খুবই আনন্দের কথা প্রচার সত্ত্বেও এবার মা দুর্গাকে পুরোপুরি অস্ত্রহীন করা গেলনা। কতিপয় পূজা কমিটি অবশ্য দেবী মূর্তির নামে গোটা কয়েক গৌর নিতাই প্রসব করেছিলেন। তাতে যে মানুষ খুব উৎসাহ দেখিয়েছেন এমন নয়। বাঙালীকে নির্বীর্য এবং নিরস্ত্র করার প্রচেষ্টা এবং পরিকল্পনা বহুদিনের। আর এই পরিকল্পনায় কাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল এবং এখনও আছে সেটিও কম বেশি পরিষ্কার। সুদর্শনধারী কৃষ্ণকে নিছক ননীচোর অথবা ” কানু হারামজাদা”তে রূপান্তরিত করা, সশস্ত্র অসুর বিনাশিনী দুর্গার ‘শক্তিরূপেণ সংস্থিতা” রূপটিকে গৌণ্য করে মা উমা তার বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে বাপের বাড়ি আসছে, ওই দ্যাখ! এই জাতীয় নিরামিষ নির্বিষ, নির্ভেজাল ঘরকন্নার গল্প শুনিয়ে অকাল বোধনের পশ্চাৎপটটিকেই যেন তেন প্রকারেণ ভুলিয়ে দেওয়ার প্রয়াস, শাক্ত এবং শক্তি চর্চা বাদ দিয়ে তরু হতে সহিষ্ণু বৈষ্ণব এবং চৈতন্যচর্চা। যেন পৃথিবীর সব মহিষাসুর সন্ন্যাস গ্রহণ করেছে অথবা গান্ধী টুপি পরিধান করে ডাণ্ডি অভিযানে বেরিয়ে পড়েছে! ঘরে বাইরের বাস্তব চিত্রটি এখন আর অজানা নেই। মেইস্ট্রিম মিডিয়া লুকিয়ে ফেললেও ইন্টারনেটের মহিমায় এসব আজ open secret. যাক, এবারও শুনেছি/ দেখেছি অনেক জায়গাতেই প্রথা মেনে অস্ত্র পূজা হয়েছে। অস্ত্রহীন মা দুর্গা নির্মাণের আহ্বানে তাঁরা সাড়া দেন নি। সেটিই কাম্য৷ কাঁটা ছাড়া যেমন গোলাপ হয়না, ছোবল ছাড়া শঙখচূড় হয়না, অস্ত্র ছাড়া মা দুর্গার কল্পনা তেমনই হাস্যকর।