মুসলিম শাসকরা হিন্দুদের জোর করে মুসলিম বানিয়েছে? আসলে একজন মানুষের মনের বিরুদ্ধে জোর করে কি মুসলিম বানানো যায়?
বাংলাদেশে সত্যিই জোর করে বাংলাদেশিদের মুসলিম বানানো হয় মুঘল আমলে। পাকিস্তানিরা বাংলাদেশিদের বহু আগে মুসলিম হয়। তাদের মধ্যে আরবীয় প্রভাব বেশি হওয়ার কারন হচ্ছে আরব সেনা মুহাম্মদ বিন কাছিম যুদ্ধ করে রাজা দাহিরের বাহিনীকে পরাজিত করলে পাকিস্তানে যুদ্ধবন্দী হিসেবে আটক হয় উত্তর পশ্চিম ভারতের হিন্দুরা। তখন তাদের কালেমা পড়িয়ে মুসলিম বানানো হয়। সেই সাথে পাশের দেশ ইরান বা পারস্য তখন ইসলামিক হয়ে যাচ্ছিলো। তখন সেই প্রভাব গিয়ে পাকিস্তানে বা উত্তর পশ্চিম ভারতে গিয়ে পড়ে।
এবার আসি বাংলাদেশে
এই দেশটা একেবারে ভারতের ভিতরে ঢুকে আছে। চতুর্দিকে ভারত। সেই ভারতের ভিতরের এক কোনায় পড়ে আছে বাংলাদেশ নামের ব-দ্বীপ। এই দেশ এক সময় ভারতের পূর্ব বাংলা ও আসাম নামে পরিচিত ছিলো।
বাংলায় এই জোর করে মুসলিম করা শুরু হয় কুতুব উদ্দিন আইবেক যখন দিল্লীর মশনদে বসে তখন। তিনি জিজিয়া কর চাপিয়ে দিলে গরীব হিন্দুরা অসহায় হয়ে পড়ে। খেতে পারে না তিন বেলা, আবার জিজিয়া করের আতংক।
মুসলিম শাসক মুসলিম শাসক মুসলিম শাসক মুসলিম শাসক মুসলিম শাসক মুসলিম শাসক মুসলিম শাসক মুসলিম শাসক
সেই সময় বাংলাদেশ ও বিহারে এক তুর্কী দখলদার সেনা ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খলজি বিহার ও বাংলাদেশের বোদ্ধদের উপর এক ভয়াবহ গনহত্যা ও তাদের বোদ্ধ বিহার, বিশ্ববিদ্যালয় সব ধ্বংশ করে দেওয়।
এই পর্যায়ে এসে প্রায় বোদ্ধ শূন্য হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। যা কিছু বোদ্ধ ছিলো অবশিষ্ট তারা পার্বত্য চট্রগ্রামের দিকে ছিলো। সেই সময় আরব বনিকেরা সমুদ্র দিয়ে এসে বোদ্ধ মহিলাদের বিয়ে করে বাঙালি মুসলিম সম্প্রদায়ের গোড়াপত্তন করে।
সেই সাথে পাশের দেশ বার্মাতেও রোহিংগাদের আবির্ভাব হতে থাকে। এখানে উল্লেখ্য যে সমাজে এখনো মুসলমানদে নেড়ে বা নেড়া মুসলমান বলা হয়। কারণ হলো বাংলার বেশির ভাগ মুসললিম বোদ্ধ দর্শণ থেকে মুসলিম হয়েছিল। যেহেতু বোদ্ধ দর্শনে বেশির ভাগ মানুষ মাথা নেড়া করত, সেহেতু কোন বোদ্ধ ব্যক্তি মুসলিম হলে তাকে নেড়ে মুসলমান বলা হত। এখানে আর একটি বিষয় উল্লেখ্য যে ভারতীয় দর্শণে বৌদ্ধ কোন ধর্ম নয়, এমন কি এখানে ইসলাম আসার পূর্বে কোন কনভার্ট জাতীয় শব্দ ছিলো না। ভারতীরা সবাই জাতিতে ছিল হিন্দু, ধর্মে ছিলো সনাতন ( যাকে ধর্ম বলা হচ্ছে)।
হিন্দু দর্শন বলতে বোঝায় প্রাচীন ভারতে উদ্ভূত একগুচ্ছ দর্শনের একটি সমষ্টি। মূল ধারার হিন্দু দর্শনের মধ্যে ছয়টি দার্শনিক শাখা (ষড়দর্শন) বিদ্যমান। এগুলি হল: সাংখ্য, যোগ, ন্যায়, বৈশেষিক, মীমাংসা ও বেদান্ত। প্রাচীন বেদকে জ্ঞানের প্রামাণ্য ও গুরুত্বপূর্ণ উৎস রূপে সাধারণরূপে স্বীকার করা হয় ব’লে এ ষড়দর্শনকে আস্তিক দর্শনও বলা হয়।। প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় ভারতে আরও কয়েকটি দার্শনিক শাখার উদ্ভব ঘটেছিল যেগুলি বেদকে অস্বীকার করে কিছুটা একই ধরনের দার্শনিক ধারণা প্রচার করেছিল। এগুলিকে নাস্তিক দর্শন বলা হয়।ভারতীয় নাস্তিক দর্শনগুলি হল: বৌদ্ধধর্ম, জৈনধর্ম, চার্বাক, আজীবক ও অন্যান্য।
হিন্দু দর্শনের বিভিন্ন পরস্পর-সম্পর্কযুক্ত ধারাগুলি বৈচিত্র্যপূর্ণ। ইতিহাস, ধারণা, একই মূল ধর্মগ্রন্থ, একই তত্ত্ববিদ্যা ও মুক্তিতত্ত্ব ও বিশ্বতত্ত্বের মাধ্যমে এগুলি পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। বৌদ্ধ ও জৈনকে পৃথক দর্শন ও হিন্দু দর্শনের মূলধারা কাছা কাছি হিসেবে গণ্য করা হয়। অন্য দিকে চার্বাক ইত্যাদি কয়েকটি নাস্তিক শাখাকেও হিন্দু দর্শনের অন্তর্গত মনে করা হয়।
হিন্দু দর্শনের প্রত্যেকটি শাখার বিস্তারিত জ্ঞানতত্ত্বীয় সাহিত্য পাওয়া যায়। এগুলিকে ‘প্রমাণ বলা হয়। এছাড়া প্রত্যেকটি শাখার অধিবিদ্যা, মূল্যবিদ্যা ও অন্যান্য বিষয়ের উপর তাত্ত্বিক গ্রন্থও পাওয়া যায়।
স্বাধীনতা দিচ্ছে ‘চরৈবেতি’ – এগিয়ে চলুন, এগতে এগতে শিখুন, শিখতে শিখতে এগন ।
‘আমার এই পথ চলাতেই আনন্দ’।
কবি এভাবেই ‘ইচ্ছা ধর্ম’ প্রকাশ করেছেন ।
বৈদিক হিন্দু হল ‘ধর্ম’, আব্রাহামিয় এবং আম্বেদকরিয় অর্থে ‘রেলিজিওন’ নয় । ‘রেলিজিওনে’ ‘কনভার্ট (convert)’ ‘রি–কনভার্ট (reconvert)’ হয় । ‘ধর্মে’ কখন ‘কনভার্ট (convert)’ ‘রি–কনভার্ট (reconvert)’ হয়না । এই কারণেই ‘সনাতন ধর্ম’ । এখানে, ‘ইচ্ছা’ প্রকাশ করা যায় ও সেই অনুযায়ী চলা যায়, তাই ‘সনাতন ধর্ম’ – কারণ এই ‘ইচ্ছাই’ চিরন্তন বা সনাতন ।
শ্রেণীবিন্যাস সম্পাদনা
মধ্যযুগ থেকে ভারতীয় দর্শনকে আস্তিক ও নাস্তিক – এই দুই ভাগে বিভক্ত করে এসেছে। হিন্দুধর্মের ইতিহাস অধ্যয়ন করলে দেখা যায়, হিন্দু দর্শনের ছয়টি প্রধান শাখা (ষড়দর্শন) খ্রিস্টের জন্মের সমসাময়িক কাল থেকে গুপ্ত সাম্রাজ্য বা খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতাব্দীর মধ্যে বিদ্যমান ছিল। এই দার্শনিক শাখাগুলির মধ্যে বৈচিত্র্য ও প্রত্যেকটি প্রধান শাখার মধ্যে মতবাদের বিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো কোনো গবেষক অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন যে, হিন্দু দর্শনকে আস্তিক ও নাস্তিক – এই দুই ভাগে ভাগ করার প্রবণতাটি যথেষ্ট বা যথাযথ কিনা তা নিয়ে। অন্যদিকে এমন কিছু দার্শনিক উপশাখাও ছিল, যেগুলির মধ্যে আস্তিক ও নাস্তিক উভয় মতবাদের বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান ছিল।
আস্তিক সম্পাদনা
প্রাচীন বেদএ বিশ্বাসী ব’লে নিম্নোক্ত ছয়টি দর্শনের আস্তিক অস্তিত্ব স্বীকৃত ।এগুলির প্রত্যেকটিকে ‘দর্শন’ বলা হয়। প্রত্যেকটি দর্শনেই বেদের প্রামাণ্যতা ও ‘আত্মা’র অস্তিত্ব স্বীকার করা হয়।
আস্তিক দর্শনগুলি হল:
সাংখ্য: নিরীশ্বরবাদী দর্শন। এই দর্শনে পুরুষ ও প্রকৃতির দ্বৈতবাদী তাত্ত্বিক ব্যাখ্যার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
যোগ: এই দর্শনে ধ্যান, সমাধি ও কৈবল্যের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
ন্যায় বা নীতিশাস্ত্র: এই দর্শনে ‘প্রমাণ’ বা জ্ঞানের উৎসের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়। ন্যায়সূত্র এই দর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ।
বৈশেষিক: পরমাণুবাদের একটি অভিজ্ঞতাবাদী শাখা।
মীমাংসা: অর্থোপ্র্যাক্সির একটি কৃচ্ছ্রসাধন-বিরোধী ও মরমিয়াবাদ-বিরোধী শাখা।
বেদান্ত: বেদের সর্বশেষ জ্ঞানভাগ বা ‘জ্ঞানকাণ্ড’। মধ্যযুগের পরবর্তী পর্যায়ে হিন্দুধর্মে বেদান্ত দর্শন প্রাধান্য বিস্তার করে।
নাস্তিক সম্পাদনা
দর্শনের যে সকল শাখা বেদের প্রামাণ্যতা স্বীকার করে না, সেগুলিকে নাস্তিক দর্শন বলা হয়। নাস্তিক দর্শনগুলির মধ্যে চারটি শাখা প্রধান
চার্বাক: একটি বস্তুবাদী শাখা যেটি স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির অস্তিত্বে বিশ্বাস করে।
আজীবক: একটি বস্তুবাদী শাখা যেটি স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির অস্তিত্ব অস্বীকার করে।[২৬][২৭]
বৌদ্ধধর্ম: এই দর্শন আত্মার অস্তিত্ব অস্বীকার করে। বৌদ্ধ দর্শনের ভিত্তি গৌতম বুদ্ধের উপদেশ ও বোধিলাভ। আজ বৌদ্ধ দর্শন কে আলাদা ধর্ম বলা হয় কিন্তু গৌতম বুদ্ধ কখনো তার দর্শন কে আলাদা ধর্ম বলে যায়নি। কারণ ধর্ম একটাই ছিল আর দর্শন বহু ছিল। ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী বৌদ্ধ দর্শন সনাতন ধর্মের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আলাদা কোন ধর্ম নয়। এমন কি ইসলাম এই অঞ্চলে আশার পূর্ব বৌদ্ধ ধর্ম বলে আলাদা কিছু ছিল না।
জৈনধর্ম: এই দর্শন আত্মার অস্তিত্ব স্বীকার করে। এই দর্শনের ভিত্তি তীর্থঙ্কর নামে পরিচিত চব্বিশজন ধর্মগুরুর উপদেশ ও বোধিলাভ। এই তীর্থঙ্করদের প্রথম হলেন ঋষভ এবং সর্বশেষ হলেন মহাবীর।
অন্যান্য শাখা সম্পাদনা
প্রধান আস্তিক্য ও নাস্তিক্যবাদী শাখাগুলির পাশাপাশি কিছু কিছু উপশাখাও রয়েছে যেগুলি বিভিন্ন মতবাদকে যুক্ত করে নিজস্ব দর্শন খাড়া করেছে। মধ্যযুগীয় পণ্ডিত মধ্ব জৈনধর্ম ও বৌদ্ধধর্মের সঙ্গে এই জাতীয় নিম্নোক্ত উপশাখাগুলিকে হিন্দু দর্শনের উপশাখা বলে বর্ণনা করেছেন
পাশুপত শৈবধর্ম: এই দর্শনের প্রবক্তা নকুলীশ।
শৈবসিদ্ধান্ত: ঈশ্বরবাদী সাংখ্য শাখা।
প্রত্যভিজ্ঞ: কাশ্মীর শৈবধর্মের একটি প্রামাণ্য শাখা।
রসেশ্বর: একটি শৈব শাখা, যেটি মনে করে পারদ ব্যবহার করে অমরত্ব অর্জন করা যায়।
রামানুজ শাখা
পূর্ণপ্রাজ্ঞ (মধ্বাচার্য) শাখা
পাণিনীয়
উপরিউক্ত উপশাখাগুলি ন্যায়ের বাস্তববাদ, বৈশেষিকের প্রকৃতিবাদ, অদ্বৈত বেদান্তের অদ্বৈতবাদ ও মোক্ষলাভের জন্য আত্মজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা, যোগের আত্ম-সংযম এবং ঈশ্বরবাদী ধারণাগুলির নানা উপাদান গ্রহণ করে নিজস্ব দার্শনিক মতবাদ গড়ে তোলে। কোনো কোনো উপশাখায় বৌদ্ধধর্মের অনুরূপ তান্ত্রিক প্রভাবও দেখা যায়।
ঐতিহাসিক প্রমাণে দেখা যাচ্ছে, সংখ্যাগরিষ্ঠ বৈদিক হিন্দু কোনদিন নিজের ধর্মের কোন নাম দেয়নি (‘ধর্ম’ তো ‘রেলিজিওনই’ নয়, আবার ‘রেলিজিয়াস আইডেন্টিটি’ কোথা থেকে আসবে?)। সংখ্যাগরিষ্ঠ বৈদিক হিন্দু কোনদিন মাথাই ঘামায়নি ‘আমি বৈদিক হিন্দু’, তার কারণ ‘রেলিজিওন’ বলে কোন কিছু তার সংস্কৃতিতে ছিল না । লোক সংস্কৃতিতে যে মানুষের সুখ দুঃখ প্রকাশ পায়, তা সার্বজনীন – তাই ‘সনাতন’।
কোন গ্রন্থে কোন ঐতিহাসিক টেক্সটে একটা মাত্রও প্রমাণ নেই (ইংরেজরা আসার আগে), কেউ নিজের পরিচয় দিয়েছে ‘আমি বৈদিক হিন্দু’। এই নামকরণ সব সময়ে ‘অন্যেরা’ করেছে । ‘সনাতন ধর্মে’ কোন আব্রাহামিয় মডেলের আত্মপরিচয় হয়না । সনাতন ধর্মের ভাবটা এই, ‘আমি হলাম আমি’, ‘আমার ইচ্ছা আমি আমি, তাই আমি’ – তার আবার ‘লেবেল’ কি দরকার?
‘আমি হলাম আমি’, ‘আমার ইচ্ছা’ – এটাই সনাতন ধর্মের মূল ভাব । বৈদিক হিন্দু থেকে অন্য ‘রেলিজিওনে’ ‘কনভার্ট (convert)’ আবার হিন্দুতে ‘রি–কনভার্ট (reconvert)’ যে ইসলাম আসার আগে হয়নি তা নয় । মূলত ভারতীয় দর্শন গুলো হলো আদি সনাতনী ইচ্ছা ধর্ম। এই বিষয় আর এখানে দেখুন…
কখন বাংলাদেশের মানুষ মুসলিম হয়?
ব্যাপক হারে বৌদ্ধ, সনাতন থেকে মুসলিম হওয়া বাংলাদেশে শুরু হয় মুঘল আমলে। মুঘলদের পলিসিই ছিলো জিজিয়া কর চাপিয়ে দিয়ে জোর করে মুসলিম করা। মূলত ইসলাম আসার পূর্বে এখানে মানুষ রেলিজিওন ধারণই ছিলনা। তবে যেহেতু হিন্দুদের ( বৌদ্ধ সহ) ধর্ম বলতে ধারণ করা বুঝত তাই প্রথম দিকে তারা ইসলামের উদ্দেশ্য বুঝতে পারেনি। এর ফলে হাজার হাজার মানুষ ইসলামে গিয়েছে সেটা নাজেনেই। কেন নাজেনেই বলছিল সেটা পরর্বতী আলোচনা পরিষ্কার হবে।
এই কাজটি হিন্দুরাই সহজ করে দেয় জাত প্রথার মাধ্যমে। বাংলাদেশের হিন্দুরা অনেকেই ছিলো অনেক গরীব আবার জমিদার শ্রেনীও ।
গরীব নিচু জাতের হিন্দুদের মনে জমিদার শ্রেনীর হিন্দুদের প্রতি বিদ্বেষ থাকা অবস্থায় মুঘলেরা জিজিয়া করের ভয় দেখিয়ে এই হিন্দুদের মুসলিম করে। তখন বাংলাদেশি নতুন মুসলিমরা কিছুই জানে না ইসলাম সম্পর্কে। তার শুধু জিজিয়া কর থেকে নিজেকে মুক্তির জন্যই মুসলিম হয়েছে।
শুধু জানে স মুসলিম হলে জিজিয়া দেয়া লাগবে না। হিন্দু থাকলে জিজিয়ার পাশাপাশি হিন্দু জমিদারদের কথা শুনতে হবে। তাই তখন বাধ্য হয়ে বাংলাদেশি মুসলিমরা হিন্দু থেকে মুসলিম হয়ে যায়।
নিজের ইচ্ছাতে কেনো হবে? ইসলাম তো ভারতে বিদেশি ধর্ম হিসেবে আসে। কেউ কি নিজের বাপকে ছেড়ে আরেকজন অপরিচিতকে কেনো বাপ বলবে?
বেশির ভাগ হিন্দু মুসলিম হলেও আরবী কিছুই জানতো না বাংলার সদ্য মুসলমান, অর্থৎ ১০০% মানুস ইসলাম ধর্ম গ্রন্থ বা ইসলাম না জেনেই ইসলাম গ্রহণ করেছিল। তখন হিন্দুরা অনেক শিক্ষিত হওয়াতে কোরআন মুসলিমদের জন্য বাংলায় অনুবাদ করেন এক হিন্দু ভাষাবিদ গিরিশচন্দ্র সেন। ১৮৮৬ সালে গিরিশ চন্দ্র সেনের কোনরা অনুবাদ করার আগে কোন হিন্দু কোরন পড়ে ইসলাম গ্রহণ করার কোন সুযোগ ছিল না। এমন কি তার পরেও ৯৮% হিন্দু ইসলাম গ্রহণ করেছে কোরান না পড়েই।
তবে যে স্থান থেকে অ-বৈদিক শাসক দীর্ঘদিন ধরে থেকে গেছে সেখানে বহু মানুষ তার নিজ সংস্কৃতিতে আর ফিরেতে পারিনি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম পরাধীনতা এই না ফিরার কারণ। আমারা যদি আফগানিস্তানের ইতিহাস দেখি তাহলে আমরা দেখতে পাব ৭০০ শতকে প্রথম দিকে ইসলাম যখন আফগানিস্তান দখল করে তখন বেশির ভাগ বৈদিক সনাতনী ইসলামা গ্রহন করতে বাধ্য হয়।
কিন্তু ৯০০ শতকের দিকে যখন ইসলামী শাসন ব্যবস্থা আফগানিস্তানে থেকে কমতে থাকে সেখানে আবার পুনরাই বৈদিক ধর্ম প্রাণ পাই অর্থৎ ইসলাম ত্যাগ করতে থাকে মানুষ। এই প্রাণ বেশি দিন থাকেনি মাত্র ২০০ বছর অর্থৎ ১১০০ সালে দিকে পুনরাই ইসলাম আফগানিস্তানে আক্রমন করলে সেখানে আবার ইসলামের কনর্ভাট চলতে থাকে।
কিন্তু এখানে চরম সত্য আফগানিস্তান আর কখনোই বৈদিক ধর্মে ফিরতে পারেনি, কারণ সেখান থেকে আর কখনোই ইসলামী শাসন শেষে হয়নি। যার কারনে প্রজন্মের পর প্রজন্ম মূল শিখড় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। বর্তমান প্রজন্ম তাদের আপন সংস্কৃতি ভূলে গিয়েছে।
বাংলাদেশ এমন এক দেশ যে দেশের পতাকার প্রধান ডিজাইনার থেকে শুরু করে, জাতীয় সংগীত রচয়িতা, প্রথম ভাষা সংগ্রামী, এমনকি যে কোরআন বাংলায় বুঝে বুঝে পড়ে সেটাও হিন্দুদের অবদানের কারনে বাংলাদেশি মুসলিমরা পাঠ করতে পারছে।
তাহলে বুঝুন অবস্থা। বাংলাদেশিরা কোন পরিস্থিতিতে মুসলিম হয়েছিলো এবং কোন ধরনের মুসলিম বাংলাদেশিরা।
এসব ইতিহাসের অংশ।।অস্বীকার করেও লাভ নেই। আমাদের পূর্ব পুরুষেরা প্রায় সবাই হিন্দু ছিলো এবং তারা মুঘলদের মাধ্যমে জোর করেই মুসলিম হয়েছিলো। মানলে মানুন, না মানলে না মানুন।