ামি লীগের প্রার্থী তেমন ঘোষনা দিলেই নির্বাচন বন্ধ হয়ে যেতে বাধ্য; কিন্তু তারা কি কেউ হিন্দুদের প্রতি সামান্যতম শ্রদ্ধাবোধ রাখেন?
আসলে সরস্বতী পূজার উপর  নিষেধাজ্ঞা জারী করা হল। সরাসরি নিষেধ করা হলোনা এটুকুই আরকি! সাবাস বাংলাদেশ!! অমুসলিমদের ন্যায্য অধিকার বার বার কেড়ে নিয়ে কি তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা হচ্ছেনা?
আজ এমন ঘটনা ভারতে ঘটলে সেখানকার বুদ্ধিজীবীরা পথে নামতেন। বাংলাদেশে কি কেউ তেমন আছেন? না নেই; উনাদের এক কথা ” আমাদের হচ্ছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ’। কারন এখানে হিন্দুদের প্রতিবাদও করতে দেওয়া হয়না।