“মানুষের গুন, প্রকৃতি নিয়ে পশ্চিমী চিন্তা ধারা”
ডাঃ মৃনাল কান্তি দেবনাথ
**********
(*******যারা সনাতনি ‘বর্ন প্রথা’ সম্বন্ধে সত্য সত্য ই কিছু জানতে চান এই প্রবন্ধ টা পড়ুন ,না হলে পরবর্তি আলোচনা কিছুই বুঝতে পারবেন না ,খেই হারিয়ে ফেলবেন)
*******
আগে একটু পশ্চিমী বৈজ্ঞানিক দের কথা বলি,যারা মানুষের ‘আন্তরিক দিক’ নিয়ে মতা মত দিয়ে গেছেন।
দার্শনিক Aristotle ছিলেন Plato র শিষ্য। তিনি “Ethics” নিয়ে একটি বই লিখেছিলেন। সেই বইয়ে তিনি দুই ধরনের মানুষের কথা বলেছেন। একধরনের মানুষ সব সময় শারিরীক সুখ ( Hedonic pleasure, Hedon = body) চায়, এদের কাজ কর্ম চিন্তা ধারা সব কিছু ভাবায় নিজের শরীরটাকে নিয়ে। কি করে এর আরাম হবে, সেই চিন্তাই সব সময় মনে ঘোরে এবং সেই মতো সব কাজ করে।
আর এক শ্রেনীর মানুষ যারা শুধু নিজের কথাই ভাবে না, অন্যের কথাও ভাবে এবং সামান্য ভাবে হলেও অন্যের উপকার করার চেষ্টা করে এবং সেই কাজ করে মনে আনন্দ পায় (EUdiamonic Pleasure) , বলতে পারেন অশরিরী অনাবিল আনন্দ।
প্রথম শ্রেনীর মানুষ হলো ভোগ বাদী, এরা নিজেরা কোনদিন সুখ পায় না, নিজের স্বার্থ পুরনে অন্যের ক্ষতি করে। শারিরীক সুখ এমনই একটি মোহ যে, কিছুতেই এই মোহের আক্রমন থেকে নিজেকে মুক্ত করা যায় না। আর এই নিয়েই বেশীর ভাগ মানুষ চলছে (৯৫%)। এদের জন্য সমাজের ক্ষতি হয়। নিজেরাও ভোগে অপরকেও ভোগায়।
দ্বিতীয় শ্রেনীর মানুষ সমাজে আজ এক বিরল প্রজাতি। কিন্তু এরাই প্রকৃত সুখী। গীতায় এদের জন্য বলা হয়েছে “ধর্মম স্বল্পম উপাষ্য” ( সামান্য হলেও কিছুটা ধর্ম করো, আর এখানে ধর্ম মানে পুজা পাঠ বা ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়া নয়, –মানব কল্যান), আর নিষ্কাম কর্ম ই সেই সুখ লাভের উপায়।
সম্প্রতি ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় দশ বছর ব্যাপি (৩৪ লক্ষ মানুষ সেই সমীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ) ‘মানুষের মনে শান্তির কি উৎস’ তাই নিয়ে গবেষনা করে। “আপনি শান্তিতে আছেন কি না”—এই প্রশ্নের উত্তরে যারা “হ্যা” বলেছিলেন তাদের জীবনযাত্রা প্রনালী এবং নিত্য দিনের ভাবনা কি কি তাই বিশ্লেষন করে এই সিদ্ধান্ত করা হয়েছে যে, “যারা মনে সর্বদাই নিজের কথা না ভেবে অপরের কিসে উপকার হবে, সমাজের এবং দেশের কিসে ভালো হবে সেই কথা ভাবেন এবং সামান্ন্য ভাবে হলেও সেই ভাবে কাজ করেন, তারাই সুখী”।
অন্য আর একটি সমীক্ষায়, দেখা গেছে যে , যারা শুধু “শারীরিক আনন্দই খোজে’(ভালো খাওয়া, ভালো বাড়ী গাড়ীর স্বপ্ন দেখা, সুন্দরী/সুন্দর স্ত্রী/স্বামী বা বন্ধু/বান্ধবী নিয়ে ফুর্তি, সংগে নেশা করার সামগ্রী) তাদের শরীরের প্রতিটি কোষে এক বিক্রিয়া হয় এবং এই বিক্রিয়া সাধারনত শরীরে এক ক্ষতিকারক (নেগেটিভ) প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। এটাই নানা রকম রোগের মুল কারন। অসুস্থ মানুষ এই পৃথিবীতে “নরক যন্ত্রনা” ই ভোগ করে, মারা যাবার পর নরক বলে কোনো কল্পিত স্থানের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না।
কোষ স্তরে এই বিক্রিয়া এবং পরিবর্তন ‘জেনেটিক মিউটেশন’ ঘটায়। মানুষের “অধোগতি’ হয়। অন্য দিকে যারা “স্বল্প্যম ধর্মম উপাষ্য’ কে নিজের জীবনে সাধনা বলে মেনে নিয়ে সেই ভাবে চলেন তাদের “কোষ স্তরে” ও বিক্রিয়া (পজিটিভ) হয়। সেই বিক্রিয়া মানুষকে রোগ হীন দীর্ঘ জীবন দেয় এবং সেই জীবন সতত আনাবিল আনন্দের হয়। সেটাই তো এই জীবনে স্বর্গে বাস করা (উর্দ্ধোগতি), তাই নয় কি???????
এবারে দেখি মনো বিজ্ঞানী সিগমন্ড ফ্রয়েড কি বলেছেন।————
“মানূষ দুই প্রকৃতির। এক প্রকৃতির মানুষ যে প্রবৃত্তি (Instinct) নিয়ে চলেন বা তার নাম Death Instinct। এরা সব সময় যা চিন্তা করেন, যে দিকে নিজের মনকে চালিত করেন এবং তার জন্য,মনের আকাংক্ষা পুরনের জন্য যে যে কাজের সুচনা করেন, তার সব কিছুই তার জীবনে সর্বনাশ ডেকে আনে।
অন্য আর একটির নাম Life Instinct. যাদের মধ্যে এই প্রবৃত্তি কাজ করে, তাদের ভাবনা চিন্তা এবং কর্ম তাদের জীবনকে উন্নতির পথে নিয়ে যায়”।
আধুনিক শরীর বিদ্যায় (Phisiology) বলা আছে মানুষের মস্তিষ্কে দুই প্রকারের “স্নায়ু কোষ” আছে, এবং সেই হিসাবে বলা হয় (higher center বা cerebral Cortex, এর সংষ্কৃত নাম ‘সহস্রার’ বা আনন্দময় কোষ)।
অন্যটি র নাম “lower Centre” বা “নিম্ন কোষ”। Brain stem- যা কিনা মস্তিষ্কের মধ্যে নীচের দিকেই থাকে। এই Brain Stem এর এবং তার আশ পাশ নিয়েই থাকে “নিম্ন স্নায়ু কোষ’।
মানুষের আদিম জীবনের (৮৪ লক্ষ যোনী ভ্রমন করা কালীন বা বলতে পারেন Evolution) সমস্ত গুন বা প্রবৃত্তি এই নিম্ন স্নায়ু কোষেই অবস্থান করে। যাদের মধ্যে উন্নত মানুষ হিসাবে কোনো গুন প্রকাশ পায়নি তারা এই নিম্ন স্নায়ু কোষের দ্বারা পরিচালিত, নিম্ন কোষের দাস হয়ে থাকে (Slavery of the Lower Center) । নিম্ন কোষের চাহিদা (আহার নিদ্রা মৈথুন) পুরোনের জন্যই সদা সর্বদা ব্যস্ত থাকে। তাদের মনে সনাতনি জ্ঞানের কথা বলা আর পাগোলের কাছে সুস্থ চিন্তা করার কথা বলা সমান পর্য্যায়ে পড়ে।
উচ্চ স্নায়ু কোষ উচ্চতর সাধনা করে জন্ম জন্মান্তরে লাভ করতে হয় (উর্ধোগতি), আর জন্ম জন্মান্তরের অধোগতি না রুখে দিয়ে সাধনা বিহীন জীবন যাপন করে, শুধু এই জন্ম জন্মান্তরের নিরানন্দ আর আশান্তির চক্রে (vicious cycle of life and birth) আবদ্ধ হয়ে নরক যন্ত্রনা ভোগ করা যায়।
Aristtotle was a Philospher, Dr.Sigmond Fraued was Neuro Surgeon at Vienna University , the researchers of California University are Biological scientist। এরা কেউ ভারতের “সনাতনী চিন্তাধারায় উদ্ভুদ্ধ ছিলেন এমন ধারনা করা ভুল।