‘অল ইন্ডিয়া মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ -এটি ভারতের একটি মুসলিম ধর্মীয় সংগঠন। ভারতের ‘সংখ্যালঘু’ মুসলিমদের এরকম বাহারী নামের আরো বহু সংগঠন আছে যাদের ভয়ে সালমান রুশদীর ভারতে প্রবেশ নিষিদ্ধ হযে যায়। তসলিমা নাসরিনের বইমেলাতে ঢুকতে দেয়া হয় না। তাকে কোলকাতা থেকে বের করে দেয়া হয়। বসিরহাটের মত বড় ধরণের দাঙ্গা বাধিয়ে দেয়। তসলিমা নাসরিনকে শনিবার ঔরঙ্গাবাদ বিমানবন্দর থেকেই পুলিশ মুম্বাই ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে এইরকম ‘সংখ্যালঘুদের একটি ধর্মীয় সংগঠন’ অল ইন্ডিয়া মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনদের বিক্ষোভের মুখে। লেখিকা ভ্রমণ করতে গিয়েছিলেন অজিন্ঠা এবং ইলোরাতে। কিন্তু মুসলিম মৌলবাদীরা তসলিমা নাসরিনকে সেখানে প্রবেশ করতে দিবে না কারণ তিনি ইসলাম ধর্মের সমালোচনা করেছেন। নারীদের স্বাধীনতার কথা লেখেন। সেটা লিখতে গিয়ে মুসলিম নারীদের ইসলামী আইনে কি পরিমাণ ভুগতে হয় তা তুলে ধরেন। এসব কারণে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে। তাই তারা তসলিমাকে ঔরঙ্গাবাদে প্রবেশ করতে দিবে না…।
এই মুহূর্তে ভারতে চিকিৎসা নিচ্ছেন কওমী গডফাদার আল্লামা আহমদ শফি। তিনি নারীদেরকে তেঁতুল দেখলে লালা ঝরার মত পুরুষের কাম জাগ্রত হয় তাই তাদের ঘরে বন্দি হয়ে থাকার কথা বলেছেন প্রকাশ্যে। শ্রমজীবী নারীদের বেশ্যার সঙ্গে তুলনা করেছেন। ইসলামের বিরুদ্ধে ভারতের হিন্দুদের ষড়যন্ত্র, ভারতের মুসলমানদের তাদের দেশের বিরুদ্ধে জিহাদ করতে বলেছেন। এহেন একজন ব্যক্তি এখন ভারতের চিকিৎসা নিচ্ছেন। ভারতের নারীবাদীরা একজন অসুস্থ ধর্মীয় নেতার প্রবেশ ঠেকাননি। ভারতের হিন্দু ধর্মীয় কোন দল তার প্রবেশ ঠেকাতে বিক্ষোভ করেনি। এটি নিশ্চয় ভারতের বহু ধর্মমতের সহবাস্থানের একটা গর্ব। কিন্তু বার বার ভারত যদি মুসলিম মৌলবাদীদের কাছে নতজানু হয়ে পড়ে, বার বার সেক্যুলাররা এইসব বদমাশ মৌলবাদীদের আচরণে না দেখার ভান করেন- তাহলে দিকে দিকে হিন্দুত্ববাদ জেগে উঠার দায় কে নিবে? তসলিমা নাসরিনকে যখন ইসলামী মৌলবাদীরা কোলকাতা থেকে বের করে দিয়েছিলেন তখন শ্রীজাতদের কি উচিত ছিল না তসলিমার পক্ষে দাঁড়ানো?
আমি চিরকাল মাইনরিটির পক্ষে। তাই ভারতের মুসলমানদেরও পক্ষে। কিন্তু কোন মুসলিম মৌলবাদী ধোঁকা দিয়ে সেই সমর্থন আদায় করতে পারবে না। এই সহজ অংকটা কেন ভারতের ধর্মনিরপেক্ষবাদীরা বুঝতে পারছেন না?