অগ্নিযুগের বিপ্লবী ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী ………………………………..।।।


ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী
(
ইংরেজি: Trailokyanath Chakravarty) (১৮৮৯৯ আগস্ট, ১৯৭০) ছিলেন ভারতীয়
উপমহাদেশের
ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম
ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী।
ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী বৃহত্তর
ময়মনসিংহের
কিশোরগঞ্জ
জেলার
কুলিয়ারচর
উপজেলার
কাপাসাটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম দুর্গাচরণ
চক্রবর্তী। তাঁর পিতাও

স্বদেশী
আন্দোলনের
সমর্থক ছিলেন।
১৯০৫ সালে ত্রৈলোক্যনাথ
বছরখানেক ধলা হাই স্কুলের ছাত্র ছিলেন।

১৯০৬ সালে স্বদেশী
আন্দোলনের সময় তাঁর অনুজ চন্দ্রমোহন চক্রবর্তী তাঁকে
সাটিরপাড়া হাই স্কুলে
ভর্তি করে দেন। সেসময় সাটিরপাড়া
স্কুলে দুজন শিক্ষক ছিলেন মহিম চন্দ্র

নন্দী এবং শীতল চক্রবর্তী। মহিম চন্দ্র
নন্দী বিলাতী লবণ ফেলার অপরাধে

ঢাকা জেলে বন্দি ছিলেন কিছুদিন। ১৯০৯ সালে ত্রৈলোক্যনাথ
চক্রবর্তী প্রথমবার জেল থেকে ছাড়া পেলে জেলগেটে শীতল চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন।

কর্মজীবন
প্রবেশিকা পরীক্ষার ঠিক আগে ১৯০৮ সালে বিপ্লবী কাজের
জন্য গ্রেপ্তার হলে প্রথাগত শিক্ষার ইতি হয়। ১৯০৬ সালে
অনুশীলন
সমিতি
তে যোগ দেন। জাতীয়ভাবে
অনুপ্রাণিত হয়ে ব্যায়াম প্রতিষ্ঠান গঠন করে নিজ
জেলায় বিপ্লবী ঘাটি
তৈরি করতে থাকেন। ১৯০৯ সালে ঢাকায় আসেন এবং ঢাকা
ষড়যন্ত্র মামলায় পুলিশ
তার সন্ধান শুরু করলে আত্মগোপন করেন। এ সময়ে
আগরতলায় উদয়পুর
পাহাড় অঞ্চলে গিয়ে ঘাটি তৈরি করেন। ১৯১২ সালে গ্রেপ্তার
হন। পুলিশ একটি হত্যা
মামলায় জড়ালেও প্রমাণের অভাবে মুক্তি পান। ১৯১৩-১৪
সালে মালদহ, রাজশাহী ও কুমিল্লায় ঘুরে
গুপ্ত ঘাঁটি গড়তে থাকেন। ১৯১৪ সালে পুলিশ তাঁকে
কলকাতায় গ্রেপ্তার
করে বরিশাল ষড়যন্ত্র মামলার আসামিরূপে আন্দামানে
পাঠায়। ১৯২৪ সালে
মুক্তি পেয়ে দেশবন্ধু

চিত্ত
রঞ্জন দাশের
পরামর্শে দক্ষিণ কলকাতা জাতীয় বিদ্যালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ
করেন। ১৯২৭
সালে গ্রেপ্তার হয়ে বার্মার মান্দালয় জেলে প্রেরিত হন। ১৯২৮
সালে তাঁকে
ভারতে এনে নোয়াখালী হাতিয়া দ্বীপে অন্তরীণ করে রাখা হয়। ঐ
বছরই মুক্তি
পেয়ে উত্তর ভারতে যান এবং চন্দ্রশেখর
আজাদ
প্রমুখের সংগে হিন্দুস্তান রিপাবলিকান আর্মিতে যোগ দেন। পরে
বিপ্লবী দলের
আদেশে বার্মার বিপ্লবীদের সংগে যোগাযোগের উদ্দেশ্যে বার্মায়
যান। ১৯২৯
সালে লাহোর কংগ্রেসে যোগ দেন। ১৯৩০ সালে গ্রেপ্তার হয়ে ১৯৩৮
সালে মুক্তি
পান।[২]
সুভাষ
চন্দ্র বসু এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে কাজ
তিনি সেই বছরেই সুভাষ
চন্দ্র বসুর
সংগে যোগাযোগ করে রামগড় কংগ্রেসে যোগ দেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে
সিপাহী বিদ্রোহ ঘটাবার চেষ্টায় ভারতীয়
সৈন্যদের সংগে যোগাযোগ করলেও

সুবিধা করতে পারেননি। এ সময়ে
চট্টগ্রামে গ্রেপ্তার হন। ১৯৪২ সালে

ভারত ছাড়
আন্দোলনে
যোগ দিয়ে গ্রেপ্তার হন এবং ১৯৪৬ সালে মুক্তি পান।[২]
পাকিস্তানকালীন
কর্মজীবন
১৯৪৬ সালেই নোয়াখালীতে সংগঠন গড়বার চেষ্টা
করেন। স্বাধীনতালাভের পর পূর্ব পাকিস্তানে নাগরিক
হিসেবে রাজনীতিতে
সক্রিয় থাকেন। ১৯৫৪ সালে সংযুক্ত প্রগতিশীল দলের
প্রার্থী হিসেবে
পূর্ব পাকিস্তান এসেম্বলিতে নির্বাচিত হন। কিন্তু ১৯৫৮
সালে তাঁর নির্বাচন
অগ্রাহ্য হয় এবং রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপ এমনকি সামাজিক
কাজকর্মেও তাঁর ওপর
বাধা আরোপ করা হয়। ১৯৭০ সাল পর্যন্ত স্বগ্রামে
প্রকৃতপক্ষে
নির্জনবাস করেন। চিকিৎসার জন্য কলকাতায় আসেন। এই সময়
সম্বর্ধনার জন্য
তাঁকে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মারা যান।
[২]
প্রকাশিত
গ্রন্থসমূহ