ইতিহাস কে জানুন !
———-
১: আপনারা জানেন কি?পার্বত্য চট্টগ্রাম ইতিহাসে বাংলাদেশ
সেনাবাহিনী আর সেটেলার দ্বারা সর্ব প্রথম গনহত্যা
হয়েছিলো কাউখালী বাজার কলমপতিতে (রাঙামাটি)
২৫/৩/১৯৮০ সালে , সেখানে ৩০০ পাহাড়ি ভাই বোন দের
মিটিংএর মধ্যে ডেকে গুলি করা হয়েছিলো এবং ১০০০
এর বেশি পাহাড়ী মানুষ রিফিউজি হিসেবে ত্রিপুরা
পালিয়ে যায় ঐ স্থান জায়গা গুলো আজ বাঙালিদের
দখলে, পুড়ে যাওয়া বৌদ্ধ মন্দির আজ মসজিদ।
পরিকল্পনা কারী সেনা কর্মকর্তারা প্রমোশন
পেয়েছিলো।
২: আপনারা জানেন কি ! ২৬/৬/১৯৮১ সালে বানরাই
পাড়া- বেলতলী ও বেলছড়িতে বাঙালি সেটেলারা
প্রত্যক্ষ সেনা মদদে ৫০০ পাহাড়ি হত্যা ও গুম করে
ছিলো এবং সাড়ে চার হাজার পাহাড়ি জুম্ম ভারতে
শরনার্থী হিসেবে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলো । ঐ
অঞ্চল আজ সেটেলার লোকালয় আর সেনা ক্যাম্প ।
৩: আপনি জানেন কি ! ১৯/৯/১৯৮১ সালে ৫০০ জুম্ম ভাই
বোনের রক্তের দাগ শুকানোর আগেই পৈশাচিক
হিংস্রতায় সেনা এবং সেটেলার মিলিত বাহিনী
তেলাফং-আসালং- গৌরাঙ্গ পাড়া- তবলছড়ি- বরনালা
(ফেনীর কাছে) মোট ৩৫ টি পাহাড়ি গ্রাম আগুনে
জ্বালিয়ে দিয়েছিলো যার ফলে ১০০০ জুম্ম নিহত
হয়েছিলো, অগনিত পাহাড়ি ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলো
আর বাংলাদেশ সরকার আজো ও ঘটনা অস্বীকার করে
এবং পরবর্তিতে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ দেয়া হয়েছিলো
মাত্র ১৮ ডলার করে।
৪: আপনি জানেন কি! ১৯৮৩ সালের জুন মাসের ২৬ তারিখ
জুলাই মাসের ১১, ২৬ ও ২৭ তারিখ এবং আগষ্ট মাসের ৯,
১০ ,১১ তারিখ সেনা সেটেলার গং গোলকপতিমা ছড়া-
মাইচ ছড়া – তারাবন ছড়ির পাহাড়ি গ্রাম গুলোতে
অগ্নি সংযোগ লুটতরাজ হত্যা ধর্ষণ, নারকীয়তা সৃষ্টি
করেছিলো। লাশ হয়েছিলো ৮০০ জুম্ম আদিবাসী।
৫: আপনি জানেন কি! ৩১/৫/১৯৮৪ সালের ভোরবেলা
ভুষণছড়া বাসীদের জন্য নেমে এসেছিলো নরক। প্রথমে
শান্তিবাহিনীর সেনা ক্যাম্প আক্রমণের প্রতিশোধ
হিসেবে বাঙালি সেনা সেটেলার হায়েনার দল ৩০৫ নং
সেনা ব্রিগেড, ২৬নং বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও বি ডি
আরের ১৭ নং ব্যাটালিয়ন মিলে নিরস্ত্র পাহাড়ি গ্রাম
( হাটবাড়িয়া, সুগুরী পাড়া, তেরেঙ্গা ঘাট, ভূষণছড়া,
গোরস্তান, ভূষণবাঘ, ইত্যাদি ) আগুনে জালিয়ে দিয়ে
ছিলো । নিহত হয়েছিলো ৪০০ পাহাড়ি জুম্ম, এই
নিহতদের মাঝে উল্লেখ যোগ্য সংখ্যক ছিলো শিশু ও
নারী। অনেক পাহাড়ি নারী সেনা দ্বারা গন ধর্ষনের
পর হত্যা করা হয়েছিলো। আর ৭০০০ পাহাড়ি
রিফিউজি হতে বাধ্য হয়েছিলো ভারতে।
৬: আপনি জানেন কি ! ১/৫/১৯৮৬ সালে পানছড়িতে
শান্তিবাহিনী বি ডি আর ক্যাম্প আক্রমণ করেছিলো ।
তার ফলশ্রুতিতে সেনা আর সেটেলার পশুরা সেখানকার
পাহাড়ি গ্রাম গুলোর মানুষজন কে একটা মাঠে ডেকে
জড়ো করা হয়েছিলো তার পর শুরু তাদের উপর গুলি। লাশ
হয়েছিলো ১০০ পাহাড়ি ভাইবোন , অ্যমোনেস্টি
ইন্টারন্যাশনাল এর নথিতে পাওয়া গেছে যে
মিরিজবিল এলাকার এক ৭০ বছরের পাহাড়ি বৃদ্ধা কে
পর্যন্ত হায়েনা গুলো রেহাই দেই নি।
৭: পানছড়ির ঠিক একদিন পর ২/৫/ ১৯৮৬ সালে মাটিরাঙা
তে পাহাড়ি রিফিউজি যারা ভারতে পালাচ্ছিলো,
সেই নিরস্ত্র দেশত্যাগী মানুষের উপর এলোপাথারি
গুলি চালিয়েছিলো বর্বর নরপশু সেনারা এতে ৭০ জন
পাহাড়ি বৃদ্ধ,, শিশু, নারী, নিহত হয়েছিলো
৮: আপনি জানেন কি ! মে মাস জুম্ম জাতির ইতিহাসে
দুঃখময় মাস পানছড়ি হত্যা যজ্ঞের দুই সপ্তাহ পার হতে
না হতেই ১৮ ও ১৯/৫১৯৮৬ তাং মাটিরাঙা থেকে প্রায়
২০০ জন ত্রিপুরা নারী পুরুষের দল যারা বাঁচার আশায়
শিলছড়ি থেকে ভারতীয় সীমান্তের দিকে পার
হচ্ছিলো কিন্তু বিধি বাম, তাইদং , কুমিল্লাটিলা
গ্রামের মাঝামাঝি এক সরু পাহাড়ি পথ পাড়ি দেবার
সময় বাংলাদেশ বি ডি আর এর ৩১ ব্যাটালিয়নের নর পশু
জোয়ানরা তাদের উপর হামলা চালায় যার ফলে প্রায়
১৬০ জন নিহত হয় , এমনকি বর্বর পশু জোয়ান বাহিনীর
গুলির হাত থেকে বেচে যাওয়া আহত দের কে সেটেলার
বাঙাল এনে বেয়নেট খুচিয়ে ও দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা
করা হয়। ঐ ঘটনার বেচে যাওয়া অল্প কিছু সাক্ষী আজো
আছে।
৯: আপনি জানেন কি: ৮, ৯, ১০ আগস্ট ১৯৮৮ সালে হিরাচর,
শ্রাবটতলী, খাগড়াছড়ি, পাবলাখালী তে আনুমানিক
১০০ পাহাড়ি জুম্ম কে নির্মম ভাবে হত্যা ও গুম করা হয়।
গণ ধর্ষণ করা হয় পাহাড়ি নারীদের।
১০: ৪/৫/১৯৮৯ সালে লংগদু তে তৎকালীন য়ু পি
চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ অজ্ঞাত নামা লোকের হাতে
খুন হন । এর দায় চাপানো হয় শান্তিবাহিনীর কাঁধে। এর
জের ধরে সেনা সৃষ্ট ভিলেজ ডিফেন্স পার্টি নামক
স্বশত্র সেটেলারদের দল সেনা মদদে অমানুষিক হত্যা
যজ্ঞ চালায়। এতে নিহত হয় ৪০ জন আদিবাসী নারী পুরুষ
শিশু । তাদের মৃতদেহ পর্যন্ত ফেরত দেয়া হয়নি। পুড়িয়ে
দেয়া হয় বৌদ্ধ মন্দির । এমন কি তৎকালীন সাবেক
চেয়ারম্যান অনিল বিকাশ চাকমার স্ত্রী , সন্তান ও
নাতি কে পর্যন্ত নির্মম হত্যা যজ্ঞের শিকার হতে হয়।
সেটেলার হায়েনা রা আজো অনিল বিকাশ বাবুর সমস্ত
জমি দখল করে রেখেছে।
১১: আপনি জানেন কি ! ২/ ২ /১৯৯২ সালে লোগাঙে এক
দিনে জুম্ম জাতির বিরুদ্ধে অন্যতম বৃহৎ হত্যা যজ্ঞ
চালানো হয়। লোগাঙের গুচ্ছ গ্রামে। কাহীনির সুত্র
পাত: এক আদিবাসী মহিলা তার গাবাদি পশু চড়াতে
গ্রামের অদূরে গিয়েছিলো সেখানে দুই জন সেটেলার
বাঙাল দ্বারা সে ধর্ষিত হয় এতে এক পাহাড়ি যুবক
বাধা দেয় তখন তাকে সেখানেই হত্যা করা হয় এবং
সেটেলার কুত্তারা ও আহত হয়। আহত সেটেলার কুত্তা
প্বার্শবর্তি ক্যাম্পে অভিযোগ করে যে
শান্তিবাহিনীরা তাদের হত্যা চেষ্টা করেছে এর জের
ধরে সেই একই হায়েনা সেনা সেটেলার দল মিলে প্রায়
১৫০০ পাহাড়ি জনসংখ্যা অধ্যুষিত গুচ্ছ গ্রাম গুলোতে
হামলা চালায়, এতে করে প্রায় ৪০০ পাহাড়ি নিহত হয়।
প্রায় ৮০০ পাহাড়ি বাড়ি ঘরে লুটপাট অগ্নিসংযোগ করা
হয়, আশে পাশের গ্রামগুলো থেকে প্রায় ২০০০ হাজার
পাহাড়ি কে শরনার্থী হতে হয় প্বার্শবর্তী দেশ ভারতে।
১৩: আপনি জানেন কি ! ১৭/১১/১৯৯৩ সালে নানিয়াচর
বাজারে আদিবাসিদের শান্তিপুর্ন র্যলিতে অতর্কিতে
হামলা চালায় সেই একই জানোয়ার সেটেলার বাহিনী
এবং প্রত্যক্ষ মদদ দাতা সেই একই সেনা হায়েনা। এর
নেতৃত্বে ছিলো সেটেলার দের সংগঠন পার্বত্য গন
পরিষদের নেতা মোঃ আয়ুব হোসাইন নামক হায়েনা
এবং তৎকালীন বুড়িঘাট য়ু পি চেয়ারম্যান নর পশু আব্দুল
লতিফ । এতে নিহত হয় ২৯ জন জুম্ম নাগরিক আহত হয়
শতাধিক। এতে জুম্ম ছাত্ররা যখন প্রতিরোধ গড়ে
তোলার চেষ্টা করে তখন সেনা ক্যাম্প হতে জুম্ম
ছাত্রদের উপর উন্মুক্ত এলোপাথারি গুলি চালানো হয়।
এছাড়া পার্বত্য অঞ্চলে ছোট বড় আরো অনেক হত্যা
ধর্ষণ গুম সাম্প্রদায়ীক দাঙ্গা সংগঠিত হয়েছে।
প্বার্শবর্তী ভারতে শরনার্থী হতে হয়েছে লক্ষাধিক
পাহাড়ি আদিবাসীদের যা আমাদের মনে এক গভীর
ক্ষতের মতো চিরকাল বহমান। আজ পর্যন্ত এর কোন
সঠিক বিচার পাহাড়ি মানুষ পায় নি। বাংলাদেশের
আদিবাসীরা কি কখনো পাবে এক স্বাধীন গণতান্ত্রিক
বাংলাদেশের পরিপুর্ণ নাগরিক অধিকার ?
শেয়ার করে জানিয়ে দিন সবাইকে।