গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং এবং আমাদের পূর্ব প্রজন্ম :
মুসলমানদের দ্বারা এই হিন্দু নিধনের প্রত্যক্ষ ফল আমাদের বর্তমান প্রজন্মকে ভোগ করতে হয় নি, ভোগ করতে হয়েছে আমাদের পূর্ব প্রজন্মকে। তারা চোখের সামনে দেখেছে, কিভাবে মুসলমানরা তাদের মা বাবা, ভাই বোন আত্মীয় স্বজনকে হত্যা করেছে, বাড়ির মেয়েদের ধর্ষণ করেছে, মৃতদের লাশগুলো রাস্তায় পড়ে থেকে কিভাবে পচেছে আর কাক শকুন কুকুরেরা কিভাবে সেগুলো ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেয়েছে। কিন্তু এই নৃশংসতার ইতিহাস তারা শুধু নিজেরাই ভুলে যেতে চায় নি, পরবর্তী প্রজন্মকেও তারা তা জানতে দিতে চায় নি। তাদের মনোভাব, “কী হবে ঐ পুরোনো ঘাকে খুঁচিয়ে, তার চেয়ে ভুলে যাওয়াই ভালো।” তাই তারা তাদের কোনো বক্তৃতা, বিবৃতি ও লেখায় এই নৃশংসতাকে স্মরণ করে নি, যাতে নতুন প্রজন্ম মুসলমানদের ঐ নৃশংসতা সম্পর্কে জানতে পারে এবং ভবিষ্যতে সাবধান হতে পারে।। তারা মনে করেছিলো, আমরা তো পারি নি, তাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মও এর বদলা নিতে পারবে না। তাই এগুলো নিজেরা ভুলে যাওয়া এবং অন্যদের ভুলিয়ে দেওয়াই ভালো। এই নির্বোধদের প্রতি কিভাবে শ্রদ্ধা রাখা সম্ভব ? প্রতিশোধ নেওয়াটা বড় ব্যাপার না হলেও, ঘটে যাওয়া ঘটনা সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং সেই সাথে মুসলমানদের মন-মানসিকতা সম্পর্কে সচেতন হওয়াও তো দরকার, যাতে ভবিষ্যতে এই ধরণের ঘটনার হাত থেকে হিন্দুরা রক্ষা পায়। আবারও যদি এই ধরণের ঘটনা ঘটানোর সুযোগ মুসলমানরা পায়, তাহলে তো তাদেরই ছেলে মেয়ে নাতি নাতনীরা তার শিকার হবে, এই বুদ্ধিটুকুও তাদের মাথায় ছিলো না ? যারা নিজেদের মা বোনের ধর্ষণ ও পিতার হত্যার প্রতিশোধ নিতে পারে না এবং এজন্য পরবর্তী প্রজন্মকে উৎসাহিত করা বা কমপক্ষে জানানোরও বোধ করে না, তারা কি মানুষ হিসেবে বিবেচিত হওয়ার যোগ্য ?? এদের উদ্দেশ্যেই বোধ হয়, কবি গুরু বলেছিলেন, “ওরে নবীন, ওরে আমার কাঁচা, আধ মরাদের ঘা মেরে তুই বাঁচা।”
একটা কথা প্রচলিত আছে যে, হিন্দুরা পড়তে জানে কিন্তু লড়তে জানে না। তো যে পড়া দিয়ে হিন্দুদের আত্মরক্ষার চেতনার কোনো বিকাশ হয় না, সেই পড়া প’ড়েই বা কী লাভ ? মহাভারতের ঘটনা প্রায় সবাই জানে। প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে গুরু দ্রোণকে বঞ্চিত করার শোধ, দ্রোণ নিজে না নিলেও, দ্রোণই তৈরি করেছিলো পঞ্চপাণ্ডবকে। তারাই গুরু দক্ষিণা হিসেবে দ্রোণের হয়ে যুদ্ধ করে রাজা ধ্রুপদকে পরাজিত ও বন্দী করে ধ্রুপদের অহংকারী মাথাকে দ্রোণের সামনে নিচু করে দিয়েছিলো। আর এই ভাবেই গুরু দ্রোণ তার প্রতিশোধ নিয়েছিলো। রামকৃষ্ণ দেবও হিন্দু সমাজের জন্য নিজে কিছু করতে না পারলেও তৈরি করে গিয়েছিলো স্বামী বিবেকানন্দ সহ বেশ কয়েকজন শিষ্যকে, যারা হিন্দু সমাজকে অনেক উঁচুতে নিয়ে গিয়েছে। এসব কাহিনী কি আমাদের দুর্বুদ্ধিজীবী হিন্দুরা জানে না ? এরা সবই জানে সবই বোঝে, কিন্তু প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য বা আত্মরক্ষার করার জন্য যে ক্ষমতার প্রয়োজন; নিরামিষ ভোজন- তাদের সেই ক্ষমতাকে শুষে নিয়েছে, তারা এসব ভাববে কিভাবে ? এদের উদ্দেশ্যেই শ্রদ্ধেয় শিবপ্রসাদ রায় তার দিব্যজ্ঞান নয়, কাণ্ডজ্ঞান চাই পুস্তিকায় বলেছেন, “ভিখারীর বৈরাগ্য, নপুংসকের ব্রহ্মচর্য আর শক্তিহীনের ভক্তি এরকমই হয়”| অর্থাৎ এদের না আছে আত্মরক্ষার ক্ষমতা, না আছে প্রতিশোধ নেবার শক্তি। যাদের নিজেকে রক্ষা করার কোনো ক্ষমতা নেই, তারা সমাজ-সংসার নিয়ে ভাববে কিভাবে ?
#Copy: Uttam Kumar Das
(খন্ডিত অংশ)