এতদিন বাংলাদেশ একটা ডিপ্লোমেটিক চালাকি করে আসছিল। সৌদি সম্মেলনের পর সেই মুখোশটা খুলে ফেলে ‘সুন্নি মুসলমান’ হয়েছে। শিয়া ইরানীদের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এখন স্বাধীনতার ৪৪ বছর বাদে নিজের আত্মপরিচয় ঠিক করতে পেরেছে- এটা সুন্নী মুসলমানদের দেশ! এখানে শ্যামলকান্তি ভদ্রের মত কোন দরিদ্র হিন্দু শিক্ষক তো কোন ছাড়- শিয়া, আহমদিয়া মুসলমানদেরই আর ভরসা নাই…।
শ্যামলকান্তি ভদ্র গরীব স্কুল মাস্টার তায় হিন্দু। হযরত সেলিম ওসমান হচ্ছে হযরত ওমরের উত্তরসুরী। হযরত ওমর সিরিয়ান খ্রিস্টানদের চুক্তি করতে বাধ্য করেছিল এই মর্মে, তারা মুসলমানদের সমকক্ষ মনে করবে না, মুসলমানদের সামনে নতজানু হয়ে থাকবে, তাদের কথার উপর কথা বলবে না…।
হযরত ওমরের উত্তরসূরীরা ৪৭ সালে শিক্ষায় অর্থে বিত্তে ধনী হিন্দুদের পিটিয়ে, ভয় দেখিয়ে ভাগিয়ে দিয়ে ‘মুসলমানের দেশ’ বানানো পর ৬৫ আর ৭১ সালে বাকী হিন্দুদের গণিমতের মালে পরিণত করেছিল। তারপর স্বাধীনতার গেল ৪৪ বছরে একবার রাম সেজে মেরেছে আরেকবার রাবণ সেজে মেরেছে।
শিক্ষক শ্যামলকান্তি ভদ্রের ঠাঁই হবে না মদিনা সনদের দেশে- এই সোজা কথাটা না বুঝলে মামলার পর মামলা দিয়ে বুঝাতে হবে। রসরাজের জামিন হয় না কিন্তু আকাম করা জাহাঙ্গীরের জামিন আটকায় না। এদেশের মানুষ এখন হযরত ওমরের বংশধর মনে করে নিজেকে। হযরত শাহজালালের বংশধর…। ওয়াজ মাহফিল থেকে শ্লোগান উঠে, ‘শাহজালালের তলোয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার’!
শামসুর রাহমানের মত অতখানি আস্থার জায়গা আর নেই যে কেউ বলবে, শ্যামলকান্তি যাবে না…।