লাভ জিহাদ

‘লাভ জিহাদ’ ও নাবালকের ধর্মান্তরিত হওয়া।

‘লাভ জিহাদ’ ও নাবালকের ধর্মান্তরিত হওয়া, ‘লাভ জিহাদ’ কথাটা শুনলেই ভারতীয় হিন্দু কমিউনিস্টরা এটাকে চাড্ডিদের মুসলিম বিদ্বেষ, মুসলিমদের প্রতি হিন্দুত্ববাদীদের ঘৃণা ছড়ানো হিসেবে প্রায় প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছে।

 

কিন্তু এক্স মুসলিম হিসেবে জানি, মুসলিম ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসা যে কোন নাস্তিক জানে ‘লাভ জিহাদ’ কতখানি সত্য। খুব ছোটকাল থেকেই আমরা জেনে এসেছি যদি কোন মুসলমান কোন হিন্দু মেয়ে বা ছেলেকে মুসলমান বানিয়ে বিয়ে করে তাহলে এই উছিলায় তার সাত পুরুষ পর্যন্ত বিনা হিসেবে বেহেস্ত চলে যাবে!

 

এই কথা কুরআন হাদিসের কোথায় বলা আছে সেই বিতর্ক বৃথা। এই উপমহাদেশ থেকে শুরু করে মিশর লেবানান সিরিয়া হয়ে তুরস্ক আফ্রিকা পৃথিবীর সব জাতের মুসলমানই এটা জানে ও মানে। ফলে কোন মুসলমান প্রেম করার সময় পিছ পা হয় না তার লাভার হিন্দু নাকি খ্রিস্টান ভেবে।

 

তার বন্ধুবান্ধবরাও বাঁধা দেয় না যে তাদের মিলনে ধর্ম একটি বড় বাধা। কারণ সবাই জানে এটা তো খুব সোজা- সে মুসলমান হয়ে যাবে ব্যস ঝামেলা মিটে গেলো! মুসলমান পরিবারগুলিও অত্যন্ত উত্ফুল্লা থাকে যখন ছেলে কোন হিন্দু মেয়েকে প্রেম করে মুসলমান বানিয়ে ঘরে তুলে। বা হিন্দু ছেলেকে মুসলমান বানিয়ে মেয়ে যখন বিয়ে করে। তা এটাকে ‘লাভ জিহাদ’ কেন বলা যাবে না?

 

বলা যাবে কেন সেটা বলি। তার আগে বলে নেই, আমি কি দুই ধর্মের মানুষের বিয়েতে অরাজি? মোটেই না। বরং এরকম বিয়ে বেশি বেশি হোক সেটাই আমি চাই। কিন্তু সেটা হতে হবে কোন রকম ধর্ম পরিবর্তন না করে।

 

‘স্পেশাল ম্যারেজ এক্ট’ নামের একটা আইন খোদ বাংলাদেশেই আছে যেখানে দুই ধর্মের মানুষ ধর্ম পরিবর্তন না করে আদালতে গিয়ে বিয়ে করতে পারেন। এই রকম দম্পত্তিদের কোন রকম ঝামেলা করলে আইন আপনাদের পক্ষে থাকবে। কিন্তু বিয়ে করবেন আর নিজের ধর্মে কনভার্ট করবেন আর সেটাকে ‘জিহাদ’ বললে জ্বলবে কেন?

এই সাপ্তাহে প্রথম আলোতে যে নিউজটা চোখে লেগেছে সেটা এক মর্মান্তরিক ঘটনা। এক ধর্মান্তিরত মুসলিম তরুণের ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু হয়েছে। এই মৃত্যুর পর জানা গেলো সমাজে কী ভয়ানক মাত্রায় অপ্রাপ্তবয়স্ক মানুষদের ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা চলছে।

 

এই কার্যক্রমগুলি স্কুলে নাকি এখন খুব জোরদার। ক্লাশ টেনে পড়া মানে আইনত ছেলেটি ছিলো নাবালক। সম্পূর্ণ পরিবারের উপর নির্ভর একটি বাচ্চা ছেলে মুসলমান হয়ে গেলো শুধমাত্র মোটিভেশনের কারণে! ফলাফল তাকে পরিবার ত্যাগ করে।

 

তখনই এসবের পেছনের আড়কাঠিরা সব বেরিয়ে আসে। যেমন তার স্কুল তাকে বেতন ফ্রি করে দেয়। তার খরচ বহন করে মুসলিম ধনী এক ব্যক্তি। পরিবার থেকে বেরিয়ে এই ছেলে এইচএসসি পর্যন্ত পড়ে পাশ করে ভার্সিটিতে ভর্তি হতে যাবে এমন সময় ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যায় মোবাইলে কথা বলতে বলতে…।

নাবালকে ধর্মান্তরিত করার কারণে নেপথ্যের লোকজনদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়াই যেখানে সভ্য সমাজে উচিত ছিলো সেখানে স্কুলের শিক্ষকরা তার বেতন ফ্রি করে দেয়। একটা ছেলে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলো এতে কারোর কিছু যায় আসে না। কারণ সে মুসলিম হয়েছে। গোটা বাংলাদেশ তো তার পক্ষেই থাকবে।

বাংলাদেশের স্কুলগুলিতে এখন সহপাঠী থেকে শুরু করে শিক্ষকদের দ্বারা প্রতিনিয়ত পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে ইসলামে কনভার্ট হওয়ার আহ্ববান পায় হিন্দু ছেলেমেয়েরা। তার উপর আছে বিয়ে করে হিন্দুকে মুসলমান বানালে বিনা হিসেবে বেহেস্তে ৭২ হুর পাওয়ার লোভ। ফলে এই দেশে সংখ্যালঘুদের একটা অস্তিত্বহীন ভবিষ্যত নিয়ে শংকায় থাকতে হয়।

#সম্পূরক একটি প্রশ্ন না করে পারছি না। যে ছেলেটি ট্রেনেকাটা পড়ে মারা গেলো এর মুজেজাটা কি? ইসলাম গ্রহণ করার কি এটা পুরস্কার? এই অপঘাতের মৃত্যু আল্লা তার কপালে লিখে রেখেছিলো? ইসলাম গ্রহণ করার কারণে তাকে চরম দুর্ভাগ্য বহন করতে হলো।

 

শেষ পর্যন্ত তার লাশটাই কেউ গ্রহণ করার নেই। মুসলমান হওয়ার এত ফজিলত? হিন্দুরা বলবে মা-বাবাকে কষ্ট দেয়ার কর্মফল। 

#সুষুপ্ত #পাঠক #Love #Jihad #Conversion #SpecialMarriageAct #Muslim #Hindu
Copyright © 2023 Susupto Pathok aka সুষুপ্ত পাঠক all rights reserved.