“প্রাচীন ঋষি এবং আপ্ত্য জ্ঞান” মানুষ শেখে তিন ভাবে— দেখে,শুনে এবং ঠেকে- visual, hearing and direct experience । এছাড়া আরো এক ভাবে শিক্ষা লাভ করা যায়। তাকে ঈংরাজীতে বলে ‘Intuitive knowledge”। এর বাংলা প্রতিশব্দ টা আমার জানা নেই,বলতে পারেন “আপ্ত্য জ্ঞান”।
যদি এই বিশ্ব এক নির্দিষ্ট নিয়মে চলে এবং সেই নিয়মের বিন্দুমাত্র ব্যাত্যয় ঘটলে মহা প্রলয় হয়, তাহলে সৃষ্টি কর্তা বা ঈশ্বর বলে কাউকে না মানলেও সেই নিয়মের একজন নিয়ামক বা এক বিশ্ব চৈতন্য ( Universal consciousness ) কে মানতেই হবে। গা জুয়ারী করলে অবশ্য অন্য কথা।
প্রাচীন কালে স্বরস্বতী নদীর পাড়ে এবং তার পরে সিন্ধু, গংগা এবং যমুনা নদীর উৎস স্থল থেকে শুরু করে নিম্ন দিকের পাড়ে, জঙ্গলা কীর্ন, নির্জন জায়গায় বহু সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীরা (অনেকে বলেন ভাওতা বাজ,ধান্দা বাজ ব্রাহ্মন) চোখ বুজে ভ্রুমধ্যে মন সংযোগ করে চুপচাপঋষি meaning in English বসে থাকতেন ঘন্টার পর ঘন্টা।
এই প্রক্রিয়াকে বলে ধ্যান করা ( অনেকে বলেন মানুষ ঠকানোর পদ্ধতি আবিষ্কার করা) । তারা এই ধ্যান মার্গে জানার চেষ্টা করতেন তাদের চারিদিকে পরিদৃশ্যমান এই সৃষ্টিকে এবং এই সৃষ্টি কি করে হলো বা কে করলেন (আধুনিক বৈজ্ঞানিক ভাষায় রিসার্চ করা)।
তারা চেষ্টা করতেন এই বিশ্ব চৈতন্য (Universal consciousness) এর সঙ্গে নিজেদের অভ্যন্তরস্ত চৈতন্য সত্তার ( self conciousness) এক মিলন ঘটাতে। বিশ্ব চৈতন্যের সংগে নিজের চৈতন্যের এই মিলন কে বলে “যোগ” আর সেই প্রচেষ্টাকে বলে “যোগ সাধনা” (বলতে পারেন রিসার্চ করা)।
এই যোগ এবং যোগ সাধনা কাকে বলে এবং কি করে করতে হয় তা জানতে হলে পতঞ্জলি ঋষির লেখা “যোগ শাস্ত্র” টা পড়বেন (৪০০০ হাজার বছর আগে লেখা— স্বামী বিবেকাননন্দ এর বাংলা অনুবাদ করেছেন এবং কলকাতায় পাওয়া যায়।
আর Intuitive knowledge সম্বন্ধে জানতে হলে পড়বেন আমাদের সর্বজন শ্রদ্ধেয় সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনের লেখা ‘Idealistiv view of life’ নামে বই টা, যেটা হলো হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে তার দেওয়া হিন্দু দর্শন”এর ওপরে বক্তৃতা মালা)।
যাই হোক, সেই ঋষিরা (আপনারা তাদের উন্মাদ বলুন, ধান্দাবাজ বলুন, মানুষ ঠকানোর হোতা বলুন তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমার কাছে তারা নমষ্য এবং জ্ঞানপুরুষ) তাদের সাধনা লব্ধ জ্ঞান দিয়ে (Intuitive knowledge) এই সৃষ্টি এবং সৃষ্টিতত্ব জেনেছিলেন।
তারা মেনে ছিলেন এর পিছনে এক “বরেন্য ভর্গ” (জ্যোতির্ময়) পুরুষ আছেন (গায়ত্রী মন্ত্র), এমনি এমনিই হাঠাৎ করে দুটো তারার মধ্যে ধাক্ষা লেগে এই বিশ্ব সৃষ্টি হয়নি (Big Bang Theory) , কোনো এক জ্ঞানী এই বিশ্ব সৃষ্টি করেছেন এবং সুক্ষ্ম ভাবে সেই সৃষ্টির মধ্যেই নিজেকে বিরাজিত করে রেখেছেন।
সেই বরেন্য ভর্গ পুরুষ ই তার তৈরী করা নিয়মের মধ্যে চলেন, সবাইকে চলতে বলেন (তাকে আপনি Law of Physics, Law of nature —ইত্যাদি যাই বলুন না কেনো এবং সেই বিদ্যার শাস্ত্র কে পদার্থ বিদ্যা, কোয়ান্টাম ফিজিক্স যাই বলুন না কেনো) ।
এই নিয়মের বাইরে সেই যান তার ধংস অনিবার্য—সৃষ্টিতে নিয়মের ব্যাত্যয় ঘটলে সৃষ্টি ধংস হবে, নিজের জীবনে নিয়মের ব্যাত্যয় ঘটলে নিজের ধংস হবে-এটাই তো এক অমোঘ নিয়ম।
সেই নিয়মের সন্ধানে আধুনিক বিজ্ঞানীরা দিনরাত প্রনিপাত করছে তাদের রিসার্চ সেন্টারে বসে এবং নতুন নতুন তত্ত্ব বের করে পি এইচ ডি পাচ্ছেন মানুষের তৈরী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
কিন্তু, বর্তমান যুগের শ্রেষ্ট বৈজ্ঞানিক আইনষ্টাইন তার টেবিলে বসে আবিষ্কার করতে পারেন নি , E=mc2 (how to put 2 on top of c ????— I do not know the technique, please forgive me) , তার সেই উপলব্ধি হয়েছিলো লেকের জলে বেহালা বাজাতে বাজাতে। তারো আগে নিউটন জ্ঞান পেয়েছিলেন পার্কে বসে।
আর তারো আগে আর্কিমিডীস সেই জ্ঞান পেয়েছিলেন বাথ টবে স্নান করতে গিয়ে ,আর ন্যাংটো অবস্থায় সারা রোমের রাস্তায় দৌড়ে বেড়িয়েছিলেন “ইউরেকা ইউরেকা (পেয়েছি পেয়েছি) বলে চীৎকার করতে করতে।
সত্য দ্রষ্টা ঋষিরা তাদের জ্ঞান লব্ধ্য উপলব্ধি থেকে তাই বললেন, “হে বিশ্ব -অমৃতের পুত্র, আমি তাকে দেখেছি, জেনেছি, তার কথা শুনেছি—- “শৃন্যন্তু বিশ্বে অমৃতষ্য পুত্রা”—তোমরাও তাকে জানো, তাকে দেখো, তাহলেই তোমাদের তার প্রতি ভক্তি হবে,আর ভক্তি হলেই তোমার মুক্তি হবে এই সংসার শিকল থেকে, নইলে হবে না, সংসার বন্ধনে পুড়ে খাক হয়ে যাবে—– “নান্য পন্থা বিদ্যতে হয় নায়”।
*****বিশেষ দ্রষ্টব্য——তা এই সত্য দ্রষ্টা ঋষিরা যদি পাগোল হন, ধান্দা বাজ ব্রাহ্মন হন তাহলে আইনষ্টাইন পাগোল, ধান্দাবাজ, নিউটন, আর্কিমিডিস সবাই পাগোল আর ধান্দা বাজ। আর হ্যা, কার্ল মার্ক্স ,এঙ্গেলস কোন ল্যাবে বসে তাদের ‘ডাস ক্যাপিটাল’ লিখে ছিলেন??? টেবিলে বসে ভাবতে ভাবতে,তাই না???? রবীন্দ্র নাথ, কার্লাইল, বারট্রান্ড রাসেল, বার্নাড শ , ইয়ং,সিনহোজা, ইত্যাদি মনীষীরা কোন ল্যাবে বসে তাদের চিন্তা ভাবনার ফসল মানুষকে দিয়ে গেছেন????????
(Ancient Saints and Intuitive knowledge)
ডাঃ মৃনাল কান্তি দেবনাথ
আর পড়ুন…..
- পাকিস্তানে আবারও হিন্দু মন্দির ভাংচুর, লাখ টাকা লুটপাট।
- হিন্দুধর্মের প্রত্যাবর্তন: ইসলাম ছেড়ে হিন্দুধর্ম গ্রহণ করলেন কেরালার অভিনেত্রী সাবিনা আব্দুল লতিফ।
- ক্রিকেট জিহাদ: ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে বিশ্বকাপ ফাইনাল হলে কী হবে?
- ক্রিকেট যখন ধর্মের হাতিয়ার: ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের “জয়” ইসলামের বিজয় হলে পরাজয়টা কি??
- ঔরঙ্গজেবের নামে ওসমানাবাদে সহিংসতা! এই ধর্মান্ধ শাসকের কত অন্ধ অনুসারী ?