‘ইসলামিক দেশগুলোর’ উদ্দেশ্যে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ‘আপনাদের আমি পূর্ণ সমর্থন করি’! কি এই সমর্থন? মুসলিম দেশগুলো লাগাতার ইসলামফোবিয়া আর মুসলিম বিদ্বেষের অভিযোগ করে আসছে। গুতেরেস ৫৭টি ‘ইসলামিক দেশকে’ সমর্থন করে বলেছেন অবিলম্বে এই ঘৃণা বিদ্বেষের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে…।
করোনা সংকটের সময় কোথাও কোথাও মুসলিমদের করোনা সংক্রমণের জন্য দায়ী করা হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে মহাসচিবের এই রুদ্রমূর্তি ধারণ। কিন্তু এই করোনাকালেই পাকিস্তানে হিন্দুদের ত্রান না দেয়ার, ইসলাম গ্রহণ করলে ত্রাণ দেয়া হবে এরকম রাষ্ট্রীয় অঘোষিত নীতিমালার খবর বিশ্ব মিডিয়ার আসলেও গুতেরেসের চোখে পড়েনি কেন?
গুতেরেস তার বার্তায় বলেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে। তিনি কি ফেইসবুক টুইটারে শত শত ভিডিও পাননি যেখানে কালো কালো বরখা পরিহিত পাকিস্তানী মালয়েশিয়ান, এ্যারাবিয়ান মহিলারা বলছে করোনা এসেছে কাফেরদের জন্য মুসলদের জন্য। কাফেরদের উপর আল্লার গজব নেমে এসেছে…’ এই ভিডিওগুলো কাদের প্রতি ঘৃণা বিদ্বেষ প্রকাশিত হয়েছিলো?
আমরা কি গত বছর মালয়েশিয়াতে রমজান মাসে দিনের বেলা দোকান খোলা রাখার জন্য খ্রিস্টানদের গ্রেফতারের বিষয়ে গুতেরেসকে কিছু বলতে শুনেছি? মিশরে রোজার দিনে খাওয়ার অপরাধে কপ্টিক খ্রিস্টানদের জেল জরিমানার জন্য কি জাতিসংঘের মহাসচিবদের রুখে দাঁড়ানোর আহ্বানের কথা কখনো শুনেছি? ইন্দোনেশিয়ায় আচেহ প্রদেশে শরীয়া আইনে ছেলেমেয়েদের প্রকাশ্যে দেখা করার কারণে বেত মারার ভিডিওগুলো ইন্দোনেশিয়ার সরকার ফলাও করে প্রচার করে সেগুলো কি গুতেরেস দেখেন না? তিনি তো এই ‘ইসলামিক দেশগুলোর’ প্রতিই সমর্থণ জানিয়েছেন তাই না?
গুতেরেস যে ‘ইসলামিক দেশগুলোর’ প্রতি পূর্ণসমর্থন জানালেন সেখানে অনেক দেশেই তো অমুসলিমদের প্রেসিডেন্ট মন্ত্রী সরকারী বড় পদে বসার কোন সুযোগ নেই। মাথায় কাপড় না রাখলে যে ইসলামিক দেশগুলোতে মহিলাদের জেলে ভরা হয় সেই ইসলামিক দেশগুলোর মুসলিম বিদ্বেষ অভিযোগের প্রতি পূর্ণসমর্থন জানানোর আগে ইসলামিক দেশগুলোর নারীদের চাপা কান্না কি গুতেরেস কখনে শোনার চেষ্টা করেছেন?
শরীয়া আইন দিয়ে পাকিস্তান সেদেশের হিন্দু খ্রিস্টানদের প্রতিনিয়ত জেল জরিমানা করে দেশছাড়া করে চলেছে। নাসির নাগর রামুসহ বাংলাদেশের হিন্দু জনগোষ্ঠিকে টার্গেট করে চলা হামলাগুলো বিশ্ব মিডিয়াতে স্থান পেয়েছিলো। কখনো কোন মহাসচিবকে শুনেছে হিন্দুফোবিয়া খ্রিস্টানফোবিয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘ কথা বলেছে? শরীয়া আইনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ কেন দাঁড়ায়নি? পাকিস্তানের লস্কর জইশ মুহাম্মদের মত ইসলামিক জঙ্গি দলগুলো প্রতিনিয়ত ভারতের মাটিতে এসে জিহাদ চালানোর বিষয়ে জাতিসংঘ কেন কথা বলে না?
বলে না কারণ ইসলাম এখন বিশ্ব রাজনীতিতে পাশা খেলার মজাদার ঘুটি! মুসলিমদের জিহাদের বাসনাকে ভাড়ায় খাটানো যায়। ইসলাম বিদ্বেষ মুসলিম বিদ্বেষ এই দুটি পাশার দান আমেরিকা ইউরোপ নিজেদের সুবিধামত ব্যবহার করে সুবিধা করে নেয়। ভারত যখন ইসলামিক জিহাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে ব্যবস্থা নিবে তখনই সেটা হয়ে যাবে মুসলিম বিদ্বেষ। আমেরিকার কাছে মুসলিম বিদ্বেষ কেবল মাত্র উইঘুরেই ঘটে থাকে। আর এই সুযোগে ইসলাম তার শরীয়া জিহাদকে একবিংশ শতাব্দীর প্রস্তরে সাঁন দিয়ে আরো কিছুদিন নিজেকে জানান দিয়ে যেতে পারে। ইসলাম এখনো টিকে আছে বিশ্ব রাজনীতির গুটি কয়েক নেতার লাভ ক্ষতির স্বার্থ চিন্তার উপরে। ন্যাৎসিবাদের চেয়েও ভয়ংকর যে দর্শন কাফের ও মুসলমান এই দুইভাগে পৃথিবীকে বিভক্ত করে তার পক্ষে জাতিসংঘের মহাসচিব দাঁড়ায় রাজনীতির মাঠের প্ররোচনায়তেই…।