সীমান্ত পরিস্থিতি উদ্বেগজনক
বর্তমানে আরাকান আর্মি বাংলাদেশের ভেতরে প্রায় ১০ কিলোমিটার ঢুকে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কিন্তু এর জবাবে বাংলাদেশ সরকার সামরিক প্রতিরোধ না গড়ে বরং সহযোগিতার চিন্তা করছে—এটা শুধু আশঙ্কাজনক নয়, রীতিমতো রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
অন্যদিকে, ভারতের দিক থেকেও পুশ-ইন চলছে। সীমান্ত দিয়ে একতরফা অনুপ্রবেশ ঘটছে, অথচ বাংলাদেশ এখনো উল্লেখযোগ্য প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ব্যর্থ।
🇮🇳 ভারতের পুশ-ইন ও মধ্যরাতের সামরিক অভিযান
ভারতের সাম্প্রতিক পাকিস্তানে মধ্যরাতের সামরিক অভিযানের পর, কুড়িগ্রাম ও খাগড়াছড়ি সীমান্ত দিয়ে শতাধিক লোক বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ভারত তাদের বাংলাদেশি দাবি করলেও, বাংলাদেশ জানায় এদের একাংশ গুজরাটে বসবাসকারী বাংলা ভাষাভাষী, অন্য অংশ রোহিঙ্গা।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান একে অগ্রহণযোগ্য বলেছেন, তবে স্বীকার করেছেন—ভারতের সঙ্গে এখনো কার্যকর কূটনৈতিক চ্যানেল গড়ে ওঠেনি।
💬 কূটনীতির ব্যর্থতা ও জাতীয় দুর্বলতা
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক এতটাই দুর্বল যে, আলোচনার সুযোগও কার্যত নেই। একে একে বাংলাদেশ যেভাবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের গ্রহণ করেছে, তা কূটনৈতিক ব্যর্থতার বড় উদাহরণ। এখন পর্যন্ত দেড় লাখের বেশি রোহিঙ্গা নতুন করে ঢুকেছে। সূত্র মতে, এসব ঠেলে দিচ্ছে আরাকান আর্মি।
তাদেরই অনুপ্রবেশ এখন স্থায়ী বসতি, এমনকি বিয়েও করছে—স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই তা বলেছেন।
🤝 ভারতের সন্দেহ ও বাংলাদেশে নেতৃত্বের বিভ্রান্তি
ভারতের অভিযোগ, বাংলাদেশে পররাষ্ট্রনীতি আসলে কারা পরিচালনা করছে—পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, না জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, না কি প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব?
বিমস্টেক সম্মেলনের ডিনারে ভারতের এনএসএ অজিত দোভাল খলিলুর রহমানের পদমর্যাদা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, যদিও পরে তাকেই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই বৈঠকের কোনো অফিসিয়াল ব্যাখ্যা নেই।
⚔️ বাংলাদেশের সামরিক প্রস্তুতি কি যথেষ্ট?
বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে—কিন্তু কী ধরনের প্রস্তুতি চলছে, তা জানা যাচ্ছে না। স্থলপথে অনুপ্রবেশ থামাতে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
বাংলাদেশ কীভাবে প্রতিবেশীদের ‘ডেটারেন্ট’ (প্রতিরোধমূলক বার্তা) পাঠাতে পারে—এটাই এখন মুখ্য প্রশ্ন।
🧠 রাজনৈতিক নেতৃত্বের অবস্থান
বর্তমান সরকারের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বে রয়েছেন আসিফ মাহমুদ, সজীব ভূঁইয়া, ও হাসনাত আবদুল্লাহ। তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় জাতীয় ঐক্যের কথা বলছেন, সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছেন।
তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ফেসবুকে “অখণ্ড বাংলা”র মানচিত্র প্রকাশ করেন, যেখানে ভারতের অংশও ছিল। অনেকেই একে ‘গাজওয়াতুল হিন্দ’ মতবাদের বাস্তবায়নের সংকেত হিসেবে দেখছেন।
🛫 ড. ইউনুস ও যুদ্ধপ্রস্তুতির ভাষ্য
যুদ্ধবিরোধী পরিচয় থাকা সত্ত্বেও ড. ইউনুস সম্প্রতি বিমানবাহিনীর মহড়ায় উপস্থিত হয়ে বলেন—এই মুহূর্তে “জয়ই একমাত্র অপশন।” তার ভাষায়, আধা প্রস্তুতির কোনো সুযোগ নেই।
🚨 ডেটারেন্ট কি হতে পারে?
১. বাংলাদেশে বসবাসকারী আনুমানিক ২৬ লাখ ভারতীয় নাগরিকের তালিকা প্রকাশ করে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত।
২. ভারতের জন্য ট্রানজিট সুবিধা বাতিল।
৩. বৈষম্যমূলক চুক্তিগুলো পুনর্মূল্যায়ন করে প্রয়োজনে বাতিল।
✅ উপসংহার
এই মুহূর্তে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে জরুরি কাজ হলো—সীমান্তে কী ধরনের সামরিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে তা জনগণকে জানানো এবং প্রতিবেশীদের বুঝিয়ে দেওয়া যে বাংলাদেশ তার ভূখণ্ড রক্ষায় প্রস্তুত।
এই অনিশ্চয়তা ও বিভ্রান্তি নিরসনেই এখন প্রয়োজন একটি সুসংহত কৌশল ও সাহসী পদক্ষেপ।