ওরা আমাদের গান গাইতে দেয় না, নিগ্রো ভাই আমার পল রোবসন, গানটা লিখেছিলেন সুমন চট্টোপাধ্যায়। সুমনের আত্মজীবনী হয়ে ওঠা গান পড়ার আগে পর্যন্ত আমার কাছে একটা ধাঁধা হিসেবেই থেকে গেছিল বিষয়টা কারণ এই গানই আমি এবং আমাদের প্রজন্মের সবাই শুনেছিলাম অন্য ভার্শনেও, সেটিই বেশি জনপ্রিয় ছিল, কারণ ইতিউতি সিপিএমের প্রোগ্রামে বাজানো হত, রুমা গুহঠাকুরতার ক্যালকাটা ইয়ুথ কোয়্যারের গাওয়াঃ ওরা জীবনের গান গাইতে দেয় না, শিল্পী সংগ্রামী পল রোবসন।
সুমনের গান রুমা গুহঠাকুরতা চুরি করেছিলেন। সুমন যদি সেযুগের না হয়ে আজকে ফেসবুকের যুগে লিখতেন (ফেসবুকেও লেখেন বটে, কিন্তু এ সুমন তো সেই সুমন নয়, এ সুমন সেই অতীতের সুমনের প্রেতচ্ছায়া মাত্র। আমি একবার লিখেছিলাম, গান তো লিখত সুমন চট্টো, কবীর সুমন ভান করে। শুনে দ্যাখো আজ স্টেনগান তার, এস্কিমো যেন চানঘরে।), সম্ভবত ওই সৌভাগ্যটুকুও হত না। আমার লেখা উপন্যাস ছায়া দীর্ঘ হয় থেকে সম্প্রতি ফেসবুকের একটি পরিচিত পাগল চুরি করেছেন। ইনি উত্তর ভারতীয় স্টাইলে বাংলায় একটি কায়স্থ মহাসভা বানিয়েছেন (লক্ষ্য করুন, সমাজ নয়, মহাসভা। বাংলায় কাস্ট ভিত্তিক সংগঠন চিরকালই ছিল, তাদের সমাজ বলা হত এবং হয়। বৈদ্য সমাজ এখনও আছে), এবং বাঙালির সঙ্গে উত্তর ভারতের একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে বিশ্বাসী (ইনি রাজপুত বলে নিজেকে দাবি করেন শুনেছি, কায়স্থরা সবাই রাজপুত), এবং ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের হিন্দু বীরদের বীরত্বগাথা মাৎস্যন্যায় গ্রুপে একবার শেয়ার করতে গিয়ে একটু লাঞ্ছিত হয়েছিলেন। কিন্তু ব্যাপার হচ্ছে, দেখুন আমার কপাল। এর আগে এক পরিচিত মাতাল আমার একটি মুজিব সংক্রান্ত লেখা চুরি করেছিলেন। এবার একটি পাগলছাগল চুরি করেছেন।
পূর্বসূরীদের দেখি আর ভাবি, কি খারাপ দিনকাল পড়েছে। আমিও নিশ্চয়ই খুব ওঁচা একজন লেখক, নইলে আমার কোনও লেখাই একটা ভদ্রলোকে চুরি করলনা আজ পর্যন্ত!