বাংলাদেশের ইসলামিকরণে যারা নির্বাক, মোদীর বিজয়ে তাদের মুখেই এখন কথা ফুটেছে!
৫৭টা ‘মুসলিম দেশ’ সৌদি আরবে ওআইসি সম্মেলনে বসেছিলো। সব কটা রাষ্ট্র প্রধান মুসলিম। সবাই বসে এক মত প্রকাশ করছিলো ‘মুসলিম বিশ্বের’ ঐক্যের বিকল্প নেই। এই দেশগুলোর পরিচয় ‘মুসলিম’ এবং এই দেশগুলোর রাষ্ট্র প্রধানরা নিজেদের ‘মুসলমানিত্ব’ নিয়েই এ্রখানে হাজির হয়েছেন। এতে পৃথিবীতে কোন কম্পন সৃষ্টি হয়নি। কেউ ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি শুনতে পায়নি।…
সারা পৃথিবীতে দুমুখো সাপে ভরে গেছে! ৫৭টা স্বঘোষিত ‘মুসলিম দেশ’ থাকলে যাদের কোন সমস্যা হয় না তারাই পৃথিবীর প্রথম স্বঘোষিত ‘ইহুদী রাষ্ট্রে’ ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি শুনতে পায়! ওআইসি গঠন করা হয়েছে মুসলিম দেশগুলির মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করে ধর্মের ভিত্তিতে পৃথিবীকে বিভক্ত করা ও অমুসলিম দেশে বসবাস করা মুসলিমদের হয়ে কথা বলার জন্য। একই কাজ ভারতের ‘হিন্দুত্ববাদীরা’ যখন শুরু করল তখন পৃথিবীতে হায় হায় রব শুরু হয়ে গেলো। বিজেপি যখন ঘোষণা দিলো বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে পালিয়ে আসা হিন্দু-খ্রিস্টান-বৌদ্ধদের নাগরিত্ব দিবে ভারত’ তখন এটি ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক বলে যাদের কাছে মনে হয়েছে তারা কখনই ওআইসির সম্মেলন নিয়ে কথা বলে না। আমি সেসব বুদ্ধিজীবী, সেলিব্রেটিদের জানি (ভারতীয় ও বাংলাদেশী) যারা বিজেপির বিজয়ে ‘রামছাগলের বিজয়’ লিখে তাদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছে কিন্তু তারাই এরদোয়ানের বিজয়কে এরকম কোন অভিব্যক্তি প্রকাশ করেনি। বাংলাদেশ সরকার যখন হাটহাজারী মাদ্রাসার সঙ্গে আপোষ রফা করে, রাষ্ট্রের প্রতিটি কাজে ইসলামীকরণ করে, সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমদের বিশ্বাসকে রাষ্ট্রে প্রতিফলন ঘটায়- তখন যারা চুপ করে থাকে, তারাই মোদীর বিজয়ে ভারতে মানবতা খান খান হয়ে ভেঙ্গে যাবার আশংকায় মূর্ছা যান।
কোথায় ইউরোপ সেখানে কোন ডানপন্থি দলের ভোট বেড়ে গেলে এখানে সলিমুল্লাহ কলিমুল্লাহ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। পশ্চিমারা নাকি সব মৌলবাদী বর্ণবাদী হয়ে পড়ছে। নিজ দেশের কথা বাদ দিলেও ইউরোপে বসবাস করা মুসলিমদের গোড়া মৌলবাদী জীবনযাপন নিয়ে তাদের মুখে কোন কথা নেই। সৌদি আরবে এক হিন্দু যুবককে জোর করে গরুর মাংস খাইয়ে দিয়েছে যখন জেনেছে গরুর মাংস তার জন্য ধর্মীয়ভাবে নিষিদ্ধ। সেই নিউজ বা ভিডিও কোন কমিউনিস্ট নেতা বা তাদের পার্টি শেয়ার করেনি। অথচ ভারতে গরুর মাংস খাওয়া নিয়ে হিন্দুত্ববাদীদের তান্ডবের ভিডিও তারা নিয়মিত আপলোড দিতো!
পৃথিবীর যে কোন সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র চিন্তার মুখে থুতু দেই! তারচেয়ে বেশি তাদের মুখে যারা ৫৭টি মুসলিম দেশ ও তাদের সংগঠনের বেলায় নিরব থাকলেও কেবল হিন্দুত্ববাদ, ইহুদীবাদ, হোয়াইট সুপ্রিমিটিতে চুলকানি অনুভব করেন। বাংলাদেশের আরবী নামের লেখক সাহিত্যিক শিল্পীদের বেশির ভাগই বর্ণচোরা। এরা এক-একটা ছুপা মুসলিম। মোদীর বিজয়ে তারা ‘হিন্দুত্ববাদের পদধ্বনি’ শুনতে পেলেও নিজ দেশে রোজার দিনে চায়ের কাপ হাত একটা ছবি ফেইসবুকে পোস্ট দেয়ার সাহস তারা রাখেন না। বাংলাদেশের ইসলামিকরণে যারা নির্বাক, মোদীর বিজয়ে তাদের মুখেই এখন কথা ফুটেছে!