আজ সরকার বাহাদুর মারমা দুই বোন ধর্ষণকারী সেনাসদস্যদের বিচার ও রানী ইয়ান ইয়ানের উপর নেক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অনুষ্ঠিত হতে দেয়নি। এই ঘটনা আমাদের মিডিয়াতেও আসেনি। পূর্ব পাকিস্তানের নির্যাতন নিপীড়নের নিউজও পাকিস্তানের গণমাধ্যমে আসত না। এমন কি একাত্তরের গণহত্যা, ধর্ষণের সমস্ত কিছু পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের কাছে গোপন করা হয়েছিলো মিডিয়াকে হাত করে। শাহবাগে একটা বিক্ষোভ সমাবেশ করে প্রতিবাদ করলে সারাদেশ জেনে যাবে- এই ভয় আপনাদের?
ইংরেজ আমলে ভারতবর্ষের একটা বাস্তব দৃশ্যের কথা বলি। এক জমিদারের জুড়িগাড়ি যাচ্ছিল পথ দিয়ে। পিছন থেকে এক সাহেব ঘোড়ায় চড়ে আসছিলো। একটা কালা আদমি আগে আগে যাচ্ছে, রাজার জাতকে পথ ছেড়ে তাকে রাস্তায় পাশে সরে দাঁড়াতে হবে। সেটাই করা হলো। তবু সাহেব মেজাজ খারাপ করে চাবুক চালালো জমিদারের সহিসের উপর। অসাবধানে চাবুকের একটা বাড়ি এসে লাগল স্বয়ং জমিদারবাবুর গায়েও! কিচ্ছু করার নেই। মুখ বুজে সহে যাওয়া ছাড়া কিছু করার ছিলো না…।
আমাদের পাহাড়ে ঠিক এটাই চলছে বছরের পর বছর। কখনো তাদের বাঙালী হয়ে যেতে বলেছে। কখনো ভূমিহীন বাঙালীদের জোর করে পাহাড়ীদের জমিতে পুশ করে দিয়ে বিবাদ বাধানো হয়েছে। সেনা ছাউনি বসিয়ে প্রতিনিয়ত পাহাড়ীদের বুঝানো হয়েছে তারা উপনিবেশ শাসনে থাকা নেটিভ, আর বাঙালী মুসলমানরা রাজার জাত! গরীব কৃষক পাহাড়ীদের তো কুকুর বেড়ালের চেয়ে বেশি সন্মান নেই। তাদের বস্তি, তাদের জুম চাষের জমি দখল করেই তৈরি হয় রিসট, স্পট, আবাসিক হোটেল। আমরা সেখানে এক রাত কাটিয়ে পাহাড়ের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করে আসি…। গোটা কাজটাই করা হয় রাষ্ট্রীয় প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে।
আশ্চর্য যে দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ পাহাড়ে সেনা শাসনের পক্ষে! তারা পাহাড়ীদের এভাবেই টাইট দিয়ে সোজা করার পক্ষে! দেশের মিডিয়া পরিচালনা করা সাংবাদিকদেরও একই মত। তারা যে সবাই ভয়ে নিউজ করে না তা নয়। পাকিস্তানীরা বেলুচিস্থান রাখতে পারবে না। পূর্ব পাকিস্তানকে অত্যাচার করে ধরে রাখতে পারে নাই। মারমা দুটো কিশোরী তো জীবনে রাঙ্গামাটি শহরটাই দেখেনি। তারা রাজনীতি বুঝে না। দেশ বুঝে না। ইতিহাস জানে না। তাদের উপর অত্যাচার করা জানোয়ারদের বিচারটা করেন। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেন।…