ভারতবর্ষে এতো আধ্যাত্মিক সিদ্ধ পুরুষ, মহাপুরুষ জন্মালো-ঈশ্বরের দেখা পেলো,কৃপা পেলো―তা সত্ত্বেও ভারত এতো বছর ধরে দরিদ্র কেন? অনুন্নত-অনগ্রসর কেন? ভারতবাসী হাজার বছর বিদেশীদের গোলামী করলো কেন? ঐ সব মহামানব কেন আধ্যাত্মিক কেরামতি দেখিয়ে ভারতবাসীকে উদ্ধার করতে পারলো না?তাহলে ঐ সব আধ্যাত্মিক মহামানব আমাদের কোন কাজে লাগে ? ঐ সব অকর্মণ্য – আগাছা আধ্যাত্মিক মহাপুরুষদের পিছনে এতো অর্থ ও সময়ের অপচয় কেন? ঐ সব মহাপুরুষরা আমার দুর্বল ভাইটাকে অচ্ছুৎ-অস্পৃশ্য বানিয়ে রেখে, যতক্ষন দেহে প্রান আছে, আমার অচ্ছুৎ-অস্পৃশ্য ভাইদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমি এই সমস্ত কূপ্রথা-কূসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত আছি। যে ধর্ম মানুষ হয়ে মানুষকে ঘৃণা করতে বলে, আর ইতর প্রানীকে দেবতা মানতে বলে―সেই ধর্মের আমার প্রয়োজন নাই।সনাতন ধর্মের বৈজ্ঞানিক সংস্কারের সময় এসে গেছে ।
ইদানিং ভারতের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বহু মানবরূপী ভগবানের আস্তানায় হানা দিয়ে বিপুল পরিমান মাদক,অবৈধ অর্থ-অস্ত্র-সোনা-হীরা ও অসংখ্য নির্যাতিতা নারীদের উদ্ধার করেছে।আগের দিনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার এতো দক্ষতা ছিলো না,আইনের কঠোরতা ছিল না। ফলে আগের দিনের মহামানবরা জঘন্য সব অপকর্ম করে, মানুষের চোখে ধুলো দিয়ে ভগবানের আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে।ওদের মুখোশ খুলে দিতে হবে।
বিদেশীরা যখন ভারতভূমি দখল করে নিলো, তখন ঐ সব ভন্ড মহামানব- মহাপ্রভুরা বলেছে, কলিযুগে হিন্দু মাত্রই শূদ্র বা দাস।সবাই কেন দাসত্ব করবে ? দাসরা কেন যোগ্যতা অর্জন করে নিজেকে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় বা বৈশ্যে পরিনত করবে না ?― করলে যে বিদেশী প্রভুর রাজত্ব চলে যাবে।সমস্ত হিন্দু নিজেকে দাস জ্ঞান করে নিষ্ঠার সাথে বিদেশী দখলদারদের সেবা করবে।হিন্দুরা যাতে বিদেশী দখলদারদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ না করে, এজন্য হিন্দুদের শরীর দুর্বল বানিয়ে রাখতে মহাপ্রভু নিরামিষ আহার ও উপবাসের প্রচলন করলেন।বিদেশী দখলদাররা হিন্দু পুরুষদের প্রজনন অঙ্গ ছেদন করে, ক্রিতদাস হিসেবে বিদেশে রফতানি করতো আর হিন্দু নারীদের রফতানি করতো যৌনদাসী হিসেবে।জোর-জবরদস্তি করে দাস-দাসী সংগ্রহ করতে গিয়ে ভয়ঙ্কর প্রজা অসন্তোষ দেখা দিলো।বিদেশী দখলদারদের দালাল মহাপ্রভু দিলেন নতুন ফতোয়া, সঞ্চয় করো না।হিন্দু পরিবারের উপার্জনোক্ষম ব্যক্তি মারা গেলে,রোগে পরলে কিংবা বেকার হ’লে,কি ভাবে সংসার চলবে!―মহাপ্রভুর নির্দেশে হাতে তো কোন সঞ্চয় নেই।উপায় একটাই, সন্তানদের দাস-দাসী হিসেবে বিদেশী দাসব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া।মহাপ্রভু হিন্দু জাতিকে কতবড় ঠান্ডা মার দিয়েছিলেন, চিন্তা করতে পারেন!এরপর এলেন একজন স্বামীজী।বৃটিশ দখলদারদের লাঠিয়াল শোষক-অত্যাচারী রাজা-জমিদারদের বললেন, তোমরা দাসদের সামান্যতম ক্ষমতা দিও না।দাস ক্ষমতা চায় অন্যকে দাস বানাতে।অর্থাৎ দাসরা ক্ষমতা পেলে রাজা-জমিদারদের উচিত শিক্ষা দিয়ে দেবে।তখন পরগাছা স্বামীজীরা উদরের স্ফীতি বাড়াবে কিভাবে! সুতরাং বৃটিশ শাসন যে কোন মূল্যে টিকিয়ে রাখো।হিন্দু যুবকরা যাতে বৃটিশ দখলদারদের বিরুদ্ধে অস্ত্র না ধরে, এজন্য ভুং ভাং তত্ত্ব দিয়ে বললেন, তোমরা ফুটবল খেলো।
গেল বৃটিশ।পার্টিশন হলো।মহাপুরুষরা গাট্টি বোচকা গোল করে পাকিস্তান ছেড়ে ভারতে পালিয়ে গিয়ে, কিছুদিন ঘাপটি মেরে বসে রইলেন।শ্যালিকার উপর বিকৃত কাম চরিতার্থ করতে গিয়ে, দেবশিশুর আগমন বার্তা পেয়ে গুরুদেব তাকে বিয়ে করতে বাধ্য হলেন―কাজের মেয়েদের যৌন নির্যাতন চালাতে গিয়ে ধরা খেলেন।তবু হিন্দু জাতির ঘুম ভাঙ্গছে না।আসুন আমরা সবাই মিলে ঘুম ভাঙ্গানোর গান গাই।এই নোংরা সমাজটাকে পরিচ্ছন্ন করি।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, জাপান, সিঙ্গাপুর প্রভৃতি রাষ্ট্র যে পন্থায় সমৃদ্ধ-উন্নত হয়েছে,আমরাও সেই পথ ধরি।