বিজেপিতে মুসলিম অনুপ্রবেশ।

আমার একটি লেখা…..
বিজেপিতে মুসলিম অনুপ্রবেশ
………………………..
বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় কংগ্রেসী সাংবাদিক এম.জে.আকবর বিজেপিতে যোগদানের সংবাদ ফলাও করে ছাপা হয়েছে। এই এম.জে.আকবরের সংক্ষিপ্ত পরিচয় জনসাধারণের গোচরে আনার প্রয়োজনে এই পত্রের অবতারণা।

এম.জে.আকবরের পিতামহের নাম প্রয়াগ। ঊনবিংশ শতকের ষষ্ঠ দশকে বিহারের এক ভোজপুরি গ্রামে হতদরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সত্তরের দশকের মন্বন্তরে কেউ বাঁচেনি। ওই গ্রামে দৈববশে ১১ বছরের শিশু প্রয়াগ বেঁচে রইল। শিশু প্রয়াগ ট্রেনে চেপে এসে চন্দননগর স্টেশনে নেমে পড়ল। সে চন্দননগরের তেলিনীপাড়া পল্লিতে পৌঁছল। কাছেই ভিক্টোরিয়া পাট কারখানা। ওই গরিব বস্তিতে এক চা-এর দোকানের মালিক ওয়ালি মহম্মদ নামে এক বিহারী নিঃসন্তান দম্পতি তাকে আশ্রয় দিলেন। সে চায়ের দোকানের কাজকর্ম শিখলো। ওয়ালির মৃত্যুর পর চায়ের দোকানের মালিকানা প্রয়াগের ওপর বর্তালো। ওয়ালির স্ত্রী তাকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করে বিবাহের ব্যবস্থা করেন। তার নাম রাখা হল রহমতউল্লা। তাঁর পুত্র হলে নাম রাখা হল আকবর আলি। আকবর আলি চন্দননগরের কলেজে শিক্ষালাভ করে ইংরেজি ভাষা রপ্ত করে পাটকলের স্কটসাহেবদের সঙ্গে তার দোস্তি হল, এর মধ্যে এক পুলিশকর্তার দৌত্যে অমৃতসরবাসী মীর হবিবুল্লা নামে এক কাশ্মীরি শাল ব্যবসায়ীর কন্যার সঙ্গে আকবর আলির বিবাহ হল। তাদের এক পুত্রসন্তান জন্মালো। তার নাম রাখা হল মোবাসের জাভেদ আকবর (এম.জে.আকবর)। তাঁর জন্ম জানুয়ারি ১৯৫১ সালে। তিনি কলকাতা বয়েজ, প্রেসিডেন্সি কলেজে শিক্ষালাভ করে সাংবাদিকতায় প্রবেশ করে যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি মল্লিকা নামে এক হিন্দু কন্যার পাণিগ্রহণ করেন। গোধরা কাণ্ডের পর তিনি নরেন্দ্র মোদিকে ‘জল্লাদ’ বলতেও দ্বিধা করেননি। হঠাৎ রাতারাতি তিনি ‘সাম্প্রদায়িক’ নরেন্দ্র মোদির সমর্থক হয়ে গেলেন, এটা দেখে আমার খুব একটা ভালো ঠেকছে না। তিনি রাজীব গান্ধির বিশেষ বন্ধু ছিলেন। কংগ্রেসের টিকিটে মুসলমান প্রধান কিষাণগঞ্জ কেন্দ্রে লোকসভা সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে জয়ী হতে পারেননি। এখন অনেক নেতাই বিজেপিতে ঢুকবেন বলে লাইন দিয়ে বসে আছেন। তবে বিজেপিকে অতি সাবধানে পা ফেলতে হবে। না হলে এর চরম মূল্য দিতে হতে পারে।

প্রসঙ্গত দেশভাগের খলনায়ক জিন্নার ঠাকুরদাদাও ইসলাম কবুল করেছিলেন, আর এক খলনায়ক মহম্মদ ইকবাল-এর ঠাকুরদাও ইসলাম কবুল করেছিলেন। তিনি ছিলেন কাশ্মীরি ব্রাহ্মণ, উপাধি সপ্রু। তিনি গায়ত্রী মন্ত্রকে উর্দুতে অনুবাদ করেছিলেন। অতএব দেখা যাচ্ছে যেই হিন্দু ইসলাম কবুল করেছেন, তাঁদের তৃতীয় জেনারেশন অর্থাৎ নাতিরা দেশের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। এম জে আকবর ইসলাম ত্যাগ করে তার পিতামহের ধর্মে প্রত্যাবর্তন করে বিজেপিতে যোগ দিলে আরও গ্রহণযোগ্য হতো।

(‘দৈনিক স্টেটসম্যান’ পত্রিকায় ১১.০৬.১৪, বুধবারে প্রকাশিত)