মন্দির-মসজিদ

মন্দির-মসজিদ সহাবস্থান যতগুলি ধর্মীয় সহিষ্ণুতার বিজ্ঞাপন দেখেন তার সবগুলিই মন্দির আগে প্রতিষ্ঠা হয়েছে তারপর মসজিদ।

মন্দির-মসজিদ সহাবস্থান যতগুলি ধর্মীয় সহিষ্ণুতার বিজ্ঞাপন দেখেন তার সবগুলিই মন্দির আগে প্রতিষ্ঠা হয়েছে তারপর মসজিদ। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে একজন মুসলিম যুবক চন্দ্রনাথ ধামে ঘুরতে গিয়ে আজান দিয়ে সেই আযানের দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে লিখেছেন চন্দ্রনাথ ধামে একটি মসজিদের অভাব অনুভূতি করছেন তিনি। পাশাপাশি আমরা যদি লক্ষ্য করলে দেখব,

কিছুদিন আগে খুলনা রুপসা উপজেলা একটি মসজিদের পাশ দিয়ে কিছু হিন্দু লোকজন ধর্মীয় রীতি মেনে কীর্তন করতে করতে একটা মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কীর্তন করতে করতে শ্মশানে মৃতদেহ নেয়ার সময় একটা মসজিদের পাশদিয়ে দলটি যখন সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল ঠিক সেই সময় কিছু মুসলিম তাদের উপরে হামলা করে বসে।

যার কারণে ওই অঞ্চলে হিন্দু এবং মুসলিমের মধ্যে উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি হয় এর ফলে ওই অঞ্চলে বেশ কিছু হিন্দু মন্দির, হিন্দু বাড়ি এবং দোকানপাট লুটপাট করা হয়। বাংলাদেশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের ন্যূনতম ধর্মচর্চা করার জন্য যে পরিবেশটা দরকার সেটা এখন দিন দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে।

একজন মাদ্রাসার ছাত্র চন্দ্রনাথ ধামে আজান দিয়েছে, অন্যদিকে একদল লোক একটা হিন্দু মৃতদেহ সৎকারের জন্য শ্মশানে নিয়ে যাচ্ছিল সেই মুহূর্তে মসজিদের পাশ দিয়ে যাওয়ার কারণে মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্ম অনুভূতিতে আঘাত লাগে। যার কারণে অতর্কিতভাবে মরদেহ বহনকারী হিন্দুদের উপর মুসলিম সম্প্রদায় আঘাত করে বসে। শুধু আঘাত করেই মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরা শান্ত থাকেননি তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট চালিয়ে ছিল।

চন্দনাথ-ধামে-আজান
চন্দনাথ-ধামে-আজান

মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরা যে কোন অমুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্থান এর পাশে বা ওই অঞ্চলে তাদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য সর্বদাই আগ্রাসী থাকে। এটা তাদের যেন ধর্মীয় অধিকার। অন্যদিকে সংখ্যালঘু কোন সম্প্রদায় যদি ভুল করেও বা স্বাভাবিকভাবে ওই জাতীয় কোন কাজ করে থাকে তাহলে তার ফলাফলটা আমরা এর আগে বহুবার দেখেছিঃ।

হিন্দুদের পুজায় যাওয়া যাবে না। তাদের দেবদেবীদের দেখতে যাওয়া যাবে না। দুর্গাপুজায় হিন্দুদের নিমন্ত্রণে পুজা মন্ডবে যাওয়া যাবে না -এরকম ওয়াজ নসিহতে যখন কান পাতা দায় তখন চন্দ্রনাথ পাহাড়ে ভ্রমণ করতে গিয়ে নামাজ কাযা হয়ে যায় তাই সেখানে একটা মসজিদ বানানোর দাবী করছে মুমিন বাহিনী!

চন্দ্রনাথ হচ্ছে হিন্দুদের একটা তীর্থ। সেই তীর্থস্থানে উঠে মাদ্রাসার ছাত্ররা আজান দেয় আর মসজিদ না থাকার জন্য মনোকষ্টের কথা জানায়। কয়েক বছর ধরে পরিকল্পিত এইসব আজান ও মসজিদের বায়নার ঘটনা ঘটলেও এবারই এরকম ফেইসবুক পোস্টে কারণে দুজন মাদ্রাসা ছাত্রকে গ্রেফতারের ঘটনা ঘটল।

এটি ইসলামী কালচার। যেখানে বিধর্মীদের মন্দির গির্জা প্যাগডা থাকবে সেখানে মসজিদ বানিয়ে আল্লাতালার নাম যশ ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে। ঔরাঙ্গজেব কাশিতে মসজিদ বানিয়ে ছিলেন কেন?

কাশিতে মুসলমানদের কি কাজ? তারা বিন্দাবন তীর্থ করতে এসে নামাজ কাযা করে ফেলবে? তবু মসজিদ করা হয়েছে এ জন্য যে কাফেররা ইসলামের আহ্বান নিজেদের চোখ কান দিয়ে শুনতে দেখতে পায়।

গোটা উপমহাদেশের আপনি যতগুলো মন্দির-মসজিদ সহাবস্থান দেখতে পাবেন যেগুলোকে ধর্মীয় সহিষ্ণুতার চরম বিজ্ঞাপন হিসেবে দেখানো হয় তার সবগুলিই মন্দির আগে প্রতিষ্ঠা হয়েছে তারপর মসজিদ।

একটি ঘটনাও দেখাতে পারবেন না মসজিদের দেয়াল ঘেঁষে মন্দির প্রতিষ্ঠা করে সহিষ্ণুতার ঢেকুর তোলা হয়েছে! আপনি দেখান তো আজমির শরীফের দেয়াল ঘেঁষে মন্দির করা হয়েছিল? একটি পীরের দরগার সঙ্গেই মন্দির করা হয়েছে? দেখাতে পারবেন না। কিন্তু কাশি বেনারস যেটা হিন্দুদের মক্কা সেখানে মসজিদ আছে!

জেরুযালেম যেটা ইহুদীদের মক্কা সেখানে মসজিদ বানিয়েছে মুসলমানরা। শুক্রবার ইহুদী তীর্থভূমিতে জুম্মার নামাজ পড়া হয় হাজার হাজার মানুষ মিলে। এটি ভাবা যায় মুসলিমদের কোন তীর্থের পেটের মধ্যে হিন্দু খ্রিস্টান বৌদ্ধ ইহুদীরা হাজার হাজার জন মিলে উপাসনা করছে?

ওহে ধর্মীয় সহিষ্ণুতার লিবারালরা, খালি কাশির মসজিদ মন্দিরের সহিষ্ণুতার এড দেখালে হবে? চন্দ্রনাথ পাহাড়ে পায়ে পা দিয়ে সাম্প্রদায়িক অশান্তির দীর্ঘ পরিকল্পনাকারী দেওবন্ধপন্থি কওমি মাদ্রাসার বিরুদ্ধে কথা নেই কেন?

মক্কা মদিনা অমুসলিমদের প্রবেশ নিষেধ
মক্কা মদিনাতে অমুসলিমদের প্রবেশ নিষেধ

তারা সেখানে মসজিদ বানিয়ে মাইকে আজান দেয়ার ব্যবস্থা করবেই। বান্দরবানে তারা মাইক দিয়ে আজানের ব্যবস্থা করেছে। ওহে বাংলাদেশী ‘পোগতিশীল’ লোকজন, আপনাদের এইসব সাম্প্রদায়িক এক্টিভিটির বিরুদ্ধে একটি কথাও নেই কেন?

কাবার পাশে মন্দির গির্জা? মক্কায় ঢুকতে দিলে তো? জানেন তো তাদের মতো সহনশীল জাতী পৃথিবীতে কম আছে

সারা পৃথিবীতে তারা ইসলামি বিশ্বাসের মর্যাদা ক্ষুন্ন হচ্ছে কিনা সেই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া সহ বাস্তবেও তারা তৎপর থাকে। অথচ মন্দির চত্বরে আজান দেওয়াটাকে তারা বলতে চাইছে আজান দিলে সমস্যা কি! এ কেমন দ্বিচারিতা!

আর পড়ুন…..