“পাপ কাউকে ছাড়ে না”
ডাঃ মৃনাল কান্তি দেবনাথ
মহাভারতের যুদ্ধের শেষে মহামতি ভীষ্ম শ্বরস্বজ্যায় পড়ে আছেন। অর্জুন এবং শ্রী কৃষ্ণ তার কাছে যাচ্ছেন। অর্জুন জিজ্ঞাষা করলেন, “ হে সখা, এই যুদ্ধে প্রায় ১৮ অক্ষৌইনি (৫২ লক্ষ) মানুষ মারা গেছে। যারা মারা গেছে তারা তো আর কষ্ট ভোগ করছে না। কিন্তু পুতঃ চরিত্র পিতামহ, যিনি কোনোদিন কোনো পাপ করেন নি তিনি কেন সারা শরীরে অসংখ্য তীরের আঘাত নিয়ে বেঁচে আছেন। এ তো বিষম জ্বালা, শাস্তি। কোন পাপে উনি এতো কষ্ট পাচ্ছেন?”
শ্রী কৃষ্ণ উত্তর দিলেন, “ সখা, উনি তোমার গুরুজন, আমার ও গুরুজন। আমি জানি ওর কি পাপ হয়েছে। কিন্ত লঘুজন হিসাবে সেটা আমার বলা ঠিক হবে না। উনি জানেন উনি কি পাপ করেছেন। ওকে জিজ্ঞাষা করো, উনি নিজেই বলে দেবেন।“
অর্জুন এই প্রশ্ন ভীষ্মকে করলেন। ভীষ্ম স্মিত হাসি হেসে দুঃখিত হলেন এবং বললেন,” এই কুরুক্ষেত্রের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের এবং তজ্জনিত ধংস, অগনিত বিধবা এবং সমাজের ক্ষতির জন্য আমিই দ্বায়ী। দেশ মাতৃ সমা। যে দেশ রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি আমি আমার পিতার কাছে দিয়েছিলাম, সেই দেশ কে আমিই দুই টুকরো করে এক ভাগ যুধিষ্টির আর এক ভাগ দুর্য্যোধন কে দিয়েছিলাম। দেশকে , দেশ মাতাকে আমি এক টুকরো মাটি হিসাবে দেখে ছিলাম। সেই অপরিনামদর্শিতার পরিনাম এই মহাযুদ্ধ এবং অগনিত ক্ষয় ক্ষতি এবং বিধবার অশ্রুজন। সেই শাস্তি তো আমাকে পেতেই হবে। এর জন্য দুঃখ করো না বৎস।“
ভীষ্ম সত্যবাদী ছিলেন। নিজের ভুল বুঝতে পেরেছিলেন এবং শাস্তি মাথা পেতে নিয়েছিলেন।
ভারতমাতাকে দুই ভাগ করার কুশীলব জিন্না, প্রতারক এম কে গান্ধী, মাউন্টব্যাটেন এবং ধুর্ত নেহেরু।
জিন্না টিবি হয়ে মারা গেলো, গান্ধী নিজের বুকের রক্ত দিয়ে তার পাপের ( দেশবাসীকে প্রতারনা করার এবং দেশ ভাগে সহমত হওয়া) প্রায়শ্চিত্ত করলো, মাউন্ট ব্যাটেন স্কটল্যান্ডের নিজ প্রাসাদের বাগানের মধ্যকার জলাশয়ে নৌকাবিহারের সময় ‘Irish Revolutionary Army’ (IRA) র বোমায় ছিন্ন বিচ্ছিন হলো।
’ধুর্ত নেহেরু’ তার জীবনের আশা পুরন করলো ঠিকই। কিন্তু তার মেয়ে এবং দুই নাতির অপঘাতে মৃত্যু হলো।
সেই জন্য বলে “পাপ কাউকে ছাড়ে না”। দেশ ভাগের বলি অগনিত হিন্দু, শিখ, জৈন, খ্রিষ্টান। তাদের ঘরবাড়ি ধুলিস্যাত, ভিটে মাটি ছাড়া, মা বোনেরা শিকার হলো যৌন অত্যচারের ( এখনো হচ্ছে)। শুরু সেই ১৯৪৬ সালের ১৬ ই আগষ্ট , আজো তা শেষ হয়নি।
শেষ হবে এক বিধ্বংসী ‘পরমানু যুদ্ধে’ র অভাবনীয় ক্ষয় ক্ষতি র পর। ‘অহিংসার নামে হিংসা এবং রিরংসার পথ ভবিষ্যতের জন্য খুলে দিয়ে গেছে এম কে গান্ধী।
দুই বিকৃত রুচির প্রতারকের নিষ্ঠুর ধুর্ততার বলি “লক্ষ লক্ষ ভারতবাসী”। এই দুজনের জন্য আমার কাছে আছে শুধু অপরিসীম ঘৃনা।
ভাবতে কষ্ট হয়, পুন্য ভুমি ভারতে এমন দুরাচারী জন্মায়।