যুদ্ধবন্দীদের সঙ্গে সেক্স করা বৈধ বলেই

❌🇵🇰️❌প্রসঙ্গঃ কোরান হাদীস অনুযায়ী যুদ্ধবন্দীদের সঙ্গে সেক্স করা বৈধ বলেই মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনী ২ লক্ষ বাঙালী নারীকে ধর্ষণ করার প্রণোদনা পেয়েছিল ❌️🇵🇰️❌ 

শুরুতেই জানিয়ে দেই, কোরান হাদীসে Rape কিংবা ধর্ষণ বলে কোন শব্দ বা বক্তব্য নেই বরং Zina bi al-ikrah এর কথা বলা আছে যার অর্থ স্ত্রী ব্যতীত অন্য কোন নারীর সঙ্গে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক যৌনসঙ্গম করা।

সূত্রঃ http://irep.iium.edu.my/16877/1/PUNISHMENT_FOR_RAPE_IN_ISLAMIC_LAW.pdf

বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর কেসিয়া আলী, পিএইচডি বলেছেন –

For premodern Muslim jurists, as well as for those marginal figures who believe that the permission [for slavery] still holds, the category “rape” doesn’t apply: ownership makes sex lawful; consent is irrelevant.

অর্থাৎ, ইসলামে ধর্ষণ বলে আসলে কিছু নেই বরং ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে সম্মতির প্রশ্ন অবান্তর ও কর্তৃত্বপরায়ণ এই ধর্মটি যৌনতাকে জায়েজ করেছে

সূত্রঃ https://www.huffingtonpost.com/kecia-ali/islam-sex-slavery_b_8004824.html

লক্ষ্যণীয়, Rape বা ধর্ষণ বলতে কোরান হাদীস বোঝে নিজের স্ত্রীর ব্যতীত অন্য নারীদের বলপূর্বক যৌনসঙ্গমে বাধ্য করা পক্ষান্তরে আধুনিক বিশ্বে ধর্ষণের সংজ্ঞার আওতায় – নিজের স্ত্রীর ইচ্ছের বিরুদ্ধে যৌনসঙ্গম করাও ধর্ষণ এবং আইনগতভাবে একটি দণ্ডনীয় অপরাধ।

সূত্রঃ https://en.wikipedia.org/wiki/Marital_rape#Legal_changes

সুরা বাকারার ২২৩ নং আয়াতে আছে –

তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের জন্য শস্যক্ষেত্র, তাই সেই শস্যক্ষেত্রে যেভাবে খুশি ও যখন খুশি চাষাবাদ করো।

সূত্রঃ http://www.quranx.com/2.223

সচেতন মানসে প্রশ্ন জাগে,

১) স্ত্রী বলেই কী স্বামী তার স্ত্রীর ইচ্ছে অনিচ্ছে ও সমস্যা বিবেচনা না করেই ‘যেভাবে খুশি’ এবং ‘যখন খুশি’ সেক্স করার অধিকার লাভ করবে?

২) স্ত্রী মানে কী তবে দেনমোহর নামের অর্থের বিনিময়ে কেনা ক্রীতদাসী বা দাসীবান্দী?

৩) নারী কী তবে শুধুই যৌন সম্ভোগের নিমিত্তে এক তাল মাংস কিংবা সেক্স-মেশিন?

ইসলামে নারী পুরুষের সমতা নেই বলেই ২২৩ নং আয়াতে পুরুষকে যেভাবে খুশি ও যখন খুশি সেক্স করার অধিকার দেওয়া হয়েছে কিন্তু ২২৪ কিংবা অন্য কোন আয়াতেই নারীর যৌন ইচ্ছে, যৌন স্বাধীনতার বিষয়টিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। 

সুরা নিসার ২৪ নং আয়াতে বলা হয়েছে –

এবং নারীদের মধ্যে তাদের ছাড়া সকল সধবা স্ত্রীলোক তোমাদের জন্যে নিষিদ্ধ; তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের মালিক হয়ে যায়-এটা তোমাদের জন্য আল্লাহর হুকুম। এদেরকে ছাড়া তোমাদের জন্যে সব নারী হালাল করা হয়েছে, শর্ত এই যে, তোমরা তাদেরকে স্বীয় অর্থের বিনিময়ে তলব করবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য-ব্যভিচারের জন্য নয়। অনন্তর তাদের মধ্যে যাকে তোমরা ভোগ করবে, তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর। তোমাদের কোন গোনাহ হবে না যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পরে সম্মত হও। নিশ্চয় আল্লাহ সুবিজ্ঞ, রহস্যবিদ।

সূত্রঃ http://quranx.com/4.24?Context=3

সহীহ মুসলিম ও সুনান আবু দাউদের হাদীসে এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় তাফসীর গ্রন্থ তাফসীর ইবনে কাথিরে রয়েছে একই তথ্য –

হুনাইনের যুদ্ধে মুসলিমেরা নারীদের যুদ্ধবন্দী করলেও তাদের ধর্ষণ করার ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহী ছিল না কেননা উক্ত নারীরা ভার্জিন ছিল না উপরন্তু তারা মূর্তিপূজারীদের স্ত্রী ছিল। তখন নবী মোহাম্মদ আল্লাহর ওহী নাযিল হওয়ার গল্প শুনিয়ে উক্ত মুসলিমদের যুদ্ধবন্দী ধর্ষণে উৎসাহিত করেন –

Abu Sa’id Al Khudri said “The Apostle of Allah(ﷺ) sent a military expedition to Awtas on the occasion of the battle of Hunain. They met their enemy and fought with them. They defeated them and took them captives. Some of the Companions of Apostle of Allah (ﷺ) were reluctant to have relations with the female captives because of their pagan husbands. So, Allah the exalted sent down the Qur’anic verse “And all married women (are forbidden) unto you save those (captives) whom your right-hand possess.” This is to say that they are lawful for them when they complete their waiting period.

সূত্রঃ

ক) http://quranx.com/Hadith/AbuDawud/DarusSalam/Hadith-2155

খ) http://quranx.com/Hadith/Muslim/Reference/Hadith-1456

গ) http://www.qtafsir.com/index.php?option=com_content&task=view&id=684

এখান থেকে বিষয়গুলো ক্লিয়ার হয় –

১) মুমিনদের কাছে বিবাহিতা নারীদের সঙ্গে যৌনসঙ্গম অপেক্ষা ভার্জিন নারীদের সঙ্গে যৌনসঙ্গম অনেক বেশি পছন্দনীয়

২) বিবাহিতা যুদ্ধবন্দীদের সাথে সেক্স করা অপছন্দনীয় – এমনটি নবী মোহাম্মদের কাছে জানালে নবী মোহাম্মদ আল্লাহর বাণী নাযিল হয়েছে এই মর্মে নিজের বক্তব্য চালিয়ে দেন যে – যুদ্ধবন্দীদের সঙ্গে যৌনসঙ্গম হালাল।

৩) ফলে নবী মোহাম্মদের আদেশে উক্ত মুমিনগণ যুদ্ধবন্দী বিবাহিতা নারীদের সঙ্গে যৌনসঙ্গম করেন।

অর্থাৎ, নবী মোহাম্মদই আল্লাহর বাণী নাযিলের গল্প বানিয়ে যুদ্ধবন্দী নারীদের সঙ্গে সেক্স তথা ধর্ষণকে হালাল করে দেন। 

তাফসীর আল জালালাইনে এবং নবী মোহাম্মদের চাচাতো ভাই ইবনে আব্বাস বর্ণিত তাফসীরেও একই বক্তব্য আছে তবে এখানে একটি শর্ত উল্লেখিত হয়েছে যে – উক্ত নারীরা গর্ভবতী হলে শুধুমাত্র এই ধর্ষণটি করা যাবে না।

save what your right hands own, of captured [slave] girls, whom you may have sexual intercourse with, even if they should have spouses among the enemy camp, but only after they have been absolved of the possibility of pregnancy [after the completion of one menstrual cycle]; this is what God has prescribed for you.

সূত্রঃ

ক) http://www.altafsir.com/Tafasir.asp?tMadhNo=0&tTafsirNo=74&tSoraNo=4&tAyahNo=24&tDisplay=yes&UserProfile=0&LanguageId=2

খ) http://www.altafsir.com/Tafasir.asp?tMadhNo=0&tTafsirNo=73&tSoraNo=4&tAyahNo=24&tDisplay=yes&UserProfile=0&LanguageId=2

অর্থাৎ, গর্ভাবস্থা ব্যতীত যুদ্ধবন্দী সকল নারীর সঙ্গে সেক্স করা হালাল, উক্ত নারীদের স্বামী থাকুক আর না থাকুক।

ইসলামিক সাইট সুন্নাহ ডট কমে সারমর্ম হিশেবে এই তথ্যটি জানানো হয়েছে – যুদ্ধে যখন শত্রুপক্ষের কোন নারী ধৃত হবে তখন তার বর্তমান বিবাহটি নাকি নাকচ হয়ে যাবে ! – যা হাস্যকর !

Chapter: It is permissible to have intercourse with a female captive after it is established that she is not pregnant, and if she has a husband, then her marriage is annulled when she is captured

সূত্রঃ https://sunnah.com/muslim/17

ব্যাখ্যাঃ এটা কমন সেন্সের ব্যাপার যে, কোন যুদ্ধবন্দী নারীই শত্রুপক্ষকে স্বেচ্ছায় সেক্স করতে দেবে না। অর্থাৎ, যুদ্ধবন্দী নারীদের সঙ্গে সেক্স করতে গেলে তাদের ইচ্ছের বিরুদ্ধেই জোরপূর্বক সেক্সটি করতে হবে আর এটাকেই বলা হয় ধর্ষণ।

সিদ্ধান্তঃ নবী মোহাম্মদ যুদ্ধে আল্লাহর আদেশের ধোঁয়া তুলে যুদ্ধবন্দীদের ধর্ষণ করার আদেশ দিয়েছেন যা চরমভাবে অনৈতিক এবং একটি ভয়ঙ্কর যুদ্ধাপরাধ বা ওয়ার ক্রাইম।

সূরা আল আহযাবের ৫০ ও ৫২ নং আয়াতে, সূরা আল মুমিনুনের ১-৬ নং আয়াতে এবং সূরা আল মারিযের ২৯-৩০ নং আয়াতে লেখা আছে মালিকানাভুক্ত দাসী ও যুদ্ধবন্দীদের ক্ষেত্রে নিজেদের যৌনাঙ্গকে যদি মুসলিমেরা সংযত না রাখে তবে সেটি হালাল। অথচ দাসী কিংবা যুদ্ধবন্দী কখনোই স্বামী ব্যতীত কোন পুরুষকে বা শত্রুপক্ষের কোন পুরুষকে নিজেদের যৌনাঙ্গ পেতে দেবে না। ফলে, জোরপূর্বক এই সেক্স করাটি হবে ধর্ষণ। আসুন দেখি –

মুমিনগণ সফলকাম হয়ে গেছে, যারা নিজেদের নামাযে বিনয়-নম্র; যারা অনর্থক কথা-বার্তায় নির্লিপ্ত, যারা যাকাত দান করে থাকে এবং যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে। তবে তাদের স্ত্রী ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে সংযত না রাখলে তারা তিরস্কৃত হবে না।

সূত্রঃ

ক) http://quranx.com/23.1-6
খ) http://quranx.com/70.29-30
গ) http://quranx.com/33.50-52

যুদ্ধবন্দী নারীদের সঙ্গে সেক্স করার সময় তারা যেন গর্ভবতী না হয় সেজন্য তাদের যোনীর অভ্যন্তরে বীর্যপাত না করে যৌনাঙ্গ বাইরে এনে বীর্যপাত করাকে আজল বলা হয়, ইংরেজিতে একে বলে Coitus Interruptus। আসুন দেখি –

Abu Sirma said to Abu Sa’id al Khadri (Allah he pleased with him): O Abu Sa’id, did you hear Allah’s Messenger (ﷺ) mentioning al-‘azl? He said: Yes, and added: We went out with Allah’s Messenger (ﷺ) on the expedition to the Bi’l-Mustaliq and took captive some excellent Arab women; and we desired them, for we were suffering from the absence of our wives, (but at the same time) we also desired ransom for them. So we decided to have sexual intercourse with them but by observing ‘azl (Withdrawing the male sexual organ before emission of semen to avoid-conception). But we said: We are doing an act whereas Allah’s Messenger is amongst us; why not ask him? So we asked Allah’s Messenger (ﷺ), and he said: It does not matter if you do not do it, for every soul that is to be born up to the Day of Resurrection will be born.

সূত্রঃ

ক) http://quranx.com/Hadith/Muslim/Reference/Hadith-1438
খ) http://quranx.com/Hadith/AbuDawud/DarusSalam/Hadith-2172
গ) http://quranx.com/Hadith/Malik/In-Book/Book-29/Hadith-1260

প্রশ্ন হচ্ছে, কেন এই আজল ?

জবাবঃ
আরবীয়রা ছিল ডাকাত প্রকৃতির, ধন দৌলত লুটতরাজকারী। ফলে তারা যুদ্ধবন্দী নারীদের সঙ্গে সেক্স করে তাদের গর্ভবতী না করে আজল করতো যাতে একদিকে উক্ত নারীদের ধর্ষণ করে যৌনসঙ্গমের মজাও লোটা যায় আবার উক্ত নারীদের অন্য গোত্রের কাছে বিক্রি করে মুক্তিপণ আদায় করা তথা অর্থসম্পদ আয় করা যায়।
নবী মোহাম্মদ আজলকে ঐচ্ছিক করে দিয়েছিলেন। তবে তিনি আজল থেকে নারী যোনীর অভ্যন্তরেই বীর্যপাতকে অধিকতর পছন্দ করতেন অর্থাৎ ধর্ষণ করে উক্ত নারীদের গর্ভবতী করে দেওয়াই নবীর কাছে অধিকতর পছন্দনীয় ছিলো যার প্রমাণ
বুখারী শরীফের নিম্নোক্ত হাদীসটি –

So, when we intended to do coitus interrupt us, we said, ‘How can we do coitus interruptus before asking Allah’s Apostle who is present among us?” We asked (him) about it and he said, ‘It is better for you not to do so, for if any soul (till the Day of Resurrection) is predestined to exist, it will exist.”

সূত্রঃ http://quranx.com/Hadith/Bukhari/DarusSalam/Hadith-4138
ধর্ষণের শাস্তি কী হবে সেটি নিয়ে ইসলামিক হিপোক্রিসি বা স্ববিরোধিতা
নিম্নোক্ত হাদীসে কোন দাসীর সঙ্গে সেক্স করলে ১০০ বেতের বাড়ি কিংবা পাথর ছুঁড়ে মারার শাস্তির প্রস্তাবনা আছে

সূত্রঃ

ক) http://quranx.com/Hadith/Nasai/Reference/Hadith-3360
খ) http://quranx.com/Hadith/AbuDawud/Hasan/Hadith-4444

অথচ নিম্নোক্ত হাদীসে কোন দাসীর সঙ্গে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে সেক্স করলে দাসীকে মুক্ত করে দেওয়া এবং দাসীর ইচ্ছেতে করলে তাকে রেখে দেওয়ার প্রস্তাবনা আছে। উভয় ক্ষেত্রে, স্ত্রীকে নতুন একটি দাসী জোগাড় করে দেওয়ার প্রস্তাবনা আছে। অর্থাৎ, এখানে জোরপূর্বক সেক্সকারী অর্থাৎ ধর্ষণকারীর কোন শাস্তির বিধান নেই। 

সূত্রঃ

ক) http://quranx.com/Hadith/Nasai/Reference/Hadith-3363
খ) http://quranx.com/Hadith/AbuDawud/Hasan/Hadith-4445

আবার মু’আতা মালিকের হাদীসে ধর্ষিতাকে দেনমোহর (মুক্ত নারীর ক্ষেত্রে) এবং ক্ষতিপূরণ (দাসীর ক্ষেত্রে) দেওয়ার প্রস্তাবনা আছে

সূত্রঃ http://quranx.com/Hadith/Malik/In-Book/Book-36/Hadith-1418

সিদ্ধান্তঃ হাদীস মানে নবী মোহাম্মদের বক্তব্য আর সেখানে যদি একেক জায়গায় একেক ধরনের বক্তব্য থাকে তবে নবী মোহাম্মদের বক্তব্যের কোন গুরুত্ব বা তাৎপর্য থাকে কী? উদ্ভট !

কোন নারীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হলে তাতে নারীর দোষ কী ? অথচ তিরমিজী শরীফের একটি হাদীস থেকে দেখা যায় ধর্ষিতা নারীকেই উল্টে নবী মোহাম্মদ বলছেন – আল্লাহ তোমাকে মাফ করে দিয়েছেন।

She said: ‘Yes, that’s him.’ So they brought him to the Messenger of Allah (ﷺ), and when he ordered that he be stoned, the man who had relations with her, said: ‘O Messenger of Allah, I am the one who had relations with her.’ So he said to her: ‘Go, for Allah has forgiven you.’

সূত্রঃ http://quranx.com/Hadith/Tirmidhi/Reference/Hadith-1454

যুদ্ধবন্দী সাফিয়া ও জুয়াইরিয়াহকে নবী মোহাম্মদ নিজের করে নেন

বুখারী শরীফের হাদীস থেকে জানা যায় –
নবী মোহাম্মদ খাইবার দখল করার পর দিহিয়া তার কাছে একজন যুদ্ধবন্দী নারী চাইলে তিনি সাফিয়া বিনতে হুয়াইকে দেন। কিন্তু নবী মোহাম্মদকে একজন জানান যে – সাফিয়া দুটি গোত্রের প্রধান নারী এবং নবী মোহাম্মদের উচিত আর কাউকে না দিয়ে সাফিয়াকে নিজের জন্য রাখা। তখন নবী মোহাম্মদ সাফিয়ার রূপ ও ক্ষমতা দেখে নিজের পূর্বের মত বদলে ফেলেন এবং নিজের জন্য সাফিয়াকে রেখে দেন

সূত্রঃ http://quranx.com/Hadith/Bukhari/DarusSalam/Hadith-371

সিদ্ধান্তঃ নবী মোহাম্মদ যে ক্ষমতাশালী নারীলোভী ছিলেন এবং নিজের ব্যাপারে ষোল আনা স্বার্থবাদী ছিলেন, তার প্রমাণ এই হাদীসটি। একজন নারীর জন্য তিনি নিজের সিদ্ধান্ত বদলে যাকে প্রথমে দিয়েছিলেন তাকে বঞ্চিত করে সাফিয়াকে নিজের করে নেন – এর চেয়ে লোভী ও স্বার্থান্বেষী মানসিকতা আর কী হতে পারে !
নবী মোহাম্মদ বানু-আল-মুস্তালিক গোত্রকে অতর্কিতে আক্রমণ করেন এবং তাদের হত্যা করেন। অনেক নারীকে যুদ্ধবন্দী করা হয় যার মধ্যে ছিলেন অপরূপা সুন্দরী এবং বিশেষত ‘সুনয়না’ জুয়াইরিয়াহ। জুয়াইরিয়ার রূপে পাগল হয়ে নবী মোহাম্মদ তাকে নিজের করে নেন এবং জুয়াইরিয়াহ এর সঙ্গে বৈবাহিক সূত্র আত্মীয়তার কারণে উক্ত মুস্তালিক গোত্রের যুদ্ধবন্দীদের (১০০ পরিবার) ছেড়ে দেওয়া হয়। 

সূত্রঃ

ক) http://quranx.com/Hadith/Bukhari/DarusSalam/Hadith-2541
খ) http://quranx.com/Hadith/AbuDawud/Hasan/Hadith-3920

১৯৭১ সালের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এই নয় মাসে ধর্ষণ এবং নারী নির্যাতনকে একটি শিল্পের পর্যায়ে তুলে নিয়ে যায় পাকিস্তানী ইসলামিক সেনাবাহিনী।এই নির্যাতনের সংখ্যাগত মাত্রা সুবিশাল,এখন পর্যন্ত পাওয়া হিসেবে নির্যাতিত নারীর সংখ্যা মোটামুটি ভাবে দুই থেকে সাড়ে চার লক্ষ এবং সংখ্যাটা আরো বেশি হবার সম্ভাবনা মোটেও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।লিঙ্গভিত্তিক গণহত্যার ২০ ভাগই ছিল নারী ও শিশু। যেসব মহিলা নিহত হয়েছেন তাদের অধিকাংশই মৃত্যুর পূর্বে ধর্ষণ এবং অন্যান্য যৌন নির্যাতনে শিকার হয়েছেন।এইখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখতে হবে – গণহত্যা এবং নারী নির্যাতন বিচারের মাপকাঠি হিসেবে সংখ্যার ভূমিকা খুবই গৌণ,বরং তার প্রকৃতিই মুখ্য বিবেচ্য এই ক্ষেত্রে। সেদিক থেকেও ১৯৭১ এর নারী নির্যাতন ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ নারী নির্যাতনের ঘটনাগুলোর অন্যতম। নির্যাতনের উপায় হিসেবে ধর্ষণই ছিলনা বরং এর সাথে ছিল বিভিন্ন ধরণের ও বিচিত্র প্রকৃতির অত্যাচার। ধর্ষিতা নারীদের বড় একটি অংশকে ধর্ষণের পরে হত্যা করা হয়েছে,হত্যা করা হয়েছে শারীরিক নির্যাতনের মাধ্যমে।কারো কারো মৃত্যু হয়েছে পৌনঃপুনিক ধর্ষণেই,একটি বুলেটেরও প্রয়োজন হয়নি সেজন্য।
যুদ্ধবন্দীদের ধর্ষণ করার ক্ষেত্রে ইসলাম ধর্মাবলম্বী পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর এই যে উৎসাহ, আস্কারা, জোশ কিংবা প্রণোদনা – এগুলো সবই কোরান হাদীসের  উপরিউক্ত গল্প বা আয়াতগুলোর মাধ্যমে লব্ধ। তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে মনে হয়েছে – যেহেতু কোরান হাদীসে যুদ্ধবন্দীর সঙ্গে সেক্স করা বৈধ, সেহেতু এটি করলে নিশ্চয়ই আল্লাহ খুশি হবেন এবং এতে কোন পাপ হবে না। কেননা, ইসলাম অনুযায়ী, মানুষ প্রণীত মানবতা, বিবেক কিংবা নৈতিকতার কোন মূল্য নেই বরং কোরান হাদীস প্রণীত উপায়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনই মুসলিমদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। মানবতা, বিবেক, নৈতিকতা চুলোয় যাক, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করলেই তো তথাকথিত জান্নাত নিশ্চিত ! এভাবেই ইসলাম মুসলিমদের ধর্ষকামী, অমানবিক, বিবেক ও বিচারবুদ্ধিহীন পশুতে পরিণত করেছে।

এখন প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যে গত ৪২ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রামের অজস্র আদিবাসী নারীদের ধর্ষণ করেছে – এর ব্যাখ্যা কী ?

এর ব্যাখ্যাতেও ইসলাম বিজড়িত আছে। লক্ষ্য করুন – ১৯৭১ পর্যন্ত বাঙালী ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করতো, তখন বাঙালীর নিজস্ব কোন সেনাবাহিনী ছিলো না, জিয়াউর রহমান কিংবা আতাউল গণি ওসমানীর মত হাতে গোনা কিছু লোকজন ছিল পাকিস্তান সামরিক বাহিনীতে। বাংলাদেশ সৃষ্টি হওয়ার পর বাংলাদেশের যে সেনাবাহিনী তৈরি করা হলো, তাতে শীর্ষ পদগুলোর অধিকাংশতেই ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে বিভিন্ন ছোট পদে কাজ করা সেনাসদস্যগণ। তাদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশের মনমানসিকতা ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মতোই, কেননা তারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পশ্চিম পাকিস্তানী সদস্যদের সঙ্গে একটি দীর্ঘ সময় পার করে এসেছিল, ফলে তাদের আদর্শ ও চিন্তাচেতনায় প্রো-ইসলামিক একটি ভাব বিদ্যমান ছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এই প্রো-ইসলামিক বিপথগামী সেনাসদস্যরাই হত্যা করেছিল আর তারপর জিয়াউর রহমান ক্ষমতা কুক্ষিগত করে আরো বেশি প্রো-ইসলামিক ধ্যানধারণা ঢুকিয়ে দেন সেনাবাহিনীর মধ্যে। জাতিসত্তা প্রশ্নে চাকমাদের সঙ্গে মুজিব আমলে বিরোধ শুরু হলেও বিরোধটি চরম আকার ধারণ করে জিয়াউর রহমানের আমলে। ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনামলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাথে শান্তি বাহিনী ১ম বারের মত সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে এবং ক্রমশ সময়ের প্রবাহে গণহত্যার পাশাপাশি এটি আদিবাসী নারী ধর্ষণেও বিস্তৃত হয়।

উইকিপিডিয়া থেকে দেখা যায় –

১৯৭১ থেকে ১৯৯৪ সালের মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার জুম্ম মহিলা ধর্ষণের শিকারে পরিণত হয়েছেন। ১৯৯৫ সালে এক হিসেবে দেখা যায়, ধর্ষণের অধিকাংশই ঘটেছে ১৯৯১ থেকে ১৯৯৩ সালের মধ্যে যাতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সম্পর্ক ছিল। তন্মধ্যে ৪০ শতাংশ ধর্ষণই গৌণ ছিল। ২০০৩ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে ২৭ শতাংশ ধর্ষণে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠীর সম্পৃক্ততা ছিল। কবিতা চাকমা ও গ্লেন হিলের ভাষ্য মোতাবেক দেখা যায়, জুম্ম মহিলাদের উপর যৌন নির্যাতন নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনার পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে।

সূত্রঃ

ক) Chakma, Kabita; Glen Hill (২০১৩)। Kamala Visweswaran, সম্পাদক। Everyday Occupations: Experiencing Militarism in South Asia and the Middle East (ইংরেজি ভাষায়)। University of Pennsylvania Press। পৃ: ১৪৪।

খ) https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF_%E0%A6%9A%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AE_%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%98%E0%A6%BE%E0%A6%A4

লক্ষ্যণীয়,

১) সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমস্যার সূচনা – ১৯৭৭ সালে যা বঙ্গবন্ধুর নয় বরং জিয়াউর রহমানের শাসনামল ছিল।

২) ১৯৯১-১৯৯৩ এবং ২০০৩-২০০৭ পর্যন্ত অধিকাংশ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে, এই সময় প্রো-ইসলামিক ও জামাত শিবির ও জঙ্গিদের মদদ দানকারী বিএনপি ক্ষমতায় ছিল, আওয়ামী লীগ ছিল না।

৩) ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত দীর্ঘ ২১ বছর দেশ জিয়াউর রহমান, তার স্ত্রী বেগম জিয়া এবং হুসেইন মোহাম্মদের শাসনামলে ছিল যারা উভয়েই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন। ফলে, এদের শাসনামলে যে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর আদর্শ ও চিন্তাধারা প্রো-ইসলামিক টাইপের হবে এটি পানির মত পরিষ্কার।

৪) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মনমানসিকতা বা চিন্তাধারা যে প্রো-ইসলামিক টাইপের হবে তার একটি বড় প্রমাণ পাকিস্তানপন্থী তথা বাংলাদেশ বিরোধী প্রধান রাজাকার গোলাম আযমের চতুর্থ ছেলে আবদুল্লাহিল আমান আযমী এই সময়টাতেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ছিলেন।

সূত্রঃ http://www.bd-pratidin.com/national/2014/10/24/38960 

৫) ২০০১ সালের নির্বাচনের পরে প্রো-ইসলামিক মানসিকতাসম্পন্ন বিএনপি-জামাত জোট পুরো বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে হিন্দু নারী ধর্ষণ করে

সূত্রঃ https://www.youtube.com/watch?v=rm4f6VmSnfM

৬) বর্তমানে দেশে নাস্তিক যেমন অনেক বেড়েছে তেমনি এদের দমাতে প্রো-ইসলামিস্টদের দৌরাত্ম্যও অনেক বেড়ে গেছে এবং আওয়ামী লীগ সরকারও ভোট হারানোর ভয়ে এদের তোষণ করে চলছে যা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক আদর্শ – ধর্মনিরপেক্ষতার সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

উপরিউক্ত আলোচনা থেকে এটা সুস্পষ্ট যে, কোরান হাদীসের বিভিন্ন আয়াতের লাই পেয়েই পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালে ২-৪ লক্ষ বাঙালী নারী ধর্ষণ করেছে এবং ১৯৭৭-২০০৭ পর্যন্ত প্রো-ইসলামিক মানসিকতার বাংলাদেশী সেনাবাহিনী প্রচুর চাকমা নারী ধর্ষণ করেছে। ধর্ম নির্বিশেষে পুরুষের ধর্ষকামী স্বভাব তো ভেতরে ভেতরে আছেই কিন্তু কোরান হাদীসের উৎসাহ-আস্কারা-প্রণোদনা ইত্যাদি পেয়ে মুসলিম পুরুষদের সেই ধর্ষকামী স্বভাব আরো অনেক অনেক গুণ বেড়ে গেছে।

লেখাটি ভাল লাগলে লাইক দিন ও শেয়ার করুন। আপনাদের মূল্যবান মন্তব্য প্রত্যাশিত। ধন্যবাদ।