#খ্রিস্টদুষ্ট_পর্ব_৩
ডাফ সাহেব তার যেসব প্রবন্ধ ও গ্রন্থে হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে পূর্বলিখিত নিন্দাবাদ করেছেন তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায় তাঁর তীব্র প্রতিবাদ প্রকাশিত হয় । তাঁর স্কুলের একজন ছাত্র ও তার স্ত্রী খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করায় কলকাতায় তুমুল আন্দোলন হয়েছিল এবং স্বয়ং দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের নেতৃত্বে হিন্দুগন খ্রিস্টান করার বিরুদ্ধে দলবদ্ধ হয় ।
এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে তাদের চেষ্টা সফল হয়েছিল বলপূর্বক খ্রিস্টধর্মে দীক্ষা দেবার দৃষ্টান্ত এরপর থেকে অনেক কমে গিয়েছিল। মিশনারীদের বিদ্যালয়গুলোই এরূপ ধর্মান্তর গ্রহণের প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল।
এর ফলে 1845 সালে একটি স্কুল স্থাপিত হলো। হিন্দুরা ইংরাজি শিক্ষা গ্রহণে সচেষ্ট হয়ে উঠল।হিন্দু ছাত্র এখানে বিনা বেতনে পড়তে পারতো ।
কিন্তু শত চেষ্টা সত্ত্বেও উচ্চ-মধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত হিন্দুদের উপর খৃষ্টধর্ম বিশেষ কোনো প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি।
সাভারকার এর রচনাতে হিন্দুদের উপর মুসলিমদের অত্যাচারের কথা যেমন রয়েছে তেমনি আছে হিন্দুদের ওপর খ্রিস্টান আক্রমণের কাহিনী। তিনি ” খ্রিস্টানদের হিন্দু বিরোধী অভিযানের শুরু ” গ্রন্থে লিখেছেন যে , খ্রিস্টীয় পুরাণ অনুসারে প্রথম শতাব্দীতে সিরিয়াতে যখন খ্রিস্টান ধর্ম প্রচার শুরু হয় তখন ইহুদিরা নাজারেথের যীশু কে ক্রুশবিদ্ধ করেছিল এবং জোর করে ইহুদী ধর্ম বিনষ্ট করার প্রতিবাদে তারা খ্রিস্টানদের উচিত শিক্ষা দিতে শুরু করেছিল ।
এই সময় তারা ভারতে আসার পথের কথা জানত তারা ভারতে পালিয়ে আসে এবং জামরিয়ার রাজার কাছে আশ্রয় ভিক্ষা করে ।
হিন্দু রাজার পক্ষেই বিদেশীদের উপর কোন শর্ত আরোপ না করে নিজের উপকূলে নামতে দেওয়া সেদিন উচিত হয়নি। কিন্তু হিন্দু জাতি সদ্গুণ সমূহের বিকৃতির যে ব্যধিতে ভুগছে তা থেকে সেদিনের মালাবার সম্রাটও মুক্ত ছিলেন না। তিনি তাঁর রাজ্যের একটি এলাকায় এই সিরিয়ান খ্রিস্টানদের বসবাসের ব্যবস্থা করে দিলেন।
তিনি তাদের গ্রাম পঞ্চায়েতের ভীতর এক স্বতন্ত্র জাতি রূপে বসবাসের অধিকার দিয়ে তাম্রপত্ত লিখে দিলেন।
ধীরে ধীরে এই সিরিয়ান খ্রিস্টানরা লক্ষ্য করলো যদি হিন্দুদের কেউ তাদের সাথে পানভোজন করে তাহলে সে জাতিচ্যুত হচ্ছে । দেখে শুনে তারা নিজ মূর্তি ধারণ করল এবং এই সুযোগ নিয়ে ধীরে ধীরে খ্রিস্টান ধর্ম প্রচারের অশুভ উদ্যোগ শুরু করল ।
প্রথম শতাব্দীতে ইংল্যান্ডে একজনও খ্রিষ্টান ছিল না । কিন্তু ভারতে হিন্দুদের কপটতা পূর্বক খ্রিস্টানি করন শুরু হয়ে গিয়েছিল। ইংল্যান্ডে খ্রিস্টান ধর্ম কিভাবে প্রচারিত হয়েছিল তা হিন্দু মাত্রেই পাঠ করা উচিত ।। স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে শত্রুর ধর্মান্তর অভিযান পরিচালনায় পোষকতা করার মতো সুযোগ আমাদের ধর্মে প্রায় 2000 বছর আগে থেকে বিদ্যমান ছিল।
এই সব সিরিয়ান খ্রিস্টান মিশনারীরা লক্ষ্য করেছিল কোন একটি অঞ্চলে হিন্দুরা একটি সরোবর পবিত্র গণ্য করে সেখানে স্নান করে ,জলপান করে।তাদের মনে এই ধারণা জন্মেছিল, হিন্দুরা যখন খ্রিস্টানদের সঙ্গে পানভোজন করলে নিজেদের ধর্মভ্রষ্ট বলে গণ্য করে তবে ওই স্থানে ও তারা সেই সুযোগ নিয়ে সব হিন্দুদের ধর্মভ্রষ্ট করে খ্রিস্টান করতে পারবে।
ক্রমশঃ
তথ্যঃ
ডক্টর রমেশ চন্দ্র মজুমদার
বীর সাভারকার :খ্রিস্টানদের হিন্দু বিরোধী অভিযানের শুরু