আমি জীবনে বহুবার বলেছি ‘উগ্র হিন্দুরা’ ভারতে বাবরী মসজিদ ভেঙ্গে ফেলেছে। একজনও মডারেট মুসলমান, আওয়ামী ঘরনোর ধর্মনিরপেক্ষ সুশীল, জাতীয়তাবাদী সেক্যুলার থেকে শুরু করে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী বামাতীরা- আমাকে কেউই ‘হিন্দু বিদ্বেষী’ বলেনি! কিন্তু যখনই ‘জঙ্গি মুসলমান’ বলেছি ওমনি সব হুড়মুড় করে আমাকে ‘মুসলিম বিদ্বেষী’ বলা শুরু করেছে! মুসলিম ব্যাকগ্রাউন্ডের বামাতীরা তো এককাঠি সরেস, তারা আমাকে শিবসেনার সদস্য পর্যন্ত ঠাউরেছে।
ভারতের আদালতে বাবরী মসজিদ মামলায় মুসলিমদের আইনজীবী রাজীব ধাওয়ান উগ্র হিন্দুদের তালেবানের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেছেন, আফগানিস্থানে তালেবানরা যেভাবে বুদ্ধ মূর্তিগুলো ভেঙ্গেছিলো সেভাবেই উগ্র হিন্দুরা বাবরী মসজিদ ভেঙ্গেছিলো। এতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন অনেকে। তারা বলেছে, এর মাধ্যমে সমগ্র হিন্দুদের উগ্র তালেবান বলা হলো যা আসলে সঠিক নয়। কিন্তু রাজীব ধাওয়ান বলেছেন তিনি তার কথা থেকে একচুলও নড়বেন না।
তালেবান আসলে কারা? রাজীব ধাওয়ান ‘হিন্দুদের’ তুলনা করেছেন ‘তালেবানদের’ সঙ্গে। ‘হিন্দু’ এই পরিচয়টি এখন ধর্মীয়। যেদিন হিন্দুরা বাবরী মসজিদ ভাঙ্গতে গিয়েছিলো সেখানে নেতৃত্ব দিয়েছিলো হিন্দু সংগঠনগুলো। কোন হিন্দু সংগঠনে মুসলিমরা থাকে না। যেমন তালেবান গঠিত হয়েছিলো আফগানিস্থানে কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের হাতে। কওমি মাদ্রাসায় মুসলমানরা কুরআন হাদিস শিক্ষা নেয়। এখানে কোন হিন্দুর পড়ার সুযোগ নেই। তালেবান অর্থই হচ্ছে ছাত্র। তারা মাদ্রাসার ছাত্র। এরা সবাই মুসলমান। রাজীব ধাওয়ান কেন বললেন না- সেদিন অযধ্যায় উগ্র হিন্দুরা ‘তালেবান উগ্র মুসলমানদের’ মত আচরণ করেছিলো? বলেননি কারণ তিনি মুসলমানদের পয়সা খান। তাদের উগ্র বলবেন কেন? তাছাড়া ‘উগ্র মুসলমান’ বললে সাম্প্রদায়িকতা বিদ্বেষ প্রকাশ পেলেও ‘উগ্র খ্রিস্টান’ ‘উগ্র ইহুদী’ ‘উগ্র হিন্দু’ বললে সেটা হয় না। বার বার বলে বলে এটাই প্রতিষ্ঠা করা গেছে।
যখন মুসলমানদের সন্ত্রাসী ধর্মীয় চেহারাটি প্রকাশিত হয়ে পড়ে তখনই সেটাকে ‘সালাফি’ ‘ওহাবী’ ‘তালেবান’ ‘আইএস’ এরকম ঘোড়াপটে ফেলে দিয়ে মুসলিম ও ইসলাম পরিচয়টিকে আড়াল করার চেষ্টা চলে। সালাফি ওহাবী মতবাদ কি ইসলামের বাইরে? বিজেপি যদি ‘উগ্র হিন্দু’ হয় তাহলে সালাফি ওহাবী আইএস তালেবান কেন ‘উগ্র মুসলমান’ হবে না? অবশ্যই হিন্দুরা বাবরী মসজিদ ভেঙ্গেছিলো। তার দায় হিন্দুদের নিতে হবে। তেমনি আফগানিস্থানে তালেবানই কেবল বুদ্ধ মূর্তি কামান দেগে ভাঙ্গেনি, সঙ্গে বলতে হবে তারা ছিলো মুসলমান। কাজেই সেদিন আফগানিস্থানে উগ্র জঙ্গি মুসলমানরা বুদ্ধ মূর্তি ভেঙ্গেছিলো। রামু, মালোপাড়ায় উগ্র মুসলমানরা বৌদ্ধ মন্দিরে আগুন দিয়েছিলো। নাসিরনগরে উগ্র মুসলমানরা হামলা চালিয়েছিলো। এক জায়গায় বলবেন ‘আফগানিস্থানে তালেবানরা (মুসলিমরা) বুদ্ধ মূর্তি ভেঙ্গেছে আর আরেক জায়গায় বলবেন হিন্দুরা (শিবসেনারা) বাবরী মসজিদ ভেঙ্গেছিলো- তা তো হয় না।