গঙ্গেশোপাধ্যায় নব্যন্যায়ের প্রবর্তক। তাঁর জীবৎকাল দ্বাদশ শতকের শেষভাগ (মতান্তরে ১৩শ-১৪শ শতক)। কারও মতে, তিনি ছিলেন মৈথিল ব্রাহ্মণ
এবং দ্বারভাঙ্গা থেকে বারো মাইল দক্ষিণপূর্বে কমলা নদীর তীরে কারিয়ন
গ্রামে তাঁর জন্ম। আবার কারও কারও মতে, তিনি ছিলেন সামাজিক মর্যাদায়
নিকৃষ্ট শ্রেণির ব্রাহ্মণ এবং কাশ্যপগোত্রীয় ‘ছাদন’ বংশে তাঁর জন্ম। পুত্র
বর্ধমানের উল্লেখ অনুসারে তাঁর প্রকৃত নাম গঙ্গেশ্বর।প্রবাদ আছে যে, প্রথম জীবনে গঙ্গেশ ছিলেন মূর্খ, পরে শ্মশানে কালীর
উপাসনা করে মহাপন্ডিত হন। আস্তিক-নাস্তিক উভয় শাস্ত্রে তাঁর গভীর
পান্ডিত্য ছিল। একমাত্র গ্রন্থ তত্ত্বচিন্তামণি তাঁকে অমরত্ব দান করেছে।
ভারতীয় দার্শনিক মনীষার অসামান্য অবদান এ গ্রন্থ বিশ্বের দার্শনিক সমাজেও
সমাদৃত ও আলোচিত। সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিশ্লেষণমূলক অভিনব বিচারপ্রণালী এবং
পরিভাষা উদ্ভাবন করে তিনি নতুন যুগের সূচনা করেন। এর প্রভাব অপরিসীম;
পরবর্তীকালে অন্যান্য শাস্ত্রের আলোচনায়ও এ পদ্ধতি অনুসৃত হয়।
গঙ্গেশ মূলত গৌতম ন্যায়সূত্রের প্রমাণকান্ডেরই আলোচনা করেছেন।
ন্যায়সূত্র অনুযায়ী প্রমাণ চারটি: প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান ও শব্দ। এ
চারটি প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে তিনি চার খন্ডে তত্ত্বচিন্তামণি
(প্রত্যক্ষচিন্তামণি, অনুমানচিন্তামণি, উপমানচিন্তামণি ও শব্দচিন্তামণি)
রচনা করেন। সতেরো শতক থেকে উনিশ শতক পর্যন্ত এ তত্ত্বচিন্তামণির ব্যাখ্যা
রচনা করে নব্যন্যায়ের পরম্পরাকে যাঁরা ক্রমশ সমৃদ্ধতর করেছেন, তাঁদের
মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন পুত্র বর্ধমান, পক্ষধর মিশ্র, রঘুনাথ শিরোমণি, মথুরানাথ তর্কবাগীশ, বাসুদেব সার্বভৌম, জগদীশ তর্কালঙ্কার, গদাধর ভট্টাচার্য
প্রমুখ। এঁদের মাধ্যমেই নবদ্বীপে ন্যায়দর্শনের ব্যাপক চর্চা হয় এবং
সর্বভারতে বাংলা এক বিশেষ পরিচিতি লাভ করে। [মৃণালকান্তি গঙ্গোপাধ্যায়]
এবং দ্বারভাঙ্গা থেকে বারো মাইল দক্ষিণপূর্বে কমলা নদীর তীরে কারিয়ন
গ্রামে তাঁর জন্ম। আবার কারও কারও মতে, তিনি ছিলেন সামাজিক মর্যাদায়
নিকৃষ্ট শ্রেণির ব্রাহ্মণ এবং কাশ্যপগোত্রীয় ‘ছাদন’ বংশে তাঁর জন্ম। পুত্র
বর্ধমানের উল্লেখ অনুসারে তাঁর প্রকৃত নাম গঙ্গেশ্বর।প্রবাদ আছে যে, প্রথম জীবনে গঙ্গেশ ছিলেন মূর্খ, পরে শ্মশানে কালীর
উপাসনা করে মহাপন্ডিত হন। আস্তিক-নাস্তিক উভয় শাস্ত্রে তাঁর গভীর
পান্ডিত্য ছিল। একমাত্র গ্রন্থ তত্ত্বচিন্তামণি তাঁকে অমরত্ব দান করেছে।
ভারতীয় দার্শনিক মনীষার অসামান্য অবদান এ গ্রন্থ বিশ্বের দার্শনিক সমাজেও
সমাদৃত ও আলোচিত। সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিশ্লেষণমূলক অভিনব বিচারপ্রণালী এবং
পরিভাষা উদ্ভাবন করে তিনি নতুন যুগের সূচনা করেন। এর প্রভাব অপরিসীম;
পরবর্তীকালে অন্যান্য শাস্ত্রের আলোচনায়ও এ পদ্ধতি অনুসৃত হয়।
গঙ্গেশ মূলত গৌতম ন্যায়সূত্রের প্রমাণকান্ডেরই আলোচনা করেছেন।
ন্যায়সূত্র অনুযায়ী প্রমাণ চারটি: প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান ও শব্দ। এ
চারটি প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে তিনি চার খন্ডে তত্ত্বচিন্তামণি
(প্রত্যক্ষচিন্তামণি, অনুমানচিন্তামণি, উপমানচিন্তামণি ও শব্দচিন্তামণি)
রচনা করেন। সতেরো শতক থেকে উনিশ শতক পর্যন্ত এ তত্ত্বচিন্তামণির ব্যাখ্যা
রচনা করে নব্যন্যায়ের পরম্পরাকে যাঁরা ক্রমশ সমৃদ্ধতর করেছেন, তাঁদের
মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন পুত্র বর্ধমান, পক্ষধর মিশ্র, রঘুনাথ শিরোমণি, মথুরানাথ তর্কবাগীশ, বাসুদেব সার্বভৌম, জগদীশ তর্কালঙ্কার, গদাধর ভট্টাচার্য
প্রমুখ। এঁদের মাধ্যমেই নবদ্বীপে ন্যায়দর্শনের ব্যাপক চর্চা হয় এবং
সর্বভারতে বাংলা এক বিশেষ পরিচিতি লাভ করে। [মৃণালকান্তি গঙ্গোপাধ্যায়]