সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পর বলির পাঁঠা হচ্ছেন সুরেন্দ্র সিন্হা?
দেশ যদি সিন্হার মত একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার পেতো তাহলে দেশের অর্ধেক সমস্যা এমনিতেই সমাধান হয়ে যেতো?
প্রধান বিচারপতি ও সরকারের মধ্যে ফাইটে কেউ জিতবেন না, হারবে দেশ?
দেশ স্বাধীন না হলে উনি প্রধান বিচারপতি হতেন না, এ বক্তব্য সঠিক, কিন্তু যারা এটি বলছেন তারা কি হতেন?
প্রথমে বলা হলো, তিনি শান্তি কমিটির লোক। তিনি রাজাকার। কবে, কিভাবে তিনি রাজাকার হলেন, তা কিন্তু কেউ জানেনা, বলে দিলেই হলো। কোন মিডিয়ায় নাকি এসেছে, সিনহা নিজেই বলেছেন জীবন বাঁচাতে নাকি তিনি একাত্তরে শান্তি কমিটিতে ছিলেন এবং সাধ্যমত মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেছেন। রায় পছন্দ হলোনা, তাই তিনি শান্তি কমিটির লোক বা রাজাকার হয়ে গেলেন। ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে তিনি বিএনপি সমর্থক হয়ে গেলেন? কেউ কেউ এও বললেন, তোলে তোলে তিনি বিএনপি’র সাথে হাত মিলিয়েছেন। এরপর এলো, তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে অসম্মান করেছেন? এই অভিযোগের ফলে বঙ্গবন্ধু ভক্তরাও ক্ষেপে গেলেন। যারা এটা রটিয়েছেন তাদের উদ্দেশ্য সফল হলো। প্রধান বিচারপতি একটু কোনঠাসা হলেন। আর একদল বললেন, এই সরকার তাকে প্রধান বিচারপতি বানিয়েছেন, প্রতিদানে উনি কি দিলেন সরকারকে? মোটামুটিভাবে সরকারি লোকজনই তাকে সরকারের প্রতিপক্ষ বানিয়ে দিলেন।
অথচ ৭৯৯ পাতার রায়ে ৩২বার জাতির জনক শব্দটি আছে। রায়ের প্রধান বিচারপতির অংশে আছে ২১বার। সিনহা অন্তত: তিনবার জাতির জনকের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন। একথা ঠিক, বঙ্গবন্ধু দেশটি স্বাধীন করে না দিলে সিন্হা প্রধান বিচারপতি হতেন না, এবং এ-সত্য তিনি জানেন। হয়তো তার আগের বিশ জনের কেউই হতেন না? বলা হলো, সিন্হা বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষ করে বলেছেন, এক ব্যক্তির নির্দেশে দেশ স্বাধীন হয়নি? অথচ তিনি লিখেছেন, কোন দেশ বা জাতি একব্যক্তি দিয়ে গড়ে ওঠেনা, কিংবা একজন দ্বারা গঠিতও হয়না। আমরা যদি সত্যিই সোনার বাংলাকে বাঁচাতে চাই, তাহলে অবশ্যই আমাদের আমিত্বের আসক্তি ও এ আত্মঘাতী অভিপ্রায় থেকে মুক্ত হতে হবে।