গীতা মাহাত্ম্যে রাধা: প্রকৃত সত্যটা কী ?
আমি যখন জানতে পারলাম যে, হিন্দু শাস্ত্রে রাধা-কৃষ্ণের প্রেম বলে কিছু নেই এবং এর স্বপক্ষে যখন সমস্ত রকম তথ্য প্রমাণ দিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করলাম, তখন যুক্তিহীন কিছু লোক ছাড়া, এর বিপক্ষে কেউ কোনো কথা বলতে পারে নি, বরং শত শত লোক প্রকৃত সত্য জানতে পেরে আমাকে প্রশংসার বাণীতে ভাসিয়ে দিয়েছে; কারণ, যারা যুক্তি বোঝে এবং যুক্তি মানে তাদের পক্ষে আমার লেখার প্রশংসা করা ছাড়া, আমার মতের বিরুদ্ধে কিছু বলার ক্ষমতা খুব কমই আছে বা একেবারেই নেই।
যা হোক, রাধা-কৃষ্ণের প্রেম নেই ব’লে প্রমাণ ক’রে যে দুটি পোস্ট আমি লিখেছি, সেই দুটি পোস্টের স্বপক্ষে আমার প্রধান অস্ত্র ছিলো- ৪ বেদ, রামায়ণ, মহাভারত এবং গীতার ৭০০ শ্লোক, যেগুলো হিন্দু ধর্মের প্রামান্য গ্রন্থ; কিন্তু যাতে রাধা-কৃষ্ণের প্রেমের অস্তিত্বের কথার উল্লেখ দূরে থাক, রাধার অস্তিত্ত্বেরই কোনো উল্লেখ নেই। কিন্তু মাঝে মাঝে আমাকে এই বিষয়টি ভাবাতো যে, তাহলে গীতা মাহাত্ম্যে রাধার কথা এলো কোথা থেকে ? শেষ পর্যন্ত এই সত্য জানতে, গীতা মাহাত্ম্য নিয়ে গবেষণা শুরু করি এবং যা পেয়েছি, তা ই আজকের এই পোস্টের বিষয়বস্তু।
গীতা মাহাত্ম্যে মোট শ্লোকের সংখ্যা ৮৪ টি। এর মধ্যে ১ থেকে ৪৩ এবং শেষের দিকের ৮১ থেকে ৮৪ নং শ্লোক দুই জন ঋষির কথা বার্তা এবং ৪৪ থেকে ৮০ নং শ্লোক সরাসরি শ্রীকৃষ্ণের কথা। শ্রীকৃষ্ণের বলা ৩৭টি শ্লোকে কোনো রকম ঝামেলা নেই, এগুলো নিয়ে কারো কোনো প্রশ্ন তোলার ক্ষমতাও নেই। কিন্তু ঋষিদের বলা অংশে বেশ কিছু ঝামেলা আছে, এখানে প্রশ্ন তোলার সুযোগ আছে এবং ঋষিদের বলা অংশের মধ্যেই আছে রাধার কথা ৪৩ নং শ্লোকে।
রাধার কথা পোস্টের শেষের দিকে বলবো, তার আগে গীতা মাহাত্ম্যের অন্যান্য বিষয়গুলো সম্পর্কে কিছু আলোচনা করে নিই।
গীতা মাহাত্ম্যের শ্রীকৃষ্ণের বলা অংশের ৭৭ নং শ্লোকে বলা আছে,
“চৌর্য কৃত্বা চ গীতায়াঃ পুস্তকং যঃ সমানয়েৎ।
ন তস্য সফলং কিঞ্চিৎ পঠনঞ্চ বৃথা ভবেৎ।।”
এর অর্থ হলো- চুরি করে যে ব্যক্তি গীতা গ্রন্থ আপন গৃহে আনে, তার সব ফলই বৃথা হয় এবং গীতা পাঠেও তার কোনো ফল হয় না।
এর বিপরীতে, ঋষিদের বলা অংশের ৩৭ নং শ্লোকে কী বলা আছে দেখুন-
“রত্নপূর্ণাং মহীং সর্বাং প্রতিগৃহ্যাবিধানতঃ।
গীতা পাঠেন চৈকেন শুদ্ধ স্ফটিকবৎ সদা।”
এর অর্থ- যদি কেউ অন্যায়ভাবে রত্নপূর্ণ পৃথিবীকেও হরণ করে, তবুও একবার মাত্র গীতা পাঠ করলে তার সব পাপ মাফ।
এখন আপনিই চিন্তা করুন, শ্রীকৃষ্ণের বলা কথার সাথে কি এই কথার মিল আছে ?
শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, গীতা পুস্তকও চুরি করা যাবে না, আর ঋষিরা বলছে সমগ্র পৃথিবীর সম্পদ হরণ করলেও গীতা পড়লে সব মাফ! এই দুই কথা কি এক হলো ? তাছাড়াও সনাতন ধর্মের নীতির সাথে কি এই ৩৭ নং শ্লোক যায় ?
কেননা যেখানে সনাতন ধর্মের মূল নীতি, যে নীতির কারণেই সনাতন ধর্মকে ‘সনাতন মানবধর্ম’ বলা হয়, সেই নীতি হলো-
‘পরদ্রব্যেষু লোষ্ট্রবৎ’
অর্থাৎ, পরের দ্রব্যকে মাটির ঢেলা বিবেচনা করবে, সেখানে এই শ্লোকে পরের সম্পদকে হরণ করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে! এটাকে কি কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় ?
এছাড়াও ঋষিদের বলা অংশের ৩১ নং শ্লোকে যা বলা আছে, তা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। কেননা, এখানে বলা আছে-
“বিস্ফোটকাদয়ো দেহে না বাধন্তে কদাচনঃ”
অর্থাৎ, যিনি প্রতিদিন গীতার অর্চনা করেন, তার দেহে কখনো ফোঁড়া প্রভৃতি চর্মরোগ হয় না।
অতি ভক্তির প্রাবল্যে কারো কারো পক্ষে হয়তো এই কথা বিশ্বাস করা সহজ, কিন্তু এই কথাকে যুক্তি তর্ক এবং বিজ্ঞানের গবেষণাগারে ফেলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।
এবার আসি রাধার প্রসঙ্গে, পুরো গীতার ৭০০ শ্লোকের কোথাও রাধার কোনো উল্লেখ না থাকলেও, রাধার কথা উল্লেখ করা হয়েছে গীতা মাহাত্ম্যের ৪৩ নং শ্লোকে, যেটা ঋষিদের বলা প্রথম অংশের শেষ শ্লোক। এই শ্লোকেই বলা হয়েছে,
“যত্র গীতা বিচারশ্চ পঠনং পাঠনং তথা।
মোদতে তত্র শ্রীকৃষ্ণো ভগবান রাধয়া সহ।।”
এর অর্থ বলা হয়েছে, যেখানে গীতা পাঠ করা হয়, সেখানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, শ্রী রাধিকাসহ আনন্দে বিরাজ করেন।
গীতা মাহাত্ম্য সম্পর্কে বেশি কিছু না জেনে শুধু এই অংশটুকু পড়লে যে কারো মনে হবে যে, গীতায় তো রাধার কথা বলা আছে, সুতরাং রাধার সাথে কৃষ্ণের প্রেম ছিলো বা রাধা-কৃষ্ণ সম্পর্কে যা বলা হয় তা সত্যি।
কিন্তু এর উপরের ৪২ নং শ্লোক পড়লেই আপনার সেই ভুল ভেঙ্গে যাবে বা এই শ্লোকের উপর ভিত্তি করে আমি যে প্রশ্ন করবো, তার উত্তর আপনি দিতে পারবেন না। কেননা, সেই ৪২ নং শ্লোকে বলা আছে,
“গোপালো বালকৃষ্ণোহপি নারদ ধ্রুব পার্ষদৈঃ।
সহায়ো জায়তে শীঘ্রং যত্র গীতা প্রবর্ততে।।”
এর অর্থ, যেখানে গীতা পাঠ করা হয়, সেখানে নারদ, ধ্রুব প্রভৃতি ভক্তদের সাথে শ্রীকৃষ্ণ গিয়ে উপস্থিত হন বা সেই ভক্তের সহায় হন।
এই ৪২ নং শ্লোকের কথাগুলো কেনো বলা হলো, তার উপযুক্ত কারণ আপনি পাবেন, যদি গীতা মাহাত্ম্যের শ্রীকৃষ্ণের বলা ৪৪ থেকে ৪৬ নং শ্লোকের অর্থগুলো আপনি পড়েন; কেননা, এই তিনটি শ্লোকের অর্থে বলা আছে,
“ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বললেন, হে অর্জুন, গীতাই আমার হৃদয়, গীতাই আমার সার পদার্থ, গীতাই আমার শ্রেষ্ঠ জ্ঞান এবং গীতা আমার অব্যয় জ্ঞান স্বরূপ। গীতা আমার উত্তম স্থান, গীতা আমার পরম পদ, গীতা আমার পরম গোপনীয় বস্তু, গীতা আমার পরম গুরু, গীতার আশ্রয়েই আমি থাকি, গীতাই আমার পরম গৃহ এবং গীতার জ্ঞান আশ্রয় করেই আমি জগৎকে পালন করি।”
শ্রীকৃষ্ণের কাছে গীতার জ্ঞানের যেহেতু এত মর্যাদা বা গুরুত্ব, সেহেতু যেখানে গীতার আলোচনা হয়, সেখানে শ্রীকৃষ্ণ তার ভক্ত পার্ষদসহ আধ্যাত্মিকভাবে সূক্ষ্ম দেহে উপস্থিত থাকতেই পারেন, যে কথা ৪২ নং শ্লোকে বলা হয়েছে। এখানে বিষয়টি আরো ভালো করে খেয়াল করুন, ৪২ নং শ্লোকে বলা হচ্ছে, শ্রীকৃষ্ণ তার ভক্ত পার্ষদসহ গীতার আলোচনা স্থানে উপস্থিত থাকেন, রাধাও তো কৃষ্ণের একজন ভক্তই এবং রাধা যদি কৃষ্ণের সেইরকম ভক্ত হয়েই থাকে, তাহলে তো ৪২ নং শ্লোকে যাদের উপস্থিত থাকার কথা বলা হয়েছে তাদের মধ্যে রাধাও আছে। তাই যদি হয়, তাহলে শুধু রাধার কথা আলাদা করে বলার জন্য ৪৩ নং শ্লোকটি লিখা হলো কেনো ?
শ্রীকৃষ্ণের সাথে তার ভক্তদের উপস্থিত থাকার কথা ৪২ নং শ্লোকে বলাই আছে, তারপরও ৪৩ নং শ্লোকে আলাদা করে রাধাকে সাথে নিয়ে কৃষ্ণের উপস্থিত থাকার কথা বলাটা কি এটা প্রমান করে না যে, এর পেছনে নিশ্চয় কোনো বিশেষ ষড়যন্ত্র লুকিয়ে আছে ?
১২০০ খ্রিষ্টাব্দের পর থেকে হিন্দু ধর্মীয় গ্রন্থগুলোর বিকৃতি শুরু হয় এবং তারপর ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণের মাধ্যমে আগমন ঘটে যুবতী রাধার এবং সেই যুবতী রাধার সাথে যুবক কৃষ্ণের অনৈতিক প্রেমের। প্রায় ৩০০ বছর ধরে এই অপপ্রচার চলার পর আবির্ভাব ঘটে চৈতন্যদেবের এবং তার ভাবাদর্শ, হিন্দু ধর্মের প্রকৃত সত্যকে মানুষের সামনে তুলে ধরার বিপরীতে হিন্দু ধর্মের গ্রন্থগুলোর বিকৃতিকে স্বীকৃতি দিয়ে যায়।
কেউ একজন কমেন্ট বক্সে আমাকে প্রশ্ন করেছিলো, কেনো আপনি চৈতন্যদেবকে সহ্য করতে পারেন না ? আমি এই কারণেই চৈতন্যদেবকে সহ্য করতে পারি না; কারণ, সে প্রকৃত সত্যকে উদঘাটিত না করে মিথ্যাকে হিন্দু সমাজে ছড়িয়ে দিয়ে গেছে, যেটা ৫০ বছর ধরে লাগাতার চেষ্টা করলেও হিন্দু সমাজ থেকে উপড়ে ফেলা যাবে কি না সন্দেহ।
তাছাড়াও চৈতন্যদেবের কোনো আদর্শ হিন্দু সমাজের জন্য উপযুক্ত নয়, চৈতন্যদেবের আদর্শকে যে সমাজ ফলো করবে, সেই সমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে এবং অলরেডি কিছু কিছু ক্ষেত্রে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
যেমন- চৈতন্যদেবের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে কেউ যদি তার বিবাহিত স্ত্রীকে ফেলে রেখে চলে যায়, তাহলে সেই স্ত্রীর কী হবে ? বা সবাই যদি সংসার ত্যাগ করে সন্ন্যাসী হয়ে যায় এবং কেউ সন্তানের জন্ম না দেয়, তাহলে সেই সমাজ কতদিন টিকে থা্কবে ? এছাড়াও আছে নিরামিষ খাবারের পরামর্শ, যেটা আস্তে আস্তে একটা মানুষকে শুধু নপুংসকই নয়, পরিণত করে একটা জবুথবু জড় মাংস পিণ্ডে, এই ধরণের লোকের কাছ থেকে আপনি সমাজের জন্য কী আশা করতে পারেন ?
কেউ কেউ বলতে পারেন, নরেন্দ্র মোদীও তো নিরামিষ খান, তিনি কি হিন্দু সমাজ বা দেশের জন্য কাজ করছেন না ?
অবশ্যই করছেন। কিন্তু সবার পক্ষে কি নরেন্দ্র মোদী হওয়া সম্ভব, না সবার পক্ষে নরেন্দ্র মোদীর মতো হিন্দুত্ববাদী হওয়া সম্ভব ?
অধিকাংশ লোক সাধারণ এবং আমাদেরকে সেই দৃষ্টিকোণ থেকে সকল বিষয় বিবেচনা করতে হবে। মন্ত্রীরা বুদ্ধি খাটায়, তাই তারা নিরামিষ খেলে কোনো সমস্যা নেই; কারণ, তাদেরকে যুদ্ধ ক্ষেত্রে গিয়ে যুদ্ধ করতে হয় না; কিন্তু সৈনিকদেরকে নিরামিষ খেলে চলবে না, তাদেরকে মাংসাশী হতে হবে এবং বাঘ সিংহের মতো হিংস্র হতে হবে, তবেই তারা যুদ্ধ করে শত্রুকে মেরে দেশকে রক্ষা করতে পারবে। সমাজের অধিকাংশ লোক এই সাধারণ সৈনিকদের মতো, তাদেরকে নিরামিষ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে হীন দুর্বল ও নপুংসক বানালে চলবে না। তাদের সেক্স করার পর্যাপ্ত ক্ষমতা থাকতে হবে, তার মাধ্যমে তাদেরকে নারীদেরকে সন্তুষ্ট রাখতে হবে, সন্তানের জন্ম দিতে হবে এবং সমাজ ও ধর্মের ক্ষতি দেখলে রাগান্বিত হতে হবে, তাহলেই শুধু রক্ষা পাবে সেই সমাজ। চৈতন্যদেবের বৈষ্ণব ধর্মে এর একটিও নেই। এর বিপরীতে চৈতন্যদেবের আদর্শ হলো,
“মেরেছে কলসীর কানা, তাই বলে কি প্রেম দেবো না ?”
মুসলমানরা এখন কলসীর কানা মারে না, মারে বুলেট আর চালায় চাপাতি, তাতে বেঁচে থাকারই তো কোনো সুযোগ নেই, আপনি আক্রমনকারীকে প্রেম দেবেন কিভাবে, কখন ?
চৈতন্যদেব অসম্ভব মেধাবী ছিলেন, চাইলেই তিনি সংস্কৃত রামায়ণ, মহাভারত, বেদ, ভাগবত পড়ে জানতে পারতেন যে, সেগুলোতে রাধার অস্তিত্বের এবং রাধা-কৃষ্ণের প্রেমের কোনো বিষয়ের উল্লেখ আছে কি না ? কিন্তু তিনি তা না করে তার সময়ে প্রচলিত জয়দেবের গীত গোবিন্দ এবং বড়ু চন্ডীদাসের যাত্রাপালা শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের কাহিনীকেই বিশ্বাস করে নিয়েছিলেন এবং স্বীকার করে নিয়েছিলেন রাধা-কৃষ্ণের যুগল মূর্তিকে, যার উপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে চৈতন্যদেবের ভক্তগন, চৈতন্যদেবকে একেবারে রাধা-কৃষ্ণের যুগল অবতার বানিয়ে দিয়েছে! কিন্তু তাদের এই দাবীর পেছনে যে হিন্দু শাস্ত্রের কোনো গ্রন্থে কোনো প্রমান নেই, সেটা সম্ভবত একজন চৈতন্য ভক্তও জানে না।
যা হোক, কয়েক শত বছরের মিথ্যা প্রচারের ফলে রাধা যখন জনমানসে গভীরভাবে প্রোথিত, কিন্তু হিন্দু শাস্ত্রের প্রাচীন কোনো গ্রন্থে রাধার কোনো উল্লেখ নেই, এটা বুঝতে পেরে কোনো চালাক হিন্দু, প্রথম যখন গীতা প্রিন্ট করা হয়, সম্ভবত তখন ঋষিদের কথা বার্তার শেষ অংশে ৪৩ নং শ্লোকটি নিজে লিখে যুক্ত করে দেয়, যার মাধ্যমে আপাত দৃষ্টিতে যাতে এটা প্রমান হয় যে, রাধা বলে কেউ ছিলো! কারণ, সবাই তো আর এত ভেতরে গিয়ে এত গভীরভাবে বিচার বিশ্লেষণ করবে না।
গীতা মাহাত্ম্যে রাধার এই ষড়যান্ত্রিক উপস্থিতির বিষয়টি সম্ভবত বুঝতে পেরেছিলেন ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীল প্রভুপাদ, তাই তিনি তার গীতা, যেটা “শ্রীমদ্ভগবদগীতা যথাযথ” নামে পরিচিত, তাতে তিনি যে গীতা মাহাত্ম্যের অল্প কয়েকটি শ্লোক উল্লেখ করেছেন, তাতে রাধা সম্পর্কিত এই ৪৩ নং শ্লোকটি নেই।
সব দিক বিবেচনায় এটা প্রমাণ হয় যে, গীতা মাহাত্ম্যে ঋষিদের কথোপকথনের অংশটুকু একেবারে ভেজাল মুক্ত নয়, এই ভেজালের মধ্যে একটি সম্পূর্ণ ভেজাল বা প্রক্ষিপ্ত হলো ৪৩ নং শ্লোক, যার মাধ্যমে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিকভাবে প্রমান করার চেষ্টা করা হয়েছে যে রাধা আছে।
গীতা মাহাত্ম্যে রাধা কোথা থেকে এলো, আশা করছি সেই বিষয়টি আমার পাঠক বন্ধুদের কাছে পরিষ্কার হয়েছে এবং তাদের কাছে প্রকৃত সত্য উদঘাটিত হয়েছে।