মরু-দর্শন

মরু দর্শন : বিড়ালের হাইকোর্ট দর্শন-রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়

মরু দর্শন : বিড়ালের হাইকোর্ট দর্শন। সত্যকে রেখে ঢেকে না পেশ করলেই আপনি ফেসবুকে কোনো না কোনো ট্যাগ খাবেন, বিশেষ করে আপনার লেখাপত্তরগুলো যদি ধর্ম এবং ধর্ম মিশ্রিত রাজনীতি নিয়ে হয় । এখন ধর্ম নিয়ে যদি লেখালিখি করেন, তাহলে ধর্মের অসারতা এই মানব সমাজে বর্তমানের সাপেক্ষে উঠে আসবেই,

কিন্তু এই অসার ধর্ম মতের কোনো একটার অনুসারীরা যে বর্তমান পৃথিবীর জন্য একটা মূর্তিমান থ্রেট, সেটা আপনি যদি চাঁচাছোলা লেখেন, তখনই বিপদ ! হ্যা, ঠিক ধরেছেন, আমি আরব্য মরু দর্শনের কথা বলছি । একটা পোস্ট দিয়েছিলাম: মানবজাতির জন্য কোনটা বড় থ্রেট- ক্যান্সার না আরব্য মরু দর্শন। সেই লেখাটা পরে অনেকেই কমেন্ট করলো, সব ধর্মই থ্রেট , দু তিনজন আবার আমার দিকে আঙ্গুল তুলে দিলো যে আমি নাকি কেবল ইসলামকেই খোঁচাই ।
বুঝলেন না ? আরে বাবা সেই পুরোনো খেল, ‘হিন্দু নাস্তিক’, ‘চাড্ডি’ ট্যাগ জুড়ে দেওয়া আর কি! এতে করে অবশ্য এখন আর অবাক হই না, এই ট্যাগ আমাকে ফেসবুকে মুক্তমনার মুখোশ পরে থাকা ছুপা, মডারেটরা অনেকদিন আগেই দিয়েছে ।
ট্যাগ নাহয় জুড়ে দিলেন কিন্তু সত্যটা তাতে বদলাবে কি? বাঙালি হিন্দুদের ব্রাহ্মণরা এককালে সমাজের উপর ছড়ি ঘুরিয়েছিল, নানা চুলকানি ছিল তাদের । এই ব্রাহ্মণরা এখন বৃহত্তর বাঙালি তথা হিন্দু সমাজে পুরো সাইজ হয়ে গেছে। হাতেগোনা কিছু পকেটে এখনো বাঁদরামি চালালেও, বৃহৎ স্কেলে এদের সাইজ করে দেওয়া হয়েছে, হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান নির্বিশেষে সকলেই সাইজ করেছে।
আচ্ছা, পৃথিবীর বিভিন্ন মিডিয়াগুলোতে কেন কোনো খ্রিস্টান সন্ত্রাসবাদীর বা সন্ত্রাসবাদীর দলের খবর উঠে আসেনা মন্দির, মসজিদ, প্যাগোডা ধ্বংস করার জন্য, গাড়ি চালিয়ে মানুষ মারার জন্য বা টিউব রেখে বোমা ফাঁটিয়ে সন্ত্রাসী ক্রিয়াকলাপের জন্য? কেনই বা এক মায়ানমারের পুরোহিত বিনা বৌদ্ধদের ধর্মীয় সন্ত্রাসের খবর পাইনা? (যদিও এই সন্ত্রাস কতটা ধর্মীয় না রোহিঙ্গাদের সময়কাল ধরে চলে আসা ইত্রামীর প্রত্যুত্তর আমার সন্দেহ আছে) ।
কেন ইহুদী কোনো গ্রূপ ‘হামাস’ এর মত পৃথিবীর বুকে সন্ত্রাসের মানচিত্রে জায়গা করে নিতে পারেনি ? এই যে ভারতের প্রতিবেশী বাংলাদেশ, পাকিস্তানের ঈমানদার মুসলমান ভারতে, বর্তমানে হিন্দুত্ববাদের উত্থান নিয়ে থরহরি কম্পমান, তা বলি বজরং দলের মত হিন্দু সন্ত্রাসীরা দলবেঁধে মুসলমান, খ্রিস্টান হত্যা করছে, মসজিদ-চার্চ বোমা মেরে উড়িয়ে দিচ্ছে, এরকম খবর দেখতে পাইনা কেন ?
না না, ওই একই গোধরা আওড়াবেন না আর সাথে গোধরার ব্যাকড্রপটা একটু ভালো করে জেনে নেবেন । তাহলে সকল অসার ধর্ম পৃথিবীর বর্তমান থ্রেট কেন হবে ? তারা পরিবর্তিত হতে হতে , নিশ্চিত বিলুপ্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছে কিন্তু আসমানি কিতাবের অনুসারীদের গল্পটা ভিন্ন ।
মরু প্রাণ, আসমানি কিতাব বলেছে মরু দর্শন অপরিবর্তিত, অর্থাৎ মানবঘাতক আয়াতগুলো তাদের জায়গাতে গেঁড়ে বসে আছে আর সেগুলো ফলো করে এই তথাকথিত শান্তির ধর্মের অনুসারীরা সমগ্র পৃথিবীর জন্য একটা মূর্তিমান আতংক হয়ে দাঁড়িয়েছে । তাহলে ধর্ম এবং ধর্মীয় রাজনীতিকে আঘাত করতে হলে সর্ব প্রথমে মরু দর্শনকে আঘাত করবোনা তো কাকে করবো ?
মরু দর্শন পুরোপুরি ধর্মের মোড়কে সন্ত্রাসী রাজনীতি, স্বীকার করুন বা নাই করুন, সত্যটা পাল্টাবে না । একটু মিলিয়ে নিন কেন বলছি :
➤ দক্ষিণ আফ্রিকাকে বর্ণবৈষম্যের দায়ে একসময় সারা পৃথিবী একঘরে করে রেখেছিল, মধ্যপ্রাচ্যের আরবশাহীর প্রায় সব দেশেই ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্মচর্চা নিষিদ্ধ। ধৰ্মবৈষম্যের জন্য কেন ইসলামের পীঠস্থানকে নিষিদ্ধ ঘােষণা করতে সারা পৃথিবীর তথাকথিত গণতন্ত্রী সেকুলার, বামাতিরা নীরব ?
➤ ইসলামি অভ্যুদয়ের দাপটে পশ্চিম ইউরােপে যেখানে সংখ্যার দিক দিয়ে মুসলমানরা বেশ কম সেখানের সমাজও ইসলাম আতঙ্কে ভুগছে। লন্ডনের ভূগর্ভস্থ রেল, স্পেনের রেল, হল্যান্ডের চিত্রনির্মাতা থিও ভ্যান গগ বা লেখিকা হিরসি আলি সবাই আক্রান্ত।
➤ ৪০% মানুষ অমুসলমান হওয়া সত্ত্বেও মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। শুধু তাই নয় মালয়েশিয়ার সংবিধানের ১৬০ ধারা অনুযায়ী সব মালয় জনগােষ্ঠির লােককে মুসলমান হতেই হবে এবং তাদের বিচার ব্যবস্থা চলবে শরিয়তি আইন মেনে। অন্য ধর্মগুলি কোন মুসলমানকে ধর্মান্তরিত করতে পারবে না কিন্তু মুসলমানরা অন্যান্য ধর্মালম্বীদের কনভার্ট করতে পারবে। ৯০% মুসলিম ইন্দোনেশিয়া অনেকটা গণতন্ত্রী তবে বালি দ্বীপে থাকা মাত্র ৩% একেবারে নীরব হিন্দুদের মন্দিরের উপর ২০০৫ ও ২০০৬ সালে আক্রমণ হয়েছে কয়েকবার।
পৃথিবীর সেকুলাঙ্গাররা, ‘জেসাস ব্রাইস্ট সুপারস্টার’ নাটকের প্রশংসায় মুখর, নােবেল বিজয়ী হাসে সারামাগাের লেখা ‘গসপেল এর্কডিং টু জেসাস খ্রাইস্ট’ এর মত উপন্যাসের প্রশংসায় পঞ্চমুখ, কিন্তু তারা মহম্মদ নিয়ে বিন্দুমাত্র ঠাট্টা-তামাসার বিরােধী, সেখানে মরু দর্শনর সমালােচনা করে চিত্রনির্মাতা খুন হলেও তারা প্রতিবাদে ফেঁটে পরেনা !
ছুপা, সেকুলাঙ্গার মডারেটগণ, এইসব ভণ্ডামি আমার দ্বারা হবেনা । যা পড়ি, যা দেখি, যা বুঝি চাঁচাছোলা তাই লিখি । অতঃএব, আমার লেখার সাবজেক্ট, ধর্ম এবং ধর্ম মিশ্রিত রাজনীতি নিয়ে মরু দর্শন বর্তমান পৃথিবীর প্রধান মূর্তিমান থ্রেট হিসেবে ঘুরে ফিরে প্রথমেই আসবে । আপনারা, আমাকে ট্যাগ দিতে থাকুন আর আমি সত্যটা অকপটে উন্মোচন করতে থাকি…………
লেখক- রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়,ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষক।-কলকাতা