বৈদিক চিত্রকাহিনী সংবলিত টেরাকোটায় আচ্ছাদিত মন্দিরটি দেখলে মনে হবে এ যেন চার খন্ডে শিল্পখচিত এক পৌরণিক মহাকাব্য।

http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/3/3c/Kan-temple.jpg/800px-Kan-temple.jpgকান্তজির মন্দির বাংলাদেশের দিনাজপুর শহর থেকে ১৪ মাইল উত্তরে
ঢেপা নদীর তীরে অবস্থিত একটি প্রাচীন মন্দির। এটি নবরত্ন মন্দির নামেও
পরিচিত কারণ এর রয়েছে নয়টি চূড়া।মন্দিরের নির্মাণ কাজ শুরু করেন
দিনাজপুরের মহারাজা প্রাণনাথ রায় যদিও নির্মাণ কাজ শেষ হয় তার পোষ্যপুত্র
রামনাথ রায়। শুরুতে মন্দিরের চূড়ার উচ্চতা ছিল ৭০ ফুট। ১৭৫২ সালে
মন্দিরটি উৎসর্গ করা হয়। ১৮৯৭ সালে মন্দিরটি ভূমিকম্পের কবলে পরলে এর
চূড়াগুলো

ভেঙে যায়। মহারাজা গিরিজানাথ মন্দিরের ব্যপক সংস্কার করলেও
মন্দিরের চূড়াগুলো আর সংস্কার করা হয়নি। মন্দিরের বাইরের
দেয়াজুড়ে পোড়ামাটির ফলকে লেখা রয়েছে রামায়ণ, মহাভারত এবং বিভিন্ন
পৌরাণিক কাহিনী। উপরের দিকে তিন ধাপে উঠে গেছে মন্দিরটি। মন্দিরের চারদিকের
সবগুলো খিলান দিয়েই ভেতরের দেবমূর্তি দেখা যায়। মন্দির প্রাঙ্গণ
আয়োতকার হলেও, পাথরের ভিত্তির উপরে দাঁড়ানো ৫০ফুট উচ্চতার মন্দিরটি
বর্গাকার। নিচতলার সব প্রবেশপথে বহু খাঁজযুক্ত খিলান রয়েছে। দুটো ইটের
স্তম্ভ দিয়ে খিলান গুলো আলাদা করা হয়েছে, স্তম্ভ দুটো খুবই সুন্দর এবং
সমৃদ্ধ অলংকরণযুক্ত। মন্দিরের পশ্চিম দিকের দ্বিতীয় বারান্দা থেকে সিঁড়ি
উপরের দিকে উঠে গেছে। মন্দিরের নিচতলায় ২১টি এবং দ্বিতীয় তলায় ২৭ টি
দরজা-খিলান রয়েছে, তবে তৃতীয় তলায় রয়েছে মাত্র ৩টি করে।

তবে
কান্তজীর মন্দির বিখ্যাত মন্দিরের গায়ে এর অপরূপ টেরাকোটার কাজের জন্য।
মন্দিরের দেয়ালের পোড়ামাটির ফলকগুলোকে টেরাকোটা বলে। টেরাকোটার কাজ
বর্তমানে আমাদের দেশে খুবই দুর্লভ। টেরাকোটার কিছু ছবি নীচে।
http://forum.projanmo.com/uploads/2009/01/690_kantojee_(1)_800x389.jpg
http://forum.projanmo.com/uploads/2009/01/690_kantojee_(4)_600x450.jpg
http://forum.projanmo.com/uploads/2009/01/690_kantojee_(6)_600x451.jpg
http://forum.projanmo.com/uploads/2009/01/690_kantojee_(7)_800x600.jpg
http://forum.projanmo.com/uploads/2009/01/690_kantojee_(17)_800x600.JPG
http://forum.projanmo.com/uploads/2009/01/690_kantojee_(18)_450x600.JPG
http://forum.projanmo.com/uploads/2009/01/690_kantojee_(22)_800x600.JPG
http://forum.projanmo.com/uploads/2009/01/690_kantojee_(26)_800x600.JPG
http://forum.projanmo.com/uploads/2009/01/690_kantojee_(39)_800x600.JPG
http://forum.projanmo.com/uploads/2009/01/690_kantojee_(42)_800x600.JPG

*** পোস্টের লেখা এবং মন্দিরের পূর্ণাঙ্গ ছবিটি বাংলা উইকিপিডিয়া থেকে নেয়া।

এসেছিস যখন তখন দেয়ালে একটা আঁচড় রেখে যা

সর্বশেষ সম্পাদনা করেছেন ভাস্কর১৬০ (০৭-০১-২০০৯ ১১:০৮)

http://abohomanbangla.com/bangla_tour_image/kantajir_temple.jpg
ছবি: আবহমান বাংলা
টেরাকোটা
একটি লাতিন শব্দ: ‘টেরা’ অর্থ মাটি, আর ‘কোটা’ অর্থ পোড়ানো। মানুষের
ব্যবহার্য পোড়ামাটির তৈরি সকল রকমের দ্রব্য টেরাকোটা নামে পরিচিত। আঠালো
মাটির সঙ্গে খড়কুটো, তুষ প্রভৃতি মিশিয়ে কাদামাটি প্রস্তুত করা হয়। সেই
মাটি থেকে মূর্তি, দৃশ্যাবলি তৈরি করে রোদে শুকিয়ে আগুনে পুড়িয়ে
টেরাকোটা ভাস্কর্য তৈরি করা হয়। মানবসভ্যতার বিকাশকাল হতে পোড়ামাটির
ভাস্কর্যের ব্যবহার পরিলক্ষিত হচ্ছে। সুমেরীয় সভ্যতা, ব্যাবীলনীয় সভ্যতা,
মায়া সভ্যতায় এই শিল্পের প্রচলন ছিল। বাংলাদেশে মৌর্য সম্রাজ্য, গুপ্ত
সম্রাজ্য-এর বহু টেরাকোটার নিদর্শন পাওয়া গেছে
পোড়ামাটির ফলকে আবৃত
কান্তজীর মন্দির বাংলাদেশের পুরোনো স্থাপত্যের এক অপূর্ব নিদর্শন। দিনাজপুর
শহর থেকে 12 মাইল দূরে তেপা নদীর তীরে কান্তনগরের অবস্থান।দিনাজপুর
রাজবংশের রাজা প্রাননাথ রায় শ্রীকৃেষ্ণর উদ্দেশ্যে 1722 সালে রুকি্ননীকান্ত
মন্দির হিসাবে এ মন্দিরের কাজ শুরু করেছিলেন। মন্দিরটি নবরত্ন মন্দির যার
চূড়ার উচ্চতা 70 ফুট। 1752 সালে রাজা প্রাননাথের মৃতু্র পর পুত্র রামনাথ
রায় এ মন্দিরের কাজ শেষ করেন।
মন্দিরের গায়ে পোড়ামাটির ফলকে উৎকীর্ণ
হয়েছে রামায়ণ, মহাভারত ও বিভিন্ন পুরাণের কাহিনীর অংশ। সত্য,ত্রেতা দ্বাপর ও
কলি এ চারটি শাস্ত্রীয় যুগের পৌরণিক কাহিনীগুলো মন্দিরের চার দেয়ালে
চিত্রায়িত। তাই বৈদিক চিত্রকাহিনী সংবলিত টেরাকোটায় আচ্ছাদিত মন্দিরটি
দেখলে মনে হবে এ যেন চার খন্ডে শিল্পখচিত এক পৌরণিক মহাকাব্য।

এসেছিস যখন তখন দেয়ালে একটা আঁচড় রেখে যা