ধর্ম-ক্রিকেট: খেলোয়াররা হচ্ছে বিনোদনকারী, ধর্ম প্রচারক নয়।
ধর্ম-ক্রিকেট : খেলোয়াররা হচ্ছে বিনোদনকারী, ধর্ম প্রচারক নয়। মেসি গোল করে বুকে ক্রুশ চিহৃ আঁকে। শচীন সেঞ্চুরী করে আকাশে ব্যাট উঁচিয়ে তার ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাত। তাহলে পাকিস্তানী বাংলাদেশী ক্রিকেটাররা সেঞ্চুরী করে মাঠে আল্লাহকে সেজদা দিলে দোষ কোথায়? আগে বলেন খেলার মাঠে সেজদা দেয়াটা কুরআন-হাদিসে কোথায় আছে? ইসলাম তো দলিল ভিত্তিক ধর্ম। এমন কোন নজির কেউ দেখাতে পারবে এটি মুসলিমদের একটি ধর্মীয় বিশ্বাসের অংশ? ময়দানে সেজদা মুসলমানরা জিহাদ করতে গিয়ে দিতো। কাফেরদের দেশ দখল করার পর সেই স্থানে সেজদা দিতো। পাকিস্তান ক্রিকেটাররা ভারতের মাঠে সেজদা দিতো একারণেই। ৮০ দশকে ভারত পাকিস্তান ক্রিকেট আজকের মত বন্ধুত্বপূর্ণ ছিলো না। খেলার আগেই রাজনীতি ধর্ম এসে হাজির। সেলিম মালিক ক্যাপ্টেন থাকার সময় শারজা কাপের ফাইনালের আগে ভারতীয় সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করেছিলো, ফাইনাল নিয়ে তিনি চাপে আছেন কিনা? সেলিম মালিকের রাগত উত্তর ছিলো, মুসলমানরা লড়াই করতে ভীত হয় না কখনো…। হুবহু সেলিমের কথাটা এখন মনে নেই, তবে তিনি এরকম ধর্মীয় পরিচয়ই তুলে ধরেছিলেন। যদি সাম্প্রতিক সময়ের উদাহরণ দেই তাহলে অনেকেরই মনে থাকবে প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের কাছে ফাইনালে হেরে যাবার পর পাকিস্তানী ক্যাপ্টেন শোয়েব মালিক ভারত-পাকিস্তানের সমস্ত মুসলমানদের কাছে হারার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন! ইরফান পাঠানের মা এই কথার প্রতিবাদ করেছিলেন বলে মনে আছে। খেলার মাঠে মুসলিমদের সেজদা দেয়ার কোন ট্রেডিশন কোনকালেই ছিলো না। খ্রিস্টানদের বুকে ক্রুশ আঁকার ট্রেডিশন বা ধর্মীয় রীতির মত মুসলিমদের মোনাজাত ধরার প্রচলন একটি স্বীকৃত ধর্মীয় রীতি। ফুটবল মাঠে বিশেষত ইউরোপীয়ান লীগে মুসলিম খেলোয়ারদের খেলা শুরু আগে এমনটা আমরা করতে দেখি। ক্রিকেট জিহাদ: ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে বিশ্বকাপ ফাইনাল হলে কী হবে? এটা দেখে কখনই কোন বিরূপ সমালোচনা কেউ করেনি। যদিও ইসলাম খেলাধূলা সম্পর্কে যে ধারণা পোষন করে তাতে এই মোনাজাত নিয়েই প্রশ্ন উঠে। ইসলাম মতে সমস্ত খেলাধুলা মুসলমানদের জন্য হারাম। সহি হাদিস আছে এর পক্ষে। অন্য মাসালা মতে, যে খেলাধুলা নামাজ রোজাসহ ইসলামী হক পালন সময় মত করা সম্ভবপর নয় সেসব খেলাধুলা মুসলমানদের জন্য হারাম। ইসলাম ছাড়া আর কোন ধর্মই মানুষের ক্রীড়া-কৌতুক-বিনোদন নিয়ে নাক গলায়নি। গানবাজনাসাহিত্য নিয়ে বিরূপতা করেনি। অজিল যখন হাফপ্যান্ট পরে মাঠে মোনাজাত করে ভাল খেলার জন্য তখন স্বভাবতই আমাদের মনে এ কথাটা চলে আসে, সতর না ঢেকে থাকাটা যেখানে ইসলামে হারাম, খেলাধুলা করাটাই যেখানে হারাম সেখানে অজিলকে আল্লা গোল পাইয়ে দিবে কিভাবে? সহি হাদিস বলছে, তিনটি খেলা ছাড়া সকল প্রকারের খেলা যা লোকেরা খেলে থাকে তা অন্যায় ও বাতিল। এক, ধনুকের সাহায্যে তীর নিক্ষেপ করা। দুই, ঘোড়ার প্রশিক্ষণ ও স্ত্রীর সঙ্গে আমোদণ্ডপ্রমোদ করা। এগুলো শারী‘আতে বৈধ ও স্বীকৃত। (তিরমিযী ১৮৩৭, ইবনু মাজাহ ২৮১১, আবূ দাঊদ ২৫১৩)। আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তীরন্দাজী অথবা উট কিংবা ঘোড়দৌড়ের প্রতিযোগিতা ছাড়া অন্য কোনো প্রতিযোগিতার আয়োজন করা জায়িয নয়। (আবূ দাঊদ ২৫৭৪, নাসায়ী ৩৫৮৫, তিরমিযী ১৭০০, ইবনু মাজাহ ২৮৭৮, আহমাদ ১০১৩৮, ইরওয়া ১৫০৬, সহীহ আল জামি‘৭৪৯৮)। মেসির ঈশ্বরের ফুটবল খেলা নিয়ে কোন এলার্জি নেই। বরং মেসিদের গোল পাইয়ে দেবার চেষ্টা তিনি করেন। এমনটা বিশ্বাস করতে মেসিদের ধর্মে কোন বিতর্ক নেই। শচীনের ভগবানও ক্রিকেট নিয়ে নিজের অসন্তুষ্ঠির কথা কোথাও জানাননি। ধর্ম-ক্রিকেট ক্রিকেট যখন ধর্মের হাতিয়ার: ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের “জয়” ইসলামের বিজয় হলে পরাজয়টা কি?? ভারতে সিনেমার মহরত অনুষ্ঠান ধর্মীয় রীতি অনুসরণ করে নারকেল ভেঙ্গে করা হয়। এটি তাদের ধর্মের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক নয়। কিন্তু সিনেমার শুটিং শুরুর আগে মাওলানা ডেকে মোনাজাত করালে হাস্যকর হয়ে উঠে। সিনেমা শুরুর আগে বিমমিল্লাহ লেখা থাকলে যেমন আমাদের মনে প্রশ্ন আসে- ইসলামে তো সিনেমা হারাম তাহলে বিসমিল্লাহ লিখে এটা শুরু কেন? মাঠে সেজদা মাঠে নামাজ পড়া ইসলামের কোন ধর্মীয় অংশ নয়। এটি লোক দেখানো নিজেদের ধর্মীয় বিজ্ঞাপন প্রচার। বাংলাদেশ আফগানিস্তান সিরিজ চলাকালে মিরপুরের মাঠে আফগান খেলোয়াররা জামাতে নামাজ পড়েছিলো। সেই ছবি আমাদের গণমাধ্যম ফলাও করে ছেপেছিলো। পরদিন আফগানদের হাতে ‘মুশি-ম্যাশরা’ উড়ে গিয়েছিলো। তখন এইসব টাইগার ভক্তরাই বলেছিলো, আফগানিস্তানের জয়ের অন্যতম কারণ হচ্ছে আফগান টিম মাঠে নামাজ পড়েছিলো…। মাঠে সেজদা নামাজ পড়ার এটাই বিপদ। বুকে ক্রুশ আঁকা, মোনাজাত ধরা নিয়ে কেউ কোনদিন কথা বলেনি। কিন্তু পাকিদের মাঠে নামাজ, সেজদার বিপদ নিয়ে বারবার সতর্ক করেছি এসব কারণেই। আজানের সময় খেলতে না চাওয়া, রোজার সময় লীগ বন্ধ রাখার দাবী এসব একটি ধর্মীয় দিকে ঝুঁকে যাবার প্রবণতা যা কোন খেলাধুলাতেই কাম্য নয়। দ্রুত আইসিসির বাংলাদেশী ও পাকিস্তানী ক্রিকেটারদের মাঠে ধর্মকর্ম পরিচালনার দিকে নজর দেয়া উচিত। বিশ্ব ক্রীড়া সংস্থাগুলোর উচিত মাঠে যে কোন ধরণের ধর্মীয় প্রতীক, অঙ্গভঙ্গি, বিশ্বাস প্রদর্শন আস্তে আস্তে নিষেধাজ্ঞার আওতায় নিয়ে আসা। খেলোয়াররা হচ্ছে বিনোদনকারী, ধর্ম প্রচারক নয়। খেলাকে স্রেফ বিনোদনের মধ্যে রাখতে হবে। এটি যেন সাম্প্রদায়িকতা, বর্ণবাদ, জাতীয়তাবাদকে উসকে না দেয়। ধর্ম-ক্রিকেট, ধর্ম-ক্রিকেট আর পড়ুন…. সনাতনে প্রত্যাবর্তন: ফ্রান্সেরে রোমেন সনাতন সংস্কৃতিতে প্রভাবিত হয়ে এখন রামানন্দ নাথ। ইন্দোনেশিয়া থেকে যাজক রবার্ট হিন্দুদের ধর্মান্তরিত করতে ভারতে এসেছিলেন, কিন্তু পরিবর্তে তিনি নিজেই হিন্দু হয়ে গিয়েছেন। ভাইফোঁটার দিন আমরা যেন না ভুলি সেই রক্তাক্ত ইতিকথা। সাধ্বী ভগবতী সরস্বতী ২৫ বছর আগে আমেরিকা থেকে ভারত দেখতে এসে সন্ন্যাস গ্রহণ করেছিলেন। উত্তরপ্রদেশে ১৯ জন মুসলমান থেকে হিন্দু ধর্মান্তরিত হওয়ার পুরো ঘটনা কী? Post Views: 641
Copy and paste this URL into your WordPress site to embed
Copy and paste this code into your site to embed