আত্মনির্ভর ভারত : সময় এসেছে ভারত বলবে গোটা বিশ্ব শুনবে। একটা সময় ছিল বিশ্বমঞ্চে বিশ্বনেতাদের বড় কোন বৈঠকে ভারতকে ডাকা হতো না, ভারতকে কোন দায়িত্ব দেয়া হতো না, ভারতকে কোন জোটে নেয়া হতো না, ভারতকে তৃতীয় বিশ্বের একটি নগন্য পশ্চাৎপদ দেশ হিসাবে গন্য করা হতো।
কিন্তু এখন আর সেদিন নেই। নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারত এখন চোখে চোখ রেখে কথা বলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। নরেন্দ্র মোদী পরপর দুই বছর সারা পৃথিবীতে জনপ্রিয় রাষ্ট্রপ্রধান হিসাবে শিরোপা অক্ষুণ্ণ রেখেছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সারা বিশ্ব তাকিয়ে আছে নরেন্দ্র মোদীর দিকে।
এত প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও রাশিয়া নরেন্দ্র মোদীকেই একজন দেশপ্রেমিক যোগ্য নেতা হিসাবে স্বীকার করে নিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ এমন একটি নাম যা উন্নয়ন সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের সমার্থক হয়ে উঠেছে। এই নামটি দেশবাসীকে যেমন নিরাপত্তা দিয়েছে একই ভাবে শত্রুদের হৃদয়ে কাপুনি ধরাতেও সক্ষম হয়েছে। এবং এই নিরলস পরিশ্রমের একটাই উদ্দেশ্য হিন্দুত্বের বিকাশ ঘটিয়ে ভারতে কি করে উন্নয়নের ধারা বজায় রেখে দেশকে আরও সম্বৃদ্ধশালী করা যায়।
২০১৪ সালে কংগ্রেসের প্রতিরক্ষামন্ত্রী একে এন্টনী বলেছিলেন,ভারত একটি গরিব দেশ,যুদ্ধবিমান রাফায়েল তো দূরের কথা একটি ছোট জেট ও কিনতে পরবেনা। আর এখন ভারতের তৈরি তেজস যুদ্ধ বিমান কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে আমেরিকার,অস্ট্রেলিয়া,আর্জেন্টিনা,মিশর,ইন্দোনেশিয়া,ফিলিপিন্সএবং মালয়েশিয়া।
প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারতের আত্মনির্ভরশীল হওয়ার পথে এ এক যুগান্তকারী সাফল্য। ইতিমধ্যে মালয়েশিয়া ১৮টি তেজস যুদ্ধবিমান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মালয়েশিয়া তাদের রাশিয়ান মিগ-২৯ ফাইটার জেট সরিয়ে ভারতের তৈরি তেজস ক্রয় করছে। অর্থাৎ অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান বিক্রির ক্ষেত্রে ভারত অন্যান্য শক্তিধর দেশের সাথে সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছে।
ভারত বিশ্বের প্রথম দেশ যে ৩টি অঞ্চল থেকে সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করতে পারে। ২০১৪ সালের আগে সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয় সমরাস্ত্রের প্রায় পুরোটাই আসত বিদেশ থেকে আর এখন দেশেই তৈরি হচ্ছে। শুধু তাই নয় ভারত এখন সমরাস্ত্র বিদেশে রফতানি করতেও শুরু করেছে।
চলতি বছর ভারত ফিলিপাইনে ৩৭৫ মিলিয়ন ডলারের ব্রাহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র এবং আর্মেনিয়ায় ৩০০ মিলিয়ন ডলারের পিনাকা রকেট সিষ্টেম আকাশ মিসাইল ডিফেন্স সিষ্টেম সুইমাইড ড্রোন রফতানি করার চুক্তি করেছে।রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ মিসাইল সিষ্টেম ভারতের আকাশ নিরাপত্তাকে নিচ্ছিদ্র করেছে। চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে একযোগে মোকাবেলা করবে এই প্রতিরোধ সিষ্টেম। ইতিমধ্যে এই প্রতিরোধ সিষ্টেম পাঞ্জাবে মোতায়েন করা হয়েছে।
২০১৪ সালে ভারত ছিল ১০ম অর্থনীতির দেশ আর এখন হয়েছে ৫ম অর্থনীতির দেশ। আন্তর্জাতিক বাজারে জার্মানিকে পিছনে ফেলে ভারত অটো মার্কেটে আজ ৪র্থ স্থানে। টেক্সটাইল উৎপাদনে ইটালিকে পিছনে ভারত এখন ২য় স্থানে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে রাশিয়াকে পেছনে ফেলে ভারত ৩য় স্থানে। মোবাইল উৎপাদনে ভিয়েতনামকে পেছনে ২নন্বরে।
ইস্পাত উৎপাদনে জাপানকে পেছনে ২নম্বরে। নতুন সৌরবিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনে আমেরিকার ও জাপানকে পিছনে ফেলে ভারত ২য় স্থানে উঠে এসেছে। জাতিসংঘ বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ২৫টি দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে তারমধ্যে ভারত রয়েছে ৪ নম্বরে শুধু আমেরিকার রাশিয়া চীন ভারতের থেকে এগিয়ে। এটাই মোদী যুগ।
৬২ যুদ্ধের পর নেহেরু সংসদে দাড়িয়ে বলেছিল ভারত-চীন সীমান্তে রাস্তা-ঘাট উন্নয়নে কোন কাজ করা হবেনা যাতে চীন ভারতের ভেতরে ঢুকতে না পারে।কিন্তু নরেন্দ্র মোদী সরকার গত ৮ বছরে চীন সীমান্তে রাস্তা-ঘাট যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমুল পরিবর্তন এনেছেন।লাদাখ অঞ্চলে বিশ্বের সর্বোচ্চ রাস্তা তৈরি করেছে ভারত।সীমান্তে চীনের সাথে দ্বন্ধের পর ভারত সীমান্তে নজদারী জোরদার করেছে।চীনের বিরোধিতার পরও ভারত লাদাখে বিশ্বের সর্বোচ্চ রাস্তা তৈরি করেছে।
রাস্তাটি ১৯৩০০ফুটের বেশি উচ্চতায় অবস্থিত উমলিং লা টপ এর মধ্য দিয়ে গিয়েছে।সংযোগকারী এই দীর্ঘ রাস্তাটি কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।বিশ্বের দীর্ঘতম হাইওয়ে টানেল যা অটল টানেল নামে পরিচিত নির্মিত হয়েছে ভারত-চীন সীমান্তবর্তী অঞ্চলে। অটল টানেল বিশ্বের দীর্ঘতম হাইওয়ে টানেল।
হিমাচল প্রদেশে অবস্থিত এই ৯.০২ কিলোমিটার দীর্ঘ অটল টানেল মানালিকে লাহৌল-স্ফিতি উপত্যকার সাথে সংযুক্ত করে।এর আগে প্রায় ৬মাস ধরে ভারী তুষারপাতের কারনে উপত্যকাটি বাকি অংশের সাথে বিচ্ছিন্ন থাকত।নরেন্দ্র মোদী কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই টানেল সব ধরনের আবহাওয়ায় চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন।
এই টানেলের কারনে মানালি এবং লেহের মধ্যে দুরত্ব ৪৬ কিলোমিটার কমে গিয়েছে।এই টানেলের মধ্যে দিয়ে ৩ হাজার গাড়ি এবং ১৫০০ ট্রাক সহজেই চলাচল করতে পারবে।
মোদীজি গত ৯ বছরে যা করেছেন আগামী ১০০ বছরে তা ভারতের কাছে স্মরনীয় হয়ে থাকবে।মোদীজির এই ক্রমোন্নতি দেখে দুর্নীতিবাজ বিরোধীরা হতচকিত হয়ে একজোট হয়ে ২০২৪ সালে মোদীজিকে পরাজিত করার জন্য চক্রব্যুহ তৈরি করছে।কিন্তু এইসব দুর্নীতিবাজরা জানে না যে এই যুগে অর্জুনের মতো প্রধানমন্ত্রী মোদীও একটি মাত্র লক্ষেই স্থির “ভারত আবার জগৎ সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে”।