ইসলাম নামের অর্থ যদি শান্তি হয়। ইসলাম যদি সাম্য আর ভাতৃত্ববোধের কথা হয় তো ইসলাম তো শুধু আরবের সংস্কৃতি হতে পারে না।
বর্তমানে ৪৮টা মুসলিম দেশ আছে। আটলান্টিকের তীরের মরক্কো থেকে, প্রশান্ত মহাসাগরের তীরের ইন্দোনেশিয়ার পর্যন্ত এর বিস্তৃতি।
এই অর্ধেক পৃথিবীজুরে থাকা বিশাল দেড় বিলিয়ন মানুষের যে জনগোষ্ঠি নিজেদের মুসলমান বলে পরিচিতি দেয় বা নিজেদের মুসলিম সংস্কৃতি অংশ বলে মনে করে তারা ডাইভারসিফাইড হবেই।
এই গুলো বেসিক ব্যাপার তাই মাথায় গেথে নেন। প্রতি ১০০ কিমি অন্তর একই ভাষার উচ্চারন আর শব্দে পরিবর্তন হয়ে যায়।
প্রতি দেড়শো কিলোমিটারে মানুষের খাদ্যাভাস পরিবর্তন হয়ে যায়।
একবার ভেবেদেখেছেন পাঞ্চাবে কেন মানুষ রুটি খায় আর বাংলাদেশে মানুষ কেন ভাত খায়। কারন বাংলাদেশে ধানের ফলন বেশী হয়। পাঞ্চাবে গমের, যবের অন্যান্য শস্যের ফলন বেশী।
খাদ্যাভ্যাস ভাষা ইত্যাদির সাথে উৎসব আর সংস্কৃতির যোগ অনেক বেশী।
চাইনিজ নিউইয়ার হয় ফেব্রয়ারীতে, আমেরিকাতে হ্যালোউইন বা নব্বান্ন উৎসব হয় অক্টোবরের শেষে। প্রতিটা জাতির নবান্ন উৎসবে দিনক্ষন তরিকা সেখানের খাদ্যাভ্যাস আর ফসল তোলার সময়ের উপর নির্ভরশীল।
ইসলাম তো সার্বজনীন ধর্ম। এই কারনে এতোনা।
র্ঘ বিস্তৃতি জুড়ে ছড়াইসে ইসলাম ধর্ম। এখন ইসলাম ধর্মকে কি সৌদি আরবের ভাষা আর সৌদি আরবের খাদ্যাভাস আর সৌদি আরবের সংস্কৃতির সাথে
যুক্ত করে দিতে হবে?
তুন্দ্রা অঞ্চলের মুসলমানদের কেরালার মুসলমানদের মতো লুঙ্গি পড়তে হবে হাটু পর্যন্ত?
উট জবাই করে খেতে হবে?
জাপানী মুসলমানদের সৌদি আরবের নতুন ফসলের উৎসব পালন করতে হবে?
দ্যাট রিমাইন্ডস মি, সৌদি আরবের তো ফসলই নাই, নবান্নের ফসল আর উৎসব আসবে কই থেকে?
মাথায় তো যুক্তিবুদ্ধি আছে তো সেটা খাটান। বাংলাদেশে যখন একটা চাইনিজ ঘুরতে এসে পায়জামা পাঞ্চাবী পড়ে, যখন একটা আমেরিকান ঘুরতে এসে লুঙ্গি পড়ে, সেটা দেখে আমরা বিনোদিত হই, হাসি চাপি, পিঠ চাপরে দেই আমাদের সংস্কৃতি অনুসরন করার জন্য। আপনি যখন সৌদি সংস্কৃতিকে ইসলামের নামে নিজের করে নিতে চান মিডল ইস্টের লোকেরাও আপনাকে দেখে হাসে।
ধর্ম যদি পালন করতে হয় তো আইডিয়াটা নেন। মূল নীতিগুলো নেন। আপনাকে দাড়ি কমা, দাড়ি টুপি, পায়জামা বোরখা এসব সহ কপি করতে হবে না । এই গুলা খুবই লেইম।
আপনি যে দেশের মানুষ সে দেশের খাদ্যাভাসকে নিজের করে নেন। আপনার নিজের সংস্কৃতিকে মাথা করে রাখেন। নিজের ভাষা নিজের রীতিনীতিকে আপন করে নেন।
ধর্মের সাথে এসব কোনটাই সাংঘর্ষিক হবার কথা না, কথা ছিলো না।
গোমূর্খ ইসলামিস্ট মোল্লারা এসবকে সাংঘর্ষিক করেছে, সাম্প্রদায়িক হিন্দুরা আগুনে কেরোসিন দিয়েছে, এখন প্রগতিশীল মোল্লারা এগুলোকে ব্যবহার করে বিভেদ আরো বাড়াচ্ছে।
নিজের পরিচয় জানেন। নিজের পরিচয়ে গর্বিত হতে শিখেন।
বলেন আমি বাঙালী মুসলমান। পয়েলা বৈশাখও আমার সংস্কৃতি, শবে বরাত, ঈদও আমার সংস্কৃতি আমার উৎসব।
নিজের সাথে যুদ্ধ করে নিজের পরিচয় আর রুটকে ঘৃণা করে আসলে খুব বেশীক্ষণ জেতা যায় না।
@Imtiaz Mirza