ছাত্রী ধর্ষক পরিমল জয়ধরের বিরুদ্ধে যেমন প্রতিবাদ হয়েছিল, এবারেও তেমন হবে তো?
শিক্ষিকা কিন্তু হিন্দু………………………
**********************
শিক্ষিকাকে গণধর্ষণ
বরগুনার বেতাগী উপজেলায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষেই এক শিক্ষিকা গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে মামলা করা হয়েছে। ছুটির পর স্বামীর সঙ্গে কথা বলার সময় স্থানীয় বখাটেরা স্বামীকে মারধর করে একটি কক্ষে আটকে রেখে ওই শিক্ষিকাকে অন্য কক্ষে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। গত বৃহস্পতিবার এ ঘটনার পর রাতেই ছয়জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন নির্যাতিত শিক্ষিকা।
হিন্দু সম্প্রদায়ের নির্যাতিত ওই শিক্ষিকার স্বামী ভারতের মেদেনীপুরের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে তিনি বাংলাদেশে এসেছিলেন।
মামলার আসামিরা হলো উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের মো. হিরন বিশ্বাসের ছেলে সুমন বিশ্বাস (৩৫), আব্দুল বারেক মিয়ার ছেলে মো. রাসেল (২৪), আ. কুদ্দুস কাজীর ছেলে সুমন কাজী (৩০), মো. সুলতান হোসেনের ছেলে মো. রবিউল (১৮), আ. রহমানের ছেলে মো. হাসান (২৫) ও মো. আবদুর রহমান হাওলাদারের ছেলে মো. জুয়েল (৩০)।
গতকাল শুক্রবার সকালে নির্যাতিত শিক্ষিকাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বরগুনার পুলিশ সুপার বিজয় বসাক গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
বেতাগী থানার ওসি মো. মামুন-অর-রশিদ নির্যাতিত শিক্ষিকার মামলা করার কথা জানিয়ে বলেন, ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ওই শিক্ষিকাকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আর আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ছুটির পর বিদ্যালয়ে বসেই ভারত থেকে আসা স্বামীর সঙ্গে কথা বলছিলেন ওই সহকারী শিক্ষিকা।
তাঁদের কথা বলতে দেখে অভিযুক্ত বখাটেরা বিদ্যালয়ের মধ্যে ঢোকার চেষ্টা করে। তখন ভয় পেয়ে ওই শিক্ষিকা বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। তখন বখাটেরা তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে শিক্ষিকার স্বামীকে মারধর করে একটি কক্ষে আটকে রাখে। এরপর ওই শিক্ষিকাকে তুলে অন্য একটি কক্ষে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে চলে যায়।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘ঘটনা শুনে আমি স্কুলে গিয়ে দেখি ওই শিক্ষিকা কান্নাকাটি করছেন এবং মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছেন। পরে আমি তাঁকে বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে নিয়ে যাই। ইউএনও সাহেবের কাছে ওই শিক্ষিকা পাশবিক নির্যাতনের ঘটনা খুলে বলেন। পরে ইউএনও সাহেবের পরামর্শে ওই শিক্ষিকা থানায় মামলা করেন। ’
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জানান, নির্যাতিত শিক্ষিকার বাবা একজন দরিদ্র কৃষক। চলতি বছরের মার্চ মাসে ওই শিক্ষিকা এই স্কুলে যোগদান করেন। এর আগে তিনি অন্য একটি স্কুলে ছিলেন। তিনি আরো জানান, ওই শিক্ষিকার অনেক স্বজন ভারতে বসবাস করে। সেই সুবাদে বছরখানেক আগে পারিবারিকভাবে ভারতের পূর্ব মেদেনীপুরের এক যুবকের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়।
ঘটনাস্থলের পাশের এক বসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে আসছে।
এ বিষয়ে হোসনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাকসুদুর রহমান ফোরকান বলেন, ‘অভিযুক্তদের সবার বাড়ি আমার ইউনিয়নে। অভিযুক্তরা সবাই বখাটে। তারা মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িত। ’
বরগুনার পুলিশ সুপার বিজয় বসাক বলেন, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।