-Susupto Pathok
রাঙ্গামাটির রাঙ্গাপানি এলাকায় একজন পাহাড়ীর বিকাশের দোকানে সেটেলার বাঙালী কাস্টমারের সঙ্গে ঝগড়া বাধে পহাড়ী দোকানদারের। সেই ঝগড়ার জেরে সেনা ক্যাম্প থেকে সেনাবাহিনী এসে উপস্থিত হয় এলাকায়। সারাদেশে এরকম ঝগড়া বিবাদ দোকানদার কাস্টমারে রোজ লাগছে। কখনো কখনো সেটা থানা পুলিশ পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছায়। এটা একটা স্বাভাবিক অবস্থা। কিন্তু পাহাড়ে বিষয়টা এরকম স্বাভাবিক নয়। মনে করুন আপনি পাহাড়ের একজন বাঙালী, আপনি জানেন আপনার জন্য আছে সেনা ক্যাম্প, কোন পাহাড়ীর সঙ্গে আপনার হাতাহাতি লাগলেও ক্যাম্পে আপনার হয়ে আপনার ভাই-বেরাদাররা খবর পৌঁছে দিবে। আপনি জন্মগতভাবেই জানেন সেনা ক্যাম্প একজন পাহাড়ীর চাইতে আপনাকে বা আপনাদেরই পাতেই বেশি ঝোল টানবে। অপর পক্ষে একজন পাহাড়ী জন্মগতভাবেই জানে ক্যাম্প থেকে ফৌজ এসে তার প্রতিবেশী বাঙালীর পক্ষেই কথা বলবে। এই বাস্তবতা জানে বলেই সেটেলার বাঙালীদের সঙ্গে পাহাড়ীরা বিবাদে যেতে চায় না। একবার চিন্তা করে দেখুন তো, একটা দেশে, যে দেশ আমার জন্মভূমি, সেখানে আমি আমার প্রতিবেশী, তারই মত সমান নাগরিক আমি, তবু আমি জানি এখানে আমার অধিকার খাটবে কম। বিষয়টা আমাদের জন্য কেমন হতো?
রাঙাপানিতে দোষ কাদের, পাহাড়ী মহিলারা সেনা সদস্যদের গায়ে ধাক্কা দিয়েছিলো কিনা- এসব নির্দিষ্ট একটি ঘটনার বিশ্লেষণ হতে পারে। কিন্তু দিনের পর দিন পাহাড়ী বাঙালীর মাঝখানে সেনাবাহিনী থেকে যদি কাউকে শক্তি যোগায় এককভাবে সেটি কি মেনে নেওয়া যায়? বাংলাদেশের কোথায় সেনা ছাউনি আছে বলেন তো? আপনার আমার সন্তান খেলতে গিয়ে ঝগড়া লাগলে আপনি যদি ভীত হয়ে পড়েন ক্যাম্প থেকে ধমক খেতে হতে পারে- এরচেয়ে বিব্রতকর আর কি হতে পারে? জাতিসংঘে আমাদের সরকার বার্মাকে রোহিঙ্গা নিধেনের জন্য দায়ী করে কঠর সমালোচনা করেছে। মাথামোটা বার্মা বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে শিখতে পারত কেমন করে সংখ্যালঘুদের টাইট দিতে হয়। গত চল্লিশ বছরে কি পরিমাণ জমি হারিয়েছে পাহাড়ীরা, কত শতাংশ বাস্তুচ্যুত হয়ে শরণার্থী হয়েছে সে হিসাব থাকলেও বার্মার মত ধর তক্তা মার পেরেক ফর্মায় না গিয়ে ছলেবলে কৌশলে বাংলাদেশ যা করেছে তাতে মাইর হয়েছে ঠিকই শব্দ হয়নি। জাতিসংঘেও তাই আমরা শান্তির দুত!…